Advertisement
Advertisement

Breaking News

কাস্তে-হাতুড়ি ছেড়ে হাতে পদ্ম খোদ রামচন্দ্র ডোমের ভাইয়ের

‘সুবিধাবাদী রাজনীতি’, মত দুঁদে সিপিএম নেতার।

CPM leader Ram Chandra Dome’s brother to fight panchayat polls on BJP ticket
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 3, 2018 7:42 pm
  • Updated:May 4, 2018 2:14 pm

নন্দন দত্ত, সিউড়িঃ সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতার ভাই এবার পঞ্চায়েতে বিজেপির পদ্মফুল প্রতীকে প্রার্থী। যাকে ঘিরে জেলা বমফ্রন্টেই নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। যদিও সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা রামচন্দ্র ডোম বলেন, ‘কে কোন রাজনীতি করবে সেটা তাঁর ব্যক্তিগত মত। তবে রাজ্যের শাসকের পালটা হিসাবে আরেক শাসকের হাত ধরাটা সুবিধাবাদী রাজনীতি বলে আমার মনে হয়।’ যদিও রামচন্দ্র ডোমের ভাই তথা বিজেপির পঞ্চায়েত প্রার্থী জয়দেব ডোম বলেন, ‘সিপিএমের আর ক্ষমতা নেই তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করার। তাই আমরা বিজেপিকেই লড়াইয়ের প্রতীক হিসাবে বেছে নিয়েছি।’

[পুরশুড়ায় হৃদরোগে মৃত্যু তৃণমূল প্রার্থীর]

Advertisement

মহম্মদবাজারের চিল্লা গ্রামের এক পর্ণকুটির থেকে উঠে এসেছেন সিপিএমের দুঁদে নেতা রামচন্দ্র ডোম। ১৯৮৯ সাল থেকে বীরভূম ও বোলপুর মিলিয়ে সাত বার সাংসদ হয়েছেন রামচন্দ্র। তাঁর গ্রাম চিল্লাতে যে খুব একটা উন্নয়ন হয়েছে তা নয়। শুধু গ্রামে একটা ঢালাই রাস্তা হয়েছে। কিন্তু উন্নয়ন নিয়ে গ্রামে খুব একটা ক্ষোভ নেই গ্রামবাসীদের। এমনকী সিপিএমের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটিতে গেলেও রামচন্দ্রবাবুর পরিবারের খুব একটা উন্নতি হয়নি। রামচন্দ্র ডোমের অনান্য ভাইয়েরা মূলত কাঠের কারিগর হলেও কেউ কেউ খাদানে কাজ করেন। বড় ভাই হরি ডোমের গ্রামেই মুদির দোকান আছে। এখনও মাটির ঘর, খড়ের চালায় বাস করেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় একটা পাকা ঘরও জোটেনি। অথচ নিপীড়িত মানুষের হয়ে লড়াইয়ে পিছপা হয়নি রামচন্দ্র ডোমের পরিবার। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও যখন তৃণমূলের সবুজ ঝড়, তখনও চিল্লা গ্রাম থেকে সিপিএমের প্রার্থীকে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দিতায় এগিয়ে রেখেছিল গ্রাম।

Advertisement

[নির্দল প্রার্থীর ফ্লেক্স ছেঁড়াকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র রাজারহাট, ইটের ঘায়ে আহত পুলিশকর্মী]

সেই গ্রামের সিপিএম নেতার বাড়ি থেকে এবার কাস্তে-হাতুড়ি ছেড়ে বিজপির পদ্মফুলের হাত ধরেছেন গ্রামবাসীরা। তারাই জয়দেব ডোমকে প্রার্থী করে বামপন্থী ঘরে পদ্ম ফোটানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন। তাই এবার কাঁইজুলি ৬ নম্বর সংসদ থেকে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখোমুখি প্রার্থী হয়েছেন জয়দেববাবু। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম না থাকায় এলাকার বামপন্থী ভোটাররা বিজেপির পক্ষেই ভোট দেবেন, এমনটাই দাবি গ্রামবাসীদের। অথচ রামচন্দ্র ডোমের দাদা হরি ডোম ওই গ্রাম থেকে আগে সিপিএমের পঞ্চায়েত সমিতির বিজয়ী প্রতিনিধি ছিলেন। চিল্লা গ্রাম বরাবরই বামেদের শক্ত ঘাঁটি। সেই পরিবারের সকলের গলায় এবার সিপিএম বিরোধী কথাই শোনা যাচ্ছে। বিজেপি প্রার্থী জয়দেব ডোম বলেন, ‘অনেক মার খেলাম। আমাদের মনে হচ্ছে এবার তৃণমূলের সঙ্গে লড়াই করতে পারবে একমাত্র বিজেপি। ওদের একটা আদর্শ আছে। যদিও প্রার্থী হওয়ার পর নানা হুমকি দিয়েছে তৃণমূল। তবুও আমরা লড়াই ছাড়ছি না।’ জয়দেববাবুর স্ত্রী সোনামুখি, ‘মেয়ে প্রভাতি ডোম বলেন, প্রার্থী হওয়ার পর থেকে, নানা হুমকি। ভয় দেখানোর পালা চলছে। এতদিন সংসার করছি, কোনওদিন ভোটের জন্য এমন হুমকি শুনিনি।’ তবে যে রামচন্দ্র নিজের বামপন্থী প্রার্থীদের জন্য নলহাটিতে গত ৫ এপ্রিল মাথায় চোট পেয়েছেন, রক্ত ঝরেছে, সেই নলহাটিতে যেন প্রায় সব বাম প্রার্থী নাম তুলে বুঝিয়ে দিয়েছেন, বামেদের শক্তিক্ষয় শুরু হয়েছে। তেমনই খোদ তাঁর নিজের বাড়িতে পদ্মের বীজ ফুটে ওঠায় শঙ্কিত তাঁর দল। তবে রামচন্দ্র ডোম বলেন, ‘কেউ ব্যক্তিগতভাবে কোথায় গেল সেটা বড় কথা নয়, মহম্মদবাজারে আমার নিজের এলাকায় বামপন্থীরা এখনও লড়াই করছেন, আমি তাঁদের সঙ্গে আছি।’

ছবি-বাসুদেব ঘোষ 

[মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে সাঁওতালি ভাষায় গান লিখেই ভোটের আসর মাতাচ্ছেন লোকশিল্পী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ