Advertisement
Advertisement

Breaking News

শিল্পী এবং চাহিদার অভাবে আঁধারেই বাংলার ভূতের ভবিষ্যৎ

ভূত চর্তুদশী আছে, তবে ভূত গড়ছেন না পটুয়ারা।

Dakini, Yogini idols fading from Kali Puja over plummeting demand
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 18, 2017 9:15 am
  • Updated:October 18, 2017 9:15 am

চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: গল্পে ভূত, সিরিয়ালে ভূত, সিনেমায় ভূত, শপিং মলে ভূত (হরর-শো)। সর্বত্র ভূত নিয়ে যেখানে ব্যবসা, সেখানে বাংলার ভূতেরা হয়ে পড়েছে ব্রাত্য। ব্র্যান্ড ভ্যালু না থাকায় মার খাচ্ছে বাংলার ভূতের কলা, শিল্প। কালীপুজোয় বিভিন্ন ক্লাব বা সংগঠকরা কালী প্রতিমার সঙ্গে সাজিয়ে রাখতেন ডাকিনী যোগিনী-সহ নানা ভূত পিশাচদের মূর্তি। কিন্তু এ ছবি ধীরে ধীরে উধাও হচ্ছে। আসানসোলের কুমোরটুলি মহিশীলা কলোনিতে কালী তৈরিতে মন দিলেও তাদের অনীহা রয়েছে ভূত-পিশাচ গড়তে। তাই বাংলার ভূতের ভবিষ্যৎ যেন আঁধারে ঢাকা।

[চক দিয়ে তৈরি ৩ ইঞ্চি কালীর প্রতিমা, তাক লাগানো কীর্তি স্কুল পড়ুয়ার]

Advertisement

গোটা মহিশীলা জুড়ে প্রায় দু’হাজার ছোট বড় কালী মূর্তি তৈরি হয়েছে। কিন্তু তন্নতন্ন করেও খুঁজে পাওয়া গেল না ভূত বা পিশাচের মূর্তি। একমাত্র কৃষ্ণরুদ্র পালের কাছে মিলল একজোড়া ডাকিনি-যোগিনী। মৃৎশিল্পী সমীরণ পালের কথায়, কালী প্রতিমা গড়তে যা খরচ হয়, ভূতপ্রেত বানাতেও তার সমান খরচ। পরিশ্রমও এক। কিন্তু প্রতিমার মূল্য ঠিকঠাক মেলে না। এই কারণে বরাত নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন তাঁরা। কুলটির মৃৎশিল্পী মহাদেব বাউরি জানান, দুর্গাপুজোর পর পুকুরে বা নদীতে ফেলে দেওয়া পুরানো কাঠামো কাজে লাগিয়ে ডাকিনী-যোগিনী তৈরি হয়। তাতে খরচ খানিকটা পুষিয়ে যেত। কিন্তু পুরসভা থেকে জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য পুকুর থেকে ওই সব তুলে নেওয়ায় পুরানো কাঠামোর বড্ড অভাব। নতুন করে কাঠামো গড়ে মাটি-রং চড়িয়ে যা খরচ হয়, বেচলে সেই অর্থ পাওয়া যায় না। তাই ভূত গড়া ছেড়ে দিয়েছেন এই সব পটুয়ারা।

Advertisement

ASL-BHOOT-CHATURDASHI.jpg-2

[ইসলাম গ্রহণ করেও কেন সাধনা করেছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ?]

ধেমোমেন কোলিয়ারির নিমাই বাদ্যকর সারা বছর ব্যান্ডপার্টি বা ভাঙরাপার্টিতে ঢোল বাজান, কিন্তু এই সময়ে পার্ট টাইমে ভূত গড়েন। উদ্দেশ্য দু পয়সা কামানো ও মৃৎশিল্পে হাত পাকানো। বেশ কিছু শ্মশানকালী মন্দিরের জন্য তিনি ডাকিনি যোগিনী ও কঙ্কাল তৈরির বরাত পেয়েছেন। কিন্তু দরদাম ঠিক পছন্দ হয়নি। পুরানো কাঠামো ২০০-৪০০ টাকায় কিনে তারপর মাটি-রঙ চড়িয়ে ভূত গড়ছেন। কিন্তু দাম পাবেন হাজার টাকারও কম। কালীপুজোর উদ্যোক্তারা বলেন ইচ্ছে থাকলেও, শিল্পীর অভাবে মা কালীর পাশে ভূত, রাক্ষস, ডাকিনী-যোগিনী সাজিয়ে রাখা যাচ্ছে না। মহিশীলার আর এক শিল্পী বিপিন পাল গত বছর ছোট থেকে বড় ভূত, রাক্ষস থেকে শাকচুন্নি বানিয়েছিলেন। কিন্তু এর অধিকাংশই বিক্রি হয়নি। শেষ পর্যন্ত জলের দামে ছাড়তে হয়েছিল।

ASL-BHOOT-CHATURDASHI.jpg-3

[মা যে জীবন্ত! জানেন কীভাবে প্রমাণ করেছিলেন সাধক কমলাকান্ত?]

তবে অনেকের মতে ড্রাকুলা, উইচদের নিয়ে এই প্রজন্ম মাতামাতি করে। তারা ব্যস্ত ব্লু-হোয়েল নিয়ে। বিশ্বে যেভাবে ঘটা করে হ্যালোইন ডে পালিত হয় তার ছিটেফোঁটাও আবেগ থাকে না ভূত চতুর্দশী নিয়ে। অতএব হাতে তুলি দিয়ে ভূত, শাকচুন্নি নয় তৈরি হয় প্রতিমা। শিল্পী, চাহিদা এবং বাজারের বাধ্যবাধকতায় আস্তে আস্তে লুপ্ত হতে বসেছে এই বাংলার মামদো, স্কন্ধকাটা, একানড়ে বা শাকচুন্নিরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ