অংশুপ্রতীম পাল, খড়গপুর: প্রাক্তন আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষের বাড়িতে সিআইডি হানা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই কলকাতার নাকতলা ও পশ্চিম মেদিনীপুরের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছেন সিআইডির গোয়েন্দারা। অন্যদিকে, তোলাবাজির অভিযোগ রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দারা গ্রেপ্তার করেছেন বেলদা থানার ওসি প্রদীপ রথকে। তাঁর বিরুদ্ধে হিসাব বহির্ভূত আয়, তোলাবাজির অভিযোগ ও প্রমাণ পেয়েছে সিআইডি। প্রদীপ রথ ভারতী ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত পুলিশমহলে। একইসঙ্গে মোহনপুর থানার ওসি রাজশেখর পাইন, কেশিয়ারি থানার ওসি চিত্ত পাল ও গড়বেতা থানার প্রাক্তন ওসি হীরক বিশ্বাসের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে বসে সূত্রের খবর। তাঁদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। প্রদীপ রথের বাড়ি থেকে প্রচুর হিসাব বহির্ভূত টাকা ও ১৬ কেজি সোনার গয়না বাজেয়াপ্ত করেছে সিআইডি।
[বদলি হতেই চাকরিতে ইস্তফা দিলেন ভারতী ঘোষ]
সূত্রের খবর, এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে নাকি তল্লাশি চালানো হচ্ছে ভারতীর বাড়িতে। তবে এর মধ্যে রাজনৈতিক অভিসন্ধী দেখছেন পুলিশমহলের একাংশ। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে ভারতী ঘোষ ও তাঁর ঘনিষ্ঠ পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা হচ্ছিল। সবং উপনির্বাচনের পরই ভারতীকে পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ও ঝাড়গ্রাম জেলার সুপারের অতিরিক্ত দায়িত্ব থেকে অপসারিত করা হয়। সরকারি সার্ভিস রুল অনুযায়ী পশ্চিম মেদিনীপুরের এসপি থেকে বারাকপুরের পুলিশ ব্যাটালিয়নে বদলি হতেই চাকরিতে ইস্তফা দেন ভারতী ঘোষ। ২৫ ডিসেম্বর তাঁকে নবান্নের তরফে এই বদলির সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু তার পরদিনই তিনি রীতি ভেঙে চারজন অফিসার ও ৮৬ জন কনস্টেবলকে ‘ইচ্ছানুযায়ী’ বদলি করিয়ে দেন। যাঁরা এতদিন তাঁর স্নেহভাজন ছিলেন বলে অভিযোগ। প্রশ্ন ওঠে, নবান্নের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বদলির নির্দেশ কার্যকর হওয়ার পরেও একজন ‘তদারকি পুলিশ সুপার’ কীভাবে ৯০ জন পুলিশ কর্মীর ক্ষেত্রে নিজের সিদ্ধান্ত বহাল রাখলেন! স্বভাবতই ঘটনায় বেশ অসন্তুষ্ট হয় নবান্নের শীর্ষমহল। তা আঁচ করেছিলেন ভারতীও। তারই মধ্যে তিনি রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থর কাছে ইস্তফাপত্র পাঠিয়ে দেন। এরপরই কানাঘুষো শোনা যায়, মুকুল রায় ঘনিষ্ঠ আইপিএস বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। কিন্তু তার কোনও ভিত্তি নেই বলে উড়িয়ে দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এবার প্রাক্তন পুলিশকর্তার বাড়িতে সিআইডি অভিযান নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। সূত্রের খবর, ভারতী ঘনিষ্ঠ পুলিশ আধিকারিকদের বাড়িতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।