Advertisement
Advertisement
প্রাণীর সংক্রমণ

খাঁচাবন্দি প্রাণীদের সংক্রমণের আশঙ্কা বেশি, নিউ ইয়র্কের ঘটনায় সতর্কবার্তা বিশেষজ্ঞদের

জু অথরিটির নির্দেশে দেশের প্রতিটি চিড়িয়াখানার প্রাণীদের উপর শুরু হয়েছে নজরদারি।

Captive animals are more prone to be infected than wild, say experts after NY Zoo's incident
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:April 6, 2020 4:59 pm
  • Updated:April 6, 2020 5:08 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এতদিনকার ধারণা ভেঙে দিয়েছে নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানার বাঘ নাদিয়া। তার শরীরে COVID-19 জীবাণুর অস্তিত্ব মিলেছে। এই খবর প্রকাশ্যে আসার পর অনেকের মনেই সন্দেহ উসকে উঠেছে, তাহলে কি বন্যপ্রাণ কিংবা গৃহপালিত পশুর শরীরে হামলা চালাতেও সক্ষম নোভেল করোনা ভাইরাস? তবে এদের থেকেও দূরে থাকতে হবে? বন্যপ্রাণ সংরক্ষকরাও হয়ত চিন্তিত হয়ে পড়ছেন এই ভেবে যে তাহলে বিখ্যাত রয়্যাল বেঙ্গল টাইগাররা কতটা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা কিন্তু আশ্বস্ত করে বলছেন, সংক্রমণের ঝুঁকিটা যে কোনও বন্দি জীবজন্তুর ক্ষেত্রে বেশি। প্রকৃতির মাঝে থাকা যে কোনও চারপেয়ে প্রাণীর ক্ষেত্রে তুলনায় কম।

Royal-Bengal Tiger

Advertisement

কোনও প্রাণীদেহ থেকে মানবদেহে নোভেল করোনার সংক্রমণ হয় না, একথা বহু আগেই ঘোষণা করেছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। প্রাণী বিশেষজ্ঞদের মতে, এই জাতীয় ভাইরাস তাদের শরীরে থাকে এবং তা জিনের সঙ্গে সঙ্গে নিজেকে মিশিয়ে দিয়েছে। তাই তা প্রাণীশরীরের অসুস্থতার জন্ম দেয় না অন্তত। তাই প্রাণীশরীর করোনা ভাইরাসের ‘বাহক’ বা ‘কেরিয়ার’ নয়। তাই প্রাণী থেকে মানবদেহে নয়, বরং মানুষের থেকে প্রাণীর করোনা সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা আছে। ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানার নাদিয়ার তাহলে কীভাবে সংক্রমণ হল? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে এক প্রাণীবিজ্ঞানী স্পষ্টই জানাচ্ছেন, যেহেতু বাঘটি খাঁচাবন্দি এবং নিজের বাসস্থান ছেড়ে মানব সমাজের মাঝে রয়েছে, তাই মানুষের থেকেই তার শরীরের সংক্রমণ ঘটে থাকতে পারে। তবে উৎস সন্ধানে অবশ্যই সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করতে হবে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ, স্রেফ আতঙ্কে দিল্লি ফেরত যুবককে একঘরে করল প্রতিবেশীরা]

প্রাণীবিজ্ঞানীর বক্তব্য অনুযায়ী, প্রাণীদের স্বাভাবিক, সহজাত পরিবেশের বাইরেই তাদের অসুস্থতার ঝুঁকি বেশি। অর্থাৎ গৃহপালিত কিংবা খাঁচাবন্দি অবস্থায় যেহেতু তারা মানুষের সংস্পর্শে বেশি থাকে, তাই COVID-19 সংক্রমণ হতে পারে। সেদিক থেকে সুন্দরবনের রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার যেহেতু প্রকৃতির মাঝে থাকে, তাই তার জীবাণু সংক্রমণের বিশেষ ঝুঁকি নেই। ব্যঘ্র বিশেষজ্ঞ এবং ব্যঘ্র সংরক্ষণ সংস্থা ‘শের’-এর অধিকর্তা জয়দীপ কুণ্ডুর মতে, বন্যপ্রাণীদের একটা সহজাত প্রতিরোধ ক্ষমতা থাকে, সর্বক্ষণ তা প্রকৃতির সঙ্গে পরিবর্তিত হতে থাকে। কখনও সেই ক্ষমতা থমকে গেল, বুঝতে হবে যে তা প্রাকৃতিক। তখন প্রাণীর আয়ু শেষ হয়ে যায়। তাই তাদের কোনও মেডিক্যাল পরীক্ষার আওতায় আনা উচিত নয়। এতে বন্যপ্রাণের স্বাভাবিক জীবনকে ব্যাহত করা হয়।

[আরও পড়ুন: লকডাউনে জনশূন্য শক্তিগড়, খাঁ খাঁ করছে শতাধিক ল্যাংচার দোকান]

তবে নিউ ইয়র্কের ব্রঙ্কস চিড়িয়াখানার এই ঘটনার পর নড়েচড়ে বসেছেন জু অথরিটি অফ ইন্ডিয়া। সোমবারই দেশের প্রতিটি চিড়িয়াখানায় বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছে। যাতে বলা হয়েছে, প্রতিটি প্রাণীর দিকে নজর রাখতে। কারও আচরণে কোনও অসংগতি দেখলে বা অসুস্থতা হলে যদি সংশয় হয়, তাহলে তাদের COVID-19 পরীক্ষা করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে অতিরিক্ত সিসিটিভি লাগিয়ে তাদের উপর নজরদারি চলবে। কেন্দ্রের সেই বিজ্ঞপ্তি মেনে ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। বাঘের খাঁচা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রাণীর এনক্লোজারে নজর রাখছেন কর্মীরা। ঝুঁকি এড়াতে রীতিমত পিপিই (Personal Protective Equipments) পরে খাঁচার সামনে যেতে হচ্ছে। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ