Advertisement
Advertisement

Breaking News

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ

ছুটিতে ডাক্তাররা, পুজোর চার দিনে উত্তরবঙ্গে মৃত ১০৩

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

Doctors on vacation, death toll rises in North Bengal during puja days
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:October 10, 2019 8:57 am
  • Updated:October 10, 2019 8:59 am

শুভদীপ রায় নন্দী, শিলিগুড়ি: পুজোর দিনগুলিতে ডাক্তার নেই। নেই পর্যাপ্ত চিকিৎসা পরিষেবাও। যার জন্যে উৎসবের এই চার দিনে উত্তরবঙ্গে মৃত্যু হয়েছে মোট ১০৩ জনের। রিপোর্ট অনুযায়ী, পুজোর ৪ দিনে রোগীর স্বাভাবিক মৃত্যুর হার ছাড়িয়ে গেল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘিরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে কিন্তু ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। 

[আরও পড়ুন: গোয়েন্দা আধিকারিককে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মার, গ্রেপ্তার ২ ]

নথি থেকে জানা গিয়েছে, গত বছর ওই সংখ্যা ছিল ৭৩। সাধারণত অন্যান্য দিনে স্বাভাবিক মৃত্যুর সংখ্যা ১০ থেকে ১২ জন। কিন্তু পুজোর সময় তা বেড়ে ২০ থেকে ২৩ হয়েছে। যেই সংখ্যা রীতিমতো চমকে যাওয়ার মতো। রোগীর পরিবারের অভিযোগ, সময়মতো যথাযথ চিকিৎসা পরিষেবা না মেলায় এই পরিস্থিতি। তাঁদের অভিযোগ, শুধু যে চিকিৎসক ছিলেন না, সেটাই নয়। হাসপাতালের সুপার ও কলেজের অধ্যক্ষও ছুটিতে ছিলেন। সূত্রের খবর, বেশিরভাগ চিকিৎসকের বাড়ি কলকাতায়। তাই পুজোর দিনগুলিতে দায়িত্ব পালনের জন্য বিশেষ রোস্টার তৈরি হলেও কাজে দেয়নি। 

Advertisement

অন্যদিকে, মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি ওই মৃত্যুর হার অস্বাভাবিক কিছু নয়। চিকিৎসা পরিষেবাও স্বাভাবিক ছিল বলে জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যাই দাবি করুক না কেন, তা মানতে নারাজ ভুক্তভোগী রোগীর পরিবারের লোকজন। যেমন ধূপগুড়ির বাসিন্দা সিকন্দর আলি। তাঁর স্ত্রী রোহিদা বেগম ১৪ দিন আগে পেটে টিউমার নিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভরতি হন। পুজোর ছুটির কারণে তাঁর অপারেশন পিছিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বুধবার সকালে তিনি মারা যান। সিকন্দর আলি বলেন, “আমরা বলেছিলাম অপারেশনটা করে ফেলতে। কিন্তু চিকিৎসক না থাকায় সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়। সময়মতো অপারেশন হলে স্ত্রীকে হারাতাম না।” রোগীর পরিবারের লোকজনে আরও অভিযোগ জানিয়েছেন, চারদিন সময়মতো চিকিৎসক মেলেনি। বিনা চিকিৎসায় রোগীকে ফেলে রাখতে হয়েছে। এ কারণে অনেকেই মারা গিয়েছে। 

Advertisement

[আরও পড়ুন: অসহায় বৃদ্ধাদের উপহার দিয়ে প্রণাম, ভিন্ন রূপে ধরা দিলেন বিধায়ক ]

হাসপাতালের সহকারী সুপার বিজয় থাপা বলেন, “রোগী মৃত্যু হার তেমন বেশি কিছু নয়। শুধুমাত্র ৮ অক্টোবর ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে পাঁচটি শিশু রয়েছে।” রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “রোগী মৃত্যু সেরকম বাড়েনি। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।” হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালে পৌঁছনোর আগে কিছু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া অস্বাভাবিক মৃত্যু ও পথ দুর্ঘটনার মতো পুলিশ কেসের রোগীর সংখ্যাও এবার বেশি ছিল। ৪ অক্টোবর হাসপাতালে ২০ জন রোগীর মৃত্যুর হয়েছে। তার মধ্যে ২টি ছিল পুলিশ কেস। ৫ অক্টোবর ২১ জন মারা যায়। তার মধ্যে ৭টি পুলিশ কেস ছিল। এছাড়াও ৬, ৭ এবং ৮ অক্টোবর যথাক্রমে ১৯, ২০ এবং ২৩ জন রোগীর মৃত্যুর হয়। তিনদিনে একইভাবে পুলিশ কেস ছিল ৬, ৪ এবং ৮টি। সব মিলিয়ে মোট ১০৩ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে পুলিশ কেসের সংখ্যা ২৭টি। ৯ অক্টোবর দুপুর পর্যন্ত রোগী মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ন’জন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, এই পরিসংখ্যান মোটেই অস্বাভাবিক নয়। 

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ