শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় যুবকের মুখে অ্যাসিড হামলা চালাল বিবাহিত মহিলা৷ শুক্রবার রাতে ধূপগুড়ি ১২ নম্বর ওয়ার্ডের লিচুতলা মোড়ে এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ছাপাখানার কর্মী রাজেশ সরকার (২১) নামে এক যুবক৷ আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজেশকে ভরতি করা হয়েছে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে৷ অ্যাসিড হামলার ঘটনায় রাজেশের দাদা, কাজল সরকারও গুরুতর জখম বলে জানা গিয়েছে৷
[রাতভর মারধরের জের! শেওড়াফুলিতে জিআরপি হেফাজতে বন্দির মৃত্যু]
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ধূপগুড়ির গাদং ১ নম্বর অঞ্চলের কাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাজেশকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছুড়ে ধূপগুড়ির চৌপথির দিকে চম্পট দেয় বছর ৩৫-এর এক মহিলা৷ অ্যাসিড হামলায় তাঁর দাদা কাজল সরকারও আহত হয়েছেন৷ ঘটনার পর স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আক্রান্ত দুই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভরতি করান৷ হাসপাতালের বেডে শুয়ে আক্রান্ত রাজেশ বলেন, ‘‘সুস্মিতা বিশ্বাসের শ্বশুরবাড়ি আমাদের পাড়াতেই৷ বিগত কয়েকমাস যাবত সুস্মিতা আমাকে নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করত৷ বিয়ের প্রস্তাব দিত৷ সুস্মিতা বিবাহিতা৷ আমার থেকে বয়সেও বড়ো। তাই প্রতিবারই আমি তাকে না বলেছি। কিন্তু, সম্পর্ক করতে রাজি না হওয়ায় আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল৷’’
[সম্পর্কের শীতলতা নাকি সন্দেহে খুন, প্রেমিকাকে গুলি কাণ্ডে ঘনাচ্ছে রহস্য]
জানা গিয়েছে, এদিন রাতে দাদার সঙ্গে কাজ থেকে ফেরার পথে অ্যাসিড হামলার মুখে পড়ে রাজেশ৷ কিছু বোঝার আগেই তাঁদের লক্ষ্য করে একটি গ্লাস থেকে অ্যাসিড ছুড়ে মারে সুস্মিতা৷ রাজেশের দাদা কাজল সরকার জানিয়েছেন, ‘‘ কয়েকবছর আগে আমাদের গ্রামের তিলক বিশ্বাসের সঙ্গে তার বিয়ে হয় সুস্মিতার। তিলক ভিন্ রাজ্যে কাজ করে৷ এর আগেও গ্রামে আরও কয়েকজন যুবকের সঙ্গে সুস্মিতা সম্পর্ক জড়াতে চেয়েছে বলে শুনেছি। সম্ভবত এই কারণেই কিছুদিন যাবত ওর পরিবারে সমস্যা চলছিল৷’’ জানা গিয়েছে, পরিবারে অশান্তি হওয়ায় অভিযুক্ত মহিলা শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে কলকাতায় বাপের বাড়িতে থাকতে শুরু করে। কিন্তু, আক্রান্ত যুবকের পিছু ছাড়েনি ওই মহিলা৷ রাজেশকে নানা ভাবে উত্ত্যক্ত করা হত বলেও অভিযোগ৷ মহিলার হাত থেকে রেহাই পেতে বেশ কয়েকবার মোবাইল নম্বর পালটেও ফেলেছেন তিনি৷ কিন্তু, তাতেও রেহাই মেলেনি৷
[শ্যালিকাকে ধর্ষণ করে খুন, আমৃত্যু কারাবাস জামাইবাবুর]
এদিনের এই ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান রাজেশের মা রূপসী সরকার। তিনি বলেন, ‘‘আপাতত ছেলের চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করে তোলায় আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য৷ আমরা ওই মহিলার শাস্তির দাবিতে থানায় অভিযোগ জানাব৷’’ এদিকে ঘটনার পরেই ধূপগুড়ি থানার আধিকারিকরা হাসপাতালে যান৷ আক্রান্ত যুবক, প্রত্যক্ষদর্শী ও তাঁর পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলেন৷
[বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নাবালিকার সঙ্গে সহবাস, চাঞ্চল্য বনগাঁয়]
ঘটনাস্থল পাশে একটি পুজোর মণ্ডপের নীচ থেকে একটি ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ৷ ব্যাগের মধ্যে একটি অ্যাসিড ভর্তি বোতল উদ্ধার হয়। প্রাথমিক তদন্তে এই ঘটনায় গয়নার দোকানে ব্যবহৃত নাইট্রিক অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়েছিল বলে ধারণা পুলিশের। ধূপগুড়ি থানার আইসি সুবীর কর্মকার বলেন, ‘‘ঘটনার খবর পেয়েই অভিযুক্ত মহিলার খোঁজে জোড় তল্লাশি শুরু করা হয়েছে।