নিজস্ব সংবাদদাতা, জলপাইগুড়ি: দু’সপ্তাহের মধ্যে ৫৫ হাজার টাকার রেলের টিকিট! এমন কাণ্ড দেখে ব্যাঙ্ককর্মীও কৌতূহল চেপে রাখতে পারেননি। তাই গ্রাহককে জিজ্ঞেস করেই ফেলেন, “এত টাকার এত টিকিট কেটেছেন, কোথায় যাবেন ম্যাডাম?”
আর এতেই টনক নড়ে জলপাইগুড়ি শহরের শিল্প সমিতি পাড়ার বাসিন্দা তথা মারোয়াড়ি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা নিবেদিতা বর্মার। পাস বুক আপডেট করাতেই মাথায় হাত। দু’সপ্তাহের মধ্যে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব ৫৫ হাজার টাকা। আর এই পুরো টাকাই আইআরসিটিসির মাধ্যমে রেলের টিকিট কাটা হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই পুরো লেনদেনের বিষয়ে একবারও এসএমএস পাননি বলেও দাবি শিক্ষিকার। অভিনব এই প্রতারণার হদিশ পেয়ে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশও। শুরু হয়েছে তদন্ত।
[ভাল-খারাপ ছোঁয়া বোঝাতে তথ্যচিত্র স্কুলে, মেট্রোতেও সচেতনতা]
বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি ঋণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কে গিয়েছিলেন শিক্ষিকা নিবেদিতা বর্মা। পাস বুক আপডেট করাতে দেন তিনি। ব্যাঙ্ককর্মী কম্পিউটারে তাঁর অ্যাকাউন্ট খুলে দেখেন, প্রচুর রেলের টিকিট কাটা হয়েছে। তখনই তিনি নিবেদিতাদেবীকে জিজ্ঞেস করেন টিকিট কাটার বিষয়টি। এরপর পাসবুক আপডেট করাতেই দেখা যায়, বহুবার বিভিন্ন জায়গার ট্রেনের টিকিট কাটা হয়েছে তাঁর অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে। প্রতিবারই টিকিট কাটা হয়েছে আইআরসিটিসি-র মাধ্যমে। গোটা এই অপারেশন চলেছে ৭ ডিসেম্বর থেকে ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে।
নিবেদিতাদেবী বলেন, “আমার এটিএম কার্ড আছে। কিন্তু ওই কার্ড ব্যবহার করি না। এমনকী, আমি বা পরিবারের কোনও সদস্য বাইরে যাইনি। কাউকে কোনও তথ্যও দিইনি। অথচ কীভাবে এত টাকা গায়েব হয়ে গেল, তা বুঝতে পারছি না। আবার এতবার লেনদেন হলেও কোনও এসএমএস কেন পেলাম না। এসএমএস এলেও সতর্ক হতে পারতাম।” এদিকে স্যালারি অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েবের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারোয়াড়ি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা এবং শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, তাঁদের বেতনের টাকা কি তাহলে ব্যঙ্কেও সুরক্ষিত নয়?
এই ঘটনার পর শুক্রবার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা লক্ষ্মী বাগচীকে সঙ্গে নিয়ে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করেন নিবেদিতা বর্মা। জলপাইগুড়ি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার জানান, অভিযোগ পেয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
[এবার কলকাতা পাচ্ছে এসি লোকাল ট্রেন, শহরতলিতে বাতানুকূল যাত্রা]