Advertisement
Advertisement

পাহাড়ে মোর্চার আন্দোলনকে সমর্থন, নেপালের মাওবাদীদের চিঠি

গোয়েন্দা রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

Darjeeling unrest : Nepal Maoist extend support to Morcha agitation
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:June 22, 2017 4:03 am
  • Updated:June 22, 2017 8:06 am

ব্রতীন দাস, শিলিগুড়ি: গত সপ্তাহেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সন্দেহ করেছিলেন। বলেছিলেন পাহাড়ের অশান্তির পিছনে বিদেশি শক্তি এবং জঙ্গিদের হাত আছে। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের আশঙ্কা যে অমূলক নয় তা প্রকাশ হল গোয়েন্দা রিপোর্টে। সূত্রের খবর, নেপালের মাওবাদীরা পাহাড়ের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়েছেন। এই নিয়ে মোর্চা নেতৃত্বর কাছে চিঠিও দিয়েছে প্রতিবেশী দেশের মাওবাদীরা। মোর্চার পাশে দাঁড়িয়েছেন পবন কুমার চামলিং।  সিকিমের মুখ্যমন্ত্রী গোর্খাল্যান্ডের সমর্থনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে চিঠি লিখেছেন। বিমল গুরুয়ের চাপ আরও বাড়াচ্ছে রাজ্য সরকার। সিংমারিতে সংঘর্ষের ঘটনায়  বিমল গুরুং, আশা গুরুং সহ মোর্চার একাধিক প্রথম সারির নেতার বিরুদ্ধে পুলিশ স্বতপ্রণোদিত মামলা করেছে।

[মোর্চার আন্দোলনের নেপথ্যে জঙ্গিদের হাত, অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রীর]

ভৌগলিক কারণে দার্জিলিংয়ের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। এই জেলার তিন দিকে তিনটি দেশ। আন্তর্জাতিক সীমানা লাগোয়া দার্জিলিং জুনের প্রথম সপ্তাহ থেকে উত্তপ্ত। গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার আন্দোলন কয়েক দিনের মধ্যে হিংসাশ্রয়ী হয়ে ওঠে। দলের প্রধান বিমল গুরুংয়ের বাড়ি থেকে প্রচুর অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ ও আধা সেনা। পাহাড়ে কীভাবে এত অস্ত্র ঢুকল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। সেসময় নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, পাহাড়ের অস্থিরতার সুযোগ নিয়েছে জঙ্গিরা। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ ছিল মোর্চার সঙ্গে জঙ্গিদের যোগ রয়েছে। এর নাকি প্রমাণও তাঁর কাছে রয়েছে। উত্তর পূর্বের জঙ্গি সংগঠন এবং বিদেশি শক্তিগুলিরও এর নেপথ্যে হাত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোয়েন্দা রিপোর্টে সেই তথ্য উঠে এল। সূত্রের খবর, নেপালের মাওবাদীরা খোলাখুলিভাবে গুরুংদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পাহাড়ের আন্দোলনকে সমর্থন করে তারা মোর্চা নেতৃত্বকে চিঠিও দিয়েছে। নেপালের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে কিছুটা কোনঠাসা ওই দেশের মাওবাদীরা। এই অবস্থায় পাহাড়ের অস্থিরতার সুযোগ নিয়ে মাওবাদীরা সংগঠন বাড়াতে চাইছে।

Advertisement

[দশম দিনেও অচল পাহাড়, খাদ্যসংকটেও পিছিয়ে আসতে নারাজ মোর্চা]

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, প্রশাসনের চাপ বাড়ায় মোর্চার কয়েকজন নেতা নেপাল ও সিকিমের সিম কার্ড ব্যবহার করছেন। বিশেষ সফটওয়্যার কাজে লাগিয়ে ওই মোর্চা নেতাদের ফোন ট্র্যাকিংয়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। পাহাড় থেকে বাহিনী তুলে নেওয়ার দাবি মোর্চা জানালেও প্রশাসন অনড়। বুধবার এফআইআরে নাম থাকা মোর্চার ১১ নেতার বাড়িতে পুলিশ চল্লাশি চালায়। সিংমারিতে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। দার্জিলিং সদর থানার আইসি সৌম্যজি রায় জানিয়েছেন, এই নিয়ে একটি স্বতঃপ্রনোদিত মামলা করা হয়েছে। বিমল গুরুং, তাঁর স্ত্রী আশা গুরুং সহ কয়েকজন মোর্চা নেতার বিরুদ্ধে এই মামলা হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুরের দায়ে এই ব্যবস্থা। বুধবার পাহাড়ে অ্যাম্বুলেন্স চালকদের আটকে দেওয়া নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায় । এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ চালকরা দার্জিলিং সদর হাসপাতালের সুপার এবং জেলাশাসককে বিষয়টি জানান। জেলাশাসক জানিয়েছেন অন্যায় বরদাস্ত করা হবে না। এই নিয়ে প্রশাসনিক উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। প্রশাসনের সঙ্গে সংঘাত বজায় রেখে সর্বদল বৈঠকের সময় মোর্চা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে পাহাড়ে মিছিল করবে। তবে দার্জিলিংয়ে ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ থাকায় পাহাড়ের পড়ুয়ারা বিপাকে পড়েছেন। এখন কলেজে ভর্তি চলছে। এমন একটা সময়ে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় পড়ুয়ারা ভর্তির তালিকায় তাদের নাম ওঠা নিয়ে অন্ধকারে রয়েছেন। পাশাপাশি ভর্তির জন্য আবেদনপত্র এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও তারা পারছেন না আপলোড করতে। প্রশাসন ও মোর্চার মধ্যে সংঘাতের আবহে পাহাড় ছেড়ে নেমে আসছেন সংখ্যালঘুরা। রমজান মাসে পাহাড় জুড়ে অচলাবস্থা তৈরি হওয়ায় বাধ্য হয়ে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

Advertisement

 

 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ