Advertisement
Advertisement

টানটান ফিল্মি উত্তেজনা, রাতভর চোর-পুলিশ গুলিযুদ্ধ বর্ধমান থেকে হুগলি

শেষ পর্যন্ত জয় পুলিশেরই।

Cinematic Police-thieves fighting
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:January 20, 2019 7:51 pm
  • Updated:January 20, 2019 7:57 pm

সৌরভ মাঝি, বর্ধমান: এ যেন একেবারে সীমান্তে জঙ্গি বিরোধী অভিযান। সেনা-জঙ্গির মধ্যে মুহূর্মুহূ সংঘর্ষ। কেউ কাউকে ছাড়ছে না। রাতভর চলছে গুলিযুদ্ধ। ঠিক তেমনই হল বর্ধমানে। গুলি চালাতে চালাতে মেমারি থেকে চোরের দলকে ধাওয়া করে পুলিশ বাহিনী। পৌঁছাল হুগলির পাণ্ডুয়া পর্যন্ত। শনিবার রাত থেকে রবিবার ভোর, টানা দু’পক্ষের গুলির লড়াইয়ে দুই পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, মৃত্যু হয়েছে দুষ্কৃতী দলের অন্যতম পাণ্ডা শামিম খানের।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে দুষ্কৃতী দলটি মন্তেশ্বর থানার একটি গ্রামে ঢুকে কয়েকটি বাড়িতে হানা দেয়। সেখানকার তিন বাড়ি এবং পাশের গ্রামের একটি বাড়ি থেকে ডাকাতি করে। তারপর পিকআপ ভ্যান নিয়ে পালানোর সময় মন্তেশ্বর থানার পুলিশের হাতে ধরা পড়ে। বিপদ বুঝে মন্তেশ্বর থেকে গাড়ি ঘুরিয়ে মেমারির দিকে পালাতে থাকে। পুলিশ প্রথমে গাড়িটি আটকানোর চেষ্টা করেও পারেনি। মেমারির থানাকে দুষ্কৃতী বিরোধী অভিযানে শামিল করা হয়। ডাকাতদলের গাড়ির পিছু নেয় মেমারি থানার পুলিশও। রসুলপুরে রেলগেট পড়ে যাওয়ায়, আবার গাড়ি ঘোরাতে বাধ্য হয় দুষ্কৃতীরা। মালঞ্চর কাছে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়তে ছুঁড়তে জি টি রোডের দিকে চলে যায় তারা। পুলিশ কিন্তু পিছু ছাড়েনি। কিছুদূর গিয়ে ফের পুলিশের গাড়ির দিকে ধেয়ে যায় দুষ্কৃতীদের বোমা, গুলি। পাল্টা গুলি চালায় পুলিশও। 

Advertisement

                             [দুষ্কৃতী রামুয়া খুনের নেপথ্যে পরকীয়া, গ্রেপ্তার স্ত্রী-র প্রেমিক]

Advertisement

এভাবেই একটা সময়ে বর্ধমানের সীমা ছাড়িয়ে হুগলির পাণ্ডুয়া থানা এলাকায় ঢুকে পড়ে ডাকাতদল। সেখানে আবার সিমলাগড়ে রেলগেট বন্ধ থাকায় গাড়ি থেকে নেমে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করে চার দুষ্কৃতী। ২ জন পালাতে সক্ষম হলেও, শামিম ও গুড্ডু নামে দু’জনকে দৌড়ে ধরে ফেলে পুলিশ। এভাবে ডাকাত-পুলিশ লড়াইতে কেটে যায় গোটা রাত। ভোরের দিকে জখম দুষ্কৃতীদের নিয়ে যাওয়া হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। রবিবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ শামিমের মৃত্যু হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, শামিমের হাঁটুতে গুলি লেগেছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে মৃত্যুর অনুমান চিকিৎসকদের।

                                [মানবিকতার নজির, কুয়ো থেকে পথ কুকুরকে উদ্ধার করলেন স্থানীয়রা]

পুলিশ সূত্রে আরও খবর, মৃত শামিম খানের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাটে। তার সঙ্গী ধৃত গুড্ডুও একই এলাকার বাসিন্দা। তাদের কাছ থেকে  পিকআপ ভ্যান ছাড়াও পাওয়া গেছে দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি তাজা বোমা এবং লুট করা জিনিসপত্র। পুলিশের গুলিতেই যে শামিমের মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও পর্যন্ত স্বীকার করা হয়নি। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষ বলে এড়িয়ে গিয়েছেন পুলিশের বড় কর্তারা। স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে সিআইডি। পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠায় প্রাথমিক রিপোর্টের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত ভার দেওয়া হতে পারে সিআইডিকে। তবে রাতভর এমন চোর-পুলিশ খেলা যে কোনও অ্যাকশন ফিল্মের চিত্রনাট্যকেও হার মানিয়ে দিতে পারে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ