সৈকত মাইতি, তমলুক: খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরে মৃত্যু হল এক দম্পতির। খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়েছেন ওই পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্য। ঘটনা ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পাঁশকুড়ায়। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত দম্পতি মিলন মান্না (৫২) এবং গৌরী মান্না(৪৮),পাঁশকুড়ার ন্যাকড়া এলাকার বাসিন্দা। পেশায় নাপিত ছিলেন মিলন। অভাবের সংসার চালিয়ে তিন মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে, লক্ষ্মীপূজোকে কেন্দ্র করে কলকাতার মল্লিকফটক এলাকা থেকে বেড়াতে এসেছিলেন মিলনের শাশুড়ি মা ও নাতনি। তাই স্থানীয় পাঁশকুড়া থানা সংলগ্ন হাট বাজার থেকে মাছ, সবজি-সহ অন্যান্য বাজার কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন গৌরী নিজেই। রান্না করেছিলেন মাছের ঝোল এবং মাছের মাথা দিয়ে ঘন্ট। সেই খাবার খেয়েছিলেন সকলে। খাবার খাওয়ার পর থেকেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন মিলনের নাতনি ও বৃদ্ধা শাশুড়ি। অসুস্থ দুজনকেই স্থানীয় পিতপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাঁদের কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়। আর তার মধ্যেই একে একে অসুস্থ হয়ে পড়েন মিলন, গৌরী-সহ তাঁদের বৃদ্ধ বাবা রামপদ মান্নাও।
গত বুধবার রাতে পাঁশকুড়ার ওই দম্পতিকে তমলুক মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাতেই মৃত্যু হয় মিলনবাবুর। পরিস্থিতির বেগতিক দেখে গৌরী দেবীকে তমলুক মেডিকেল কলেজ থেকে তমলুকেরই একটি নার্সিংহোমে ও সেখান থেকে ফের তাকে পাঁশকুড়া পিতপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। আর এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লেই এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়ায়। যদিও বা প্রায় সাত দিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকার পর বুধবার সকালে পিতপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরে আসেন মিলন মান্নার বাবা বৃদ্ধ রামপদবাবু।
এনিয়ে মিলনের ভাই চন্দন মান্না জানিয়েছেন, একই বাড়িতে চার ভাইয়ের বসবাস হলেও পৃথকভাবেই রান্না হয়ে থাকে। তবে এইভাবে যে ওদের এক সঙ্গে হারাতে হবে তা কখনও ভাবতে পারিনি। এদিকে মোটের উপর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসা বৃদ্ধার নাতনি রুম্পা মান্না বলেন, “আমি মাছ খাওয়া খুব একটা পছন্দ করতাম না। তাই অল্প একটু মাছ খেয়েছিলাম। আর তাতেই খাদ্যে বিষক্রিয়ায় এমন বেগতিক পরিস্থিতি তৈরি হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.