নন্দন দত্ত, সিউড়ি: পচা মাংস কাণ্ড নিয়ে হইচইয়ের পরও মঙ্গলবার অভিযান চালিয়ে সিউড়িতে রেস্টুরেন্ট থেকে মিলল পচা ও বাসি মাংস। পুরসভার পক্ষ থেকে রেস্টুরেন্ট মালিকদের জানিয়েই মঙ্গলবার অভিযান চালান হয়। তারপরেও শহরের ১৪টি রেস্তরাঁয় অভিযানের শেষে তিনটি রেস্তরাঁর খাবার দোকান চালানোর উপযুক্ত নথি মেলেনি। দেড় থেকে দু কুইন্টাল পচা ও বাসি মাংস বাজেয়াপ্ত করে তা ফেলে দেওয়া হল। লাইসেন্সহীন রেস্টুরেন্ট মালিকদের আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে পুরসভায় যোগাযোগ করতে বলা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সিউড়ি পুরসভার এসআই সুব্রত চক্রবর্তী জানান, এদিন পুরপ্রধানের নির্দেশে শহরের রেস্তরাঁগুলির পরিকাঠামো দেখার পাশাপাশি তাদের সতর্ক করা হল। কিছুদিনের মধ্যে স্বাস্থ্য দপ্তরের আধিকারিকদের নিয়ে ফের অভিযান চালানো হবে।
মঙ্গলবার সিউড়ি শহরের নামী-দামি ১৪টি রেস্টুরেন্টে পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে অভিযান চালায় সিউড়ি পৌরসভার কর্মীরা। ভগত সিং পার্কের পাশ থেকে রবীন্দ্রপল্লি কালীবাড়ির সামনে পর্যন্ত রাস্তার পাশে থাকা সব রেস্তরাঁর হেঁসেলে ঢুঁ দেন পুরকর্মীরা। বেশিরভাগ রেস্টুরেন্টগুলির সামনের অংশ ঝাঁ-চকচকে হলেও হেঁসেলের অবস্থা দুর্বিসহ বলে পুরকর্মীরা জানান। খাবার ও মাংস সংরক্ষনের জায়গাগুলিতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। হেঁসেলে থাকা ডিপ ফ্রিজের ভিতরের রাখা খাবারের মধ্যে কোথাও মিলল পচা মাংস, কোথাও মিলল বাসি খাবার। সুব্রত চক্রবর্তী জানান, বাজেয়াপ্ত করা মাংসগুলি শক্ত হয়ে গিয়েছে। তাছাড়া বেশ কিছু মাংসের লালা কাটছে। আমরা সেগুলি রেস্টুরেন্ট থেকে বের করে ফেলে দিয়েছি। পুরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, পুরপ্রধানের নির্দেশ প্রতিদিনের মতো মাংস এনে প্রতিদিন তা ব্যবহার করতে হবে। পুরকর্মীরা জানান, শহরের ভগত সিং পার্কের পাশে থাকা রাস্তার দু’পাশের রেস্টুরেন্ট থেকে বাসি মাংস উদ্ধার করা হয়েছে। একইভাবে চৈতালি মোড়ে রাস্তার ধারে থাকা একটি ফুটপাতের খাবারের দোকানে বাসি মাংসের হদিশ মেলে। সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডের কাছে ডাক বিভাগের আবাসনের সামনে থাকা রেস্টুরেন্টেও বাসি খাবারের কথা জানান পুরকর্মীরা। এদের মধ্যে তিনটি রেস্টুরেন্টের শহরের মধ্যে খাবার দোকান চালানোর উপযুক্ত লাইসেন্স নেই। পুরসভার অভিযানে যাওয়া অফিসাররা জানান, এদের মধ্যে বেশ কিছু রেস্টুরেন্টের ট্রেড লাইসেন্স আছে কিন্তু খাবারের দোকান চালাবার ফুড লাইসেন্সের নবীকরণ করা নেই। পুরসভার পক্ষ থেকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে লাইসেন্সের নবীকরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নচেৎ পুরসভার লাইসেন্সও বাতিল করে দেওয়া হবে।
তবে এদিন পুরকর্মীরা গেলেও খাবারের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। এমনকি খাবারের মান যাচাইয়ের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য দপ্তরের খাদ্য বিভাগকে ডাকা হয়নি। সে প্রসঙ্গে সুব্রত চক্রবর্তী জানান, ‘এদিন আমরা পরিকাঠামোর পাশাপাশি রেস্টুরেন্টগুলিকে সতর্ক করেছি। কিছুদিনের মধ্যেই আমরা স্বাস্থ্য দপ্তরকে নিয়ে ফের অভিযান চালাব।’ তবে স্থায়ী খাবারের দোকান গুলিতে অভিযান চালানো হলেও ফুটপাতের ঠেলাগাড়িতে বিক্রি হওয়া খাবারের দোকানগুলিতে এখনই অভিযান চালান হবে না বলে পুরসভা সূত্রে জানানো হয়। অন্যদিকে সিউড়ির একটি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার পার্থ দাশগুপ্ত জানান, আমরা পুরসভার নির্দেশিত মান অনুসারে খাবার পরিবেশনের চেষ্টা করব।
ছবি: বাসুদেব ঘোষ
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.