স্টাফ রিপোর্টার: বাংলার আকাশে বাতাসে বসন্তের আগমনে অধিকাংশের মনে যখন আনন্দ হিল্লোল তখনই নিঃশব্দে পা রাখছে ছোঁয়াচে অসুখ ‘বসন্ত’, চিকিৎসকের ভাষায় চিকেন পক্স। কোথাও কোথাও আবার জল বসন্ত অসুখও প্রবল হয়ে উঠছে। তাই পলাশ-শিমুলের রঙ অনেক পরিবারের কাছে আর রঙিন হয়ে উঠছে না। কারণ, ছোঁয়াচে এই অসুখ বহু পরিবার নানা ধরনের নিষেধাজ্ঞার বেড়াজালে যেতে বাধ্য হচ্ছে। বিশেষ করে স্কুল পড়ুয়াদের চিকেন পক্স দেখা গেলেই শিক্ষক-শিক্ষিকারা কড়া নজরদারিতে বাড়ি পাঠিয়ে দিচ্ছেন। স্কুলে তাই ছেলে-মেয়েদের পাঠানো নিয়ে এইসময়ে অনেক অভিভাবকই চিন্তিত।
[পরীক্ষায় বসার দাবিতে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যকে ঘেরাও পড়ুয়াদের]
চিকিৎসকরা অবশ্য বলছেন, চিকেন পক্স কোথাও কোথাও দেখা গেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে বায়ুদূষণের জেরে চর্ম ঘটিত নানা ধরনের অসুখ দেখা দিচ্ছে। ‘ডাস্ট অ্যালার্জি’ মানুষের চোখের পাশাপাশি শরীরের ত্বকেও বড় ধরনের প্রভাব ফেলছে। এই সময়ে বাতাসে প্রচুর পরিমাণে ধুলোবালির পাশাপাশি ফুলের পরাগরেণু ভেসে বেড়াচ্ছে। সেই কারণে যাঁদের বক্ষ রোগ বা হাঁপানি রয়েছে তাঁদের শারীরিক কষ্ট অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া অফিস বলছে, এ বছরের মতো শীত বিদায় নিয়েছে বাংলা থেকে। রাতের দিকে হোক কিংবা ভোরের দিকে ঠান্ডা ঠান্ডা যে পরিবেশ রয়েছে তা বসন্তের পথকেই প্রশস্ত করেছে। দিনে কড়া রোদ্দুর সঙ্গে হালকা বাতাসে যাবতীয় মধুগন্ধ নিয়ে বসন্ত এসে পড়েছে।
[অভিধান ছাপিয়ে যে শব্দেরা ঢুকে পড়েছে তরুণের মুখের ভাষায়]
প্রতিবারের মতো এবারও বছরের এই সময়টা আবহাওয়ার এই খেয়ালি আচরণে কাবু শিশু থেকে বয়স্ক। ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি, কাশি, মাথাযন্ত্রণা। পরিবর্তনের এই সন্ধিক্ষণে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিত্সকরা। জানিয়েছেন, শিশুদের সকাল ও রাতের দিকে গায়ে শীতপোশাক পরে থাকতে হবে। একইসঙ্গে সর্দিকাশি, হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্তদের ঈষদুষ্ণ গরম জলে স্নান করতে বলছেন চিকিত্সকরা। বসন্ত, হামের মতো এই রোগও ঢুকে পড়েছে কলকাতার মানচিত্রে। অনেকেই এই সময় ঘরের জানালা খুলে বা ফ্যান চালিয়ে রাতে ঘুমোচ্ছেন। তাদের সাবধান করছেন চিকিৎসকরা। রাতের ঠান্ডা পরিবেশের হাত ধরেই শরীরে ঢুকে পড়তে পারে নানা রোগের ভাইরাস। যাঁরা ধূমপান করেন তাঁদের এই সময়টা আরও বেশি করে সতর্কতা মেনে চলার পরামর্শও দিচ্ছেন তাঁরা। কয়েকদিন ধরে চড়তে শুরু করছে পারদ। দুপুরে পথেঘাটে শুকনো গরমে রীতিমতো চোখমুখে জ্বালা ধরছে। সেভাবে ঘাম হচ্ছে না, কিন্তু একটু চলাফেরা করলেই গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে পথচারীদের। কিন্তু শহরের গরমের চরিত্র এমনটা নয় বলেই জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।