Advertisement
Advertisement

Breaking News

গাড়ির ধাক্কায় জখম হস্তিশাবক

দুর্ঘটনায় পা ভাঙল শাবকের, প্রতিশোধ নিতে গাড়ি ভাঙচুর ক্ষিপ্ত মা হাতির

শাবকটিকে উদ্ধার করে শুশ্রূষা বনকর্মীদের, শুরু তদন্ত।

Car hits baby elephant, angry mother goes on rampage
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:November 8, 2019 5:27 pm
  • Updated:November 8, 2019 5:27 pm

শুভদীপ রায়নন্দী, শিলিগুড়ি: জাতীয় সড়কে গাড়ির ধাক্কায় ভাঙল হস্তিশাবকের পা। জখম ও ক্ষিপ্ত মা হাতি গাড়িটি ভেঙে চুরমার করল। বৃহস্পতিবার রাতে শিলিগুড়ি সংলগ্ন নকশালবাড়ির এশিয়ান হাইওয়ে এলাকার ঘটনা। রাতেই বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে জখম শাবককে উদ্ধার করে। সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়। দেওয়া হয়েছে পেন কিলার, অ্যান্টিবায়োটিক। আপাতত পশু চিকিৎসকের নজরদারিতেই থাকতে হবে দু’বছরের ওই হস্তিশাবককে। ঘাতক গাড়ির চালক ও সহযাত্রীকে আটক করে তদন্ত শুরু করেছে বনদপ্তর।
সম্প্রতি একই জায়গায় রাস্তা পারাপারের সময় হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয় এক বাইক আরোহীর।কার্শিয়াংয়ের ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার ফারিদ শেখ বলেন, “গাড়ির ধাক্কায় শাবকটি গুরুতর জখম হয়েছে। চব্বিশ ঘন্টা শাবকটিকে নজরদারিতে রাখা হচ্ছে। মেডিক্যাল টিম তৈরি রয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।”

[আরও পড়ুন: পরিবেশ রক্ষার বার্তা নিয়ে বাইকে সুন্দরবন সফর ২০ জন বিট্রিশ নাগরিকের]

বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধেবেলা দু’বছরের শাবকটিকে সঙ্গে নিয়ে চারটে হাতির একটি দল বাগডোগরা ফরেস্ট রেঞ্জ থেকে টুকুরিয়া জঙ্গলের দিকে রওনা হয়। রাতে হাতির দলটি করিডর ধরে জাতীয় সড়ক পার হতে গেলে দ্রুত গতিতে ছুটে আসা ছোট গাড়িটি হাতির দলকে জোর ধাক্কা মেরে দাঁড়িয়ে যায়। গাড়ির ধাক্কায় ছিটকে পড়ে শাবক। তার আর্তনাদে দলের অন্য হাতিরাও ছুটে আসে। মা হাতি শাবককে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও জখম হয়েছে।
শাবকের আর্তনাদ শুনে খেপে ওঠে মা হাতিটি। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে তাণ্ডব শুরু করে দেয় রাস্তায়। ততক্ষণে গাড়ির চালক ও সহযাত্রী এক ফাঁকে নেমে সরে দাঁড়ায়। মা হাতিটি শুঁড় দিয়ে ছোট গাড়ি তুলে আছাড় মারতে শুরু করে। হাতির তাণ্ডবের শব্দে এলাকার লোকজন চলে আসে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান কিরণচন্দ্র চা বাগানের ম্যানেজার প্রত্যুষ গঙ্গোপাধ্যায়। খবর দেওয়া হয় বাগডোগরা ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসে।

Advertisement

slg-ele-car
ভাঙচুরের পর শাবককে নিয়ে টুকুরিয়ার ঝার ফরেস্টে ঢুকে পরে মা হাতিটি। খবর পেয়ে বাগডোগরা, টুকুরিয়া, সুকনা-সহ তাইপু এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। জঙ্গলে বেশ কিছুক্ষণ তল্লাশির পর শাবক-সহ মায়ের দেখা মেলে। বনকর্মীরা মাকে গভীর জঙ্গলে পাঠিয়ে দেয় ও শাবকটিকে উদ্ধার করে। ট্রাঙ্কুলাইজ করে শাবকটিকে অজ্ঞান করে শুরু হয় চিকিৎসা। গাড়ির ধাক্কায় শাবকটির সামনের দিকের বাঁ পা ভেঙে গিয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান পশু চিকিৎসকের। বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ন’টা পর্যন্ত শাবকটিকে নজরদারিতে রেখেছিলেন চিকিৎসকরা। শনিবার সকালে ফের শাবকটিকে ওষুধ দেওয়া হবে।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বিডিও এবং তাঁর স্ত্রীকে বেঁধে রেখে ডাকাতি, প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা]

অতিরিক্ত মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ, উত্তরবঙ্গ) বিপিনকুমার সুদ বলেন, “হাতির করিডরে আলো লাগালে তা হাতির যাতায়াতে বাধার সৃষ্টি করবে। উলটে তারা লোকালয়ে ঢুকে যেতে পারে। সড়কে হাতির করিডোরে গাড়ি ধীরে চালানোর মতো একাধিক সাইন বোর্ড লাগানো রয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষ সচেতন হচ্ছেন না।” চা বাগানের ম্যানেজার প্রত্যুষ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “জাতীয় সড়কে পর্যাপ্ত আলো নেই। বাগানের ২০ একর জমিতে চাষ করা চা প্রতি বছর হাতিদের তাণ্ডবে নষ্ট হয়ে যায়।” তিনি আরও জানান, কিরণচন্দ্র চা বাগানের ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর সেক্টরে সারা বছরই হাতির পাল থাকে। দার্জিলিং জেলা পুলিশের ডিএসপি (রুরাল) অচিন্ত্য গুপ্ত বলেন, “ইতিমধ্যে গাড়ি চালক সংগঠন ও মালিকদের সঙ্গে ওই এলাকায় গাড়ি চালানোর বিষয়ে আলোচনা করে সতর্ক করা হয়েছে।” জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় এমন দুর্ঘটনা রুখতে বিশেষ সতর্কতা নিচ্ছে বনদপ্তরও।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ