শংকর রায়, রায়গঞ্জ: একজন-দু’জন নয়, একই গ্রামের ২৬ জনের একটা করে কিডনি গায়েব! অবাক হওয়ার বিষয় হলেও, এমন ঘটনাই ঘটেছে উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ ব্লকের বড়ুয়া পঞ্চায়েতের রাড়িয়া মৌজার সাতটি গ্রামে৷ দীর্ঘদিন ধরে একটা কিডনির ভরসায় বেঁচে রয়েছেন ওই ২৬ জন মানুষ৷ তবে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হুঁশ উড়ে গিয়েছে প্রশাসনের৷ কীভাবে এই ঘটনা ঘটল৷ ঘটনার সঙ্গে কোনও পাচারচক্র যুক্ত রয়েছে কিনা, ইতিমধ্যে তার তদন্ত শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হেয়েছে পুলিশকে৷
[নির্ভয়াকাণ্ডের ছায়া মালদহে, ধর্ষণের পর পাশবিক অত্যাচারে মৃত্যু কিশোরীর ]
উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের রাড়িয়া মৌজার নায়টলি, ভরতপুর, কালীপুকুর, নাবুডলা, তড়িপাড়া, পূর্ব রাড়িয়া গ্রামে প্রায় দু’হাজার মানুষের বাস৷ জানা গিয়েছে, পেটের দায়ে ওই গ্রামগুলি থেকে অনেক মানুষ বাইরে অর্থাৎ পড়শি রাজ্যে কাজ করতে যান৷ তেমনই গিয়েছিলেন ওই ২৬ জনও৷ কিন্তু, যখন তাঁরা বাড়ি ফিরে আসেন, তখন তাঁদের একটি করে কিডনির হদিশ পাওয়া যায় না৷ পরিবারের লোকেরা জিজ্ঞাসা করলে প্রথমে কিছু বলতে চান না ওই ২৬ জন৷ পরে জানা যায় আসল সত্য৷
[রেলের কারশেডে ফের দুর্ঘটনা, ওভারহেড তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট ৬ কর্মী]
সূত্রের খবর, বাইরে কাজের সন্ধানে গিয়ে অভাবের তাড়নায় একটি করে কিডনি বিক্রি করে দিয়েছেন ওই ২৬ জন এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে একাধিক পাচারচক্র৷ এই মানুষগুলিকে ভুল বুঝিয়ে অল্প টাকার বিনিময়ে কিডনি পাচার করেছে ওই চক্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা৷ রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সহকারী সভাপতি মানস ঘোষ বলেন, “যারা কিডনি পাচারের সঙ্গে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলাশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে। ওই গ্রামগুলিতে গিয়ে বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনা করব। প্রয়োজনে এই এলাকাতেই তাঁদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করব।” একটি কিডনি নিয়ে বেঁচে থাকা শরীরের পক্ষে ক্ষতিকর বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রকাশ মৃধা৷ তিনি বলেন, “একটি কিডনি নিয়ে বেঁচে থাকা যায়। তবে শরীর সুস্থ রাখার জন্য দুটি কিডনি থাকা জরুরি।”