Advertisement
Advertisement

জঙ্গি হামলা নিয়ে আপত্তিকর পোস্টে সাসপেন্ডেড LIC কর্মী

পুলওয়ামা নিয়ে বিতর্কিত পোস্টে উত্তেজনা রাজ্যের অন্যত্রও।

Controversial posts on Pulwama attack
Published by: Sucheta Sengupta
  • Posted:February 18, 2019 9:34 am
  • Updated:February 18, 2019 10:09 am

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো : ভুয়ো খবর কিম্বা উসকানিমূলক পোস্ট থেকে দেশবাসীকে সতর্ক করেছিল প্রশাসন। পুলওয়ামা হামলার পর কোনওরকম প্ররোচনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ালে, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছিল। সেইমতোই এবার পদক্ষেপ নেওয়া হল। কাশ্মীরে সিআরপিএফ-এর কনভয়ে জঙ্গি হামলার ঘটনায় সমর্থন জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কিত পোস্ট করতেই সাসপেন্ড করা হল দুর্গাপুরের এক এলআইসি কর্মীকে। সূত্রের খবর, সাসপেন্ডেড কর্মীর নাম কৃষ্ণেন্দু সেনগুপ্ত। দুর্গাপুরে এলআইসি-র অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে কর্মরত তিনি। ‘দেশদ্রোহিতা’-র অভিযোগে তাঁকে সাসপেন্ড করেছে ভারতীয় জীবনবিমা সংস্থা।

রাস্তা সংস্কারের জন্য কাটা পড়ল মৃণাল সেনের প্রিয় মানকরের তালগাছের সারি

Advertisement

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ওই মর্মান্তিক ঘটনার দিনই সন্ধ্যায় তিনি ফেসবুকে নিজের ওয়ালে লেখেন, “অত্যন্ত কর্কশ, অত্যন্ত নিষ্ঠুর শোনাবে। তাও বলি, সিআরপিএফ হত্যার খবরে এতটা দুঃখ হয় না যতটা দুঃখ হয় নিরীহ কাশ্মীরিদের মৃত্যুতে৷ রাষ্ট্র গণহত্যা চালিয়ে যাবে আর প্রতিশোধ কেউ নেবে না-তাও কি হয়?”এই পোস্টের পর থেকেই প্রতিবাদের ঝড় ওঠে কৃষ্ণেন্দুবাবুর ওয়ালে৷ নড়েচড়ে বসে ভারতীয় জীবনবিমা সংস্থাও। নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুকে সংস্থার পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়, “যে মত প্রকাশ করা হয়েছে, তা এলআইসির নীতির পরিপন্থী৷ সংস্থা অত্যন্ত কঠোরভাবে যে কোনও দেশদ্রোহী কার্যকলাপের বিরোধিতা করছে৷ বিষয়টি তদন্ত করে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷” দুর্গাপুরের বিধাননগরে পূবালী আবাসনে থাকেন কৃষ্ণেন্দু সেনগুপ্ত। শনিবার সন্ধ্যায় দু’টি গাড়ি নিয়ে এলআইসির আধিকারিকরা সেখানে হাজির হন৷ যদিও সেসময় কৃষ্ণেন্দুবাবু এবং তাঁর স্ত্রী বাড়িতে ছিলেন না। আবাসনে তালা দেওয়া থাকায় দেওয়ালেই সাঁটিয়ে
দেওয়া হয় সাসপেনশনের চিঠি৷ তাঁর ব্যক্তিগত ই-মেলেও পাঠানো হয় ওই একই নির্দেশ। এলআইসির আসানসোল ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল ম্যানেজারের সই করা চিঠিতে এলআইসি কৃষ্ণেন্দুবাবুর বিরু‌দ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ এনে চাকরির শর্তাবলি ভঙ্গ ও সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতার জন্য তাঁকে সাসপেন্ড করে বলে জানিয়েছে৷

Advertisement

বছর সাতচল্লিশের কৃষ্ণেন্দুবাবু ২৩ বছর ধরে এলআইসিতে কর্মরত। সাসপেনশনের চিঠি পাওয়ার পর দেশদ্রোহিতার অভিযোগ উড়িয়ে তিনি বলেন, “আমি আমার মত প্রকাশ করেছি মাত্র৷ যে কোনও মৃত্যুরই বিরু‌দ্ধে আমি৷ কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু এই পোস্টের পর আমাকে যেভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ করা হচ্ছে, তাতে আমি নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি৷ তারপর এলআইসির এই পদক্ষেপ তাদের আরও মনোবল বাড়াবে বলেই মনে করি আমি৷” একইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, সঠিক তদন্ত না করেই এবং তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ না করেই এলআইসি এই পদক্ষেপ করেছে। এই সাসপেনশনের বিরু‌দ্ধে আইনি পরামর্শও নিতে শুরু করেছেন তিনি৷

অন্যদিকে, পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের বালসিডাঙা গ্রামের এক যুবকও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিতর্কে জড়িয়েছেন। কর্মসূত্রে কেরলের যুবক পাকিস্তানের পক্ষ নিয়ে পোস্ট করেছিলেন বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীরা তা নিয়ে আপত্তি তুলে ওই যুবকের পরিবারের দ্বারস্থ হন। পরে পরিবারের অনুরোধে পোস্টটি সম্পাদনা করে ‘জয় হিন্দুস্তান ‘ বলে নতুন পোস্ট করেন।ক্ষমা চেয়েছেন বিতর্কিত পোস্ট করার জন্য।
রাজ্যের উত্তর প্রান্তেও একই রকম ঘটনা। তবে সেখানে আপত্তিকর পোস্টের প্রতিবাদে নিজেরাই আইন হাতে তুলে নিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেনা জওয়ানদের নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করার অভিযোগে রবিবার বিকেলে এক ছাত্রকে অর্ধনগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানো হল কোচবিহারে। দক্ষিণ খাগড়াবাড়ি এলাকার ওই ছাত্রকে রীতিমতো কান ধরে তাকে ওঠবোস  করানো হয় বলেও অভিযোগ।

anindya

একইসঙ্গে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক পড়ুয়ার ফেসবুকে পোস্ট ঘিরেও বিতর্ক উঠেছিল। ওই ছাত্রের বাড়ি কোচবিহারের দক্ষিণ খাগড়াবাড়ি এলাকাতেই। এদিন ওই ছাত্রের বাড়িতে চড়াও হয় উত্তেজিত জনতা। জেলার পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্তা জানান, অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। পাশাপাশি এদিন শিলিগুড়ির অরবিন্দ পল্লিতে সেনা জওয়ানদের বিরুদ্ধে এক মহিলার পোস্ট ঘিরেও উত্তেজনা ছড়ায়। ক্ষুব্ধ জনতা ওই মহিলার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ