ধীমান রায়, কাটোয়া: এ যেন ‘কেঁচো খুড়তে কেউটে’। হাইটেক টুকলিকাণ্ডের তদন্তে নেমে সিআইডির হাতে ধরা পড়লেন খোদ পুলিশকর্মী। ধৃত পুলিশ কর্মীর নাম রাজু সরকার। কলকাতা পুলিশের ফাস্ট ব্যাটেলিয়নে কনস্টেবল পদে কর্মরত রয়েছেন রাজু সরকার। বাড়ি নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জে। শনিবার রাতে সিআইডি-র আধিকারিকরা কলকাতা থেকে রাজুকে গ্রেপ্তার করেছেন বলে খবর। এর আগে সিআইডি নদিয়া থেকে এই টুকলিকাণ্ডেই আরও দু’জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের নাম জয়গোপাল শর্মা ও মনোজ বিশ্বাস। ধৃত তিনজনকে রবিবার কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে সাতদিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। অপরদিকে একই মামলায় গত সপ্তাহে ধৃত চিন্ময় ঘোষ, অচ্যুত ঘোষ, সুশীল বিশ্বাসেরও পাঁচদিনের সিআইডি হেফাজত হয়েছে। ধৃত ছ’জনকে নিয়ে এদিন কলকাতায় রওনা দেন সিআইডি-র আধিকারিকরা।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদে পরীক্ষা ছিল। পরীক্ষার হলে ঢোকার আগেই পুলিশ পরীক্ষার্থীদের ব্যাগ ও দেহের তল্লাশি চালিয়ে নকল করার হাইটেক সামগ্রী আটক করে। নকল সহযোগী বিভিন্ন ডিভাইস ও ব্লু-টুথের সঙ্গেই গ্রেপ্তার হয় চিন্ময় ঘোষ ও অচ্যুত ঘোষ নামের দুই পরীক্ষার্থী। ধৃত অচ্যুতকে জেরা করে পুলিশ নদিয়ার হাঁসখালি থেকে সুশীল বিশ্বাসকে (৪৮) গ্রেপ্তার করে। এই সময় পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়া ছাড়াও একাধিক জেলায় পুলিশ কনস্টেবল পদে পরীক্ষায় একই কায়দায় নকল করতে গিয়ে কয়েকজন ধরা পড়ে।কাটোয়ার ঘটনার পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী পুলিশের থেকে তদন্তভার যায় সিআইডি-র হাতে। গত বৃহস্পতিবার সিআইডি ওই মামলার তদন্তভার নেয়। তারপর ধৃত সুশীলকে জেরা করে নদিয়ার কোতয়ালি থানা এলাকার বাসিন্দা জয়গোপাল শর্মা ও হাঁসখালির মনোজ বিশ্বাসের নাম জানতে পারে। তাদের দু’জনকে ধরার পর উঠে আসে কলকাতা পুলিশের কর্মী রাজুর নাম। শনিবার রাতে সিআইডি রাজুকে তাঁর কর্মস্থল থেকেই গ্রেপ্তার করে।
[মাসতুতো দাদার সঙ্গে পরকীয়া, স্বামীকে খুন করে শ্রীঘরে স্ত্রী]
এই প্রসঙ্গে সিআইডির এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গত ২৩ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২ টা থেকে একটা পর্যন্ত পরীক্ষা ছিল। মনে করা হচ্ছে, ওদিন সকাল ৯ টা থেকে ৯.৩০ মিনিটের মধ্যেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছিল। তারপর ডিভাইস ও ব্লু-টুথ কাজে লাগিয়ে নকলের ব্লুপ্রিন্ট করা হয়েছিল। তদন্তকারী আধিকারিকদের প্রথম থেকেই সন্দেহ ছিল পুলিশ বিভাগেরও কেউ এই চক্রে জড়িত থাকতে পারে। সেই আশঙ্কা শেষে সত্যি হল।