শাহজাদ হোসেন, ফরাক্কা: পণের টাকা আদায়ের তাঁর কিডনি বিক্রি করে দিয়েছেন স্বামী! এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন মুর্শিদাবাদের ফরাক্কার বাসিন্দা রীতা সরকার। ওই গৃহবধূর অভিযোগ, কলকাতার একটি নার্সিংহোমে অ্যাপেনডিক্স অপারেশনের নামে তাঁর একটি কিডনি বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় স্বামী, শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। ঘটনার পর থেকে পলাতক ওই মহিলার স্বামী বিশ্বজিৎ সরকার। তার সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। যদিও পণ আদায়ের জন্য পুত্রবধূর কিডনি বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাশুড়ি।
[সতীনকে ঈর্ষা, দুধের শিশুকে ‘খুন’ করল সৎ মা]
ফরাক্কার বিন্দুগ্রামের বাসিন্দা রীতা সরকার। ১৩ বছরের আগে মুর্শিদাবাদের লালগোলার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ সরকারের বিয়ে হয় তাঁর। ওই দম্পতির ছেলের বয়স ১১ বছর। রীতার দাবি, বিয়ের সময়ে তাঁর বাবার কাছ থেকে গয়না, আসবাবপত্র ও নগদ ২ লক্ষ চেয়েছিল বিশ্বজিৎ। কিন্তু, গয়না ও আসবাব দিলেও, নগদ টাকা দিতে পারেননি ওই গৃহবধূর বাবা। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে পণের জন্য রীতার উপর অত্যাচার চালাত তাঁর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। রীতা সরকার জানিয়েছেন, বছর তিনেক আগে শ্বশুরবাড়িতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। পেটে প্রবল যন্ত্রণা হচ্ছিল। স্ত্রীকে কলকাতা একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যায় বিশ্বজিৎ। সেখানেই ওই গৃহবধূর অ্যাপেনডিক্স অপারেশন হয়। তাঁর অভিযোগ অস্ত্রোপচারের নামে কিডনি হাতিয়ে নেওয়া হয়।
[ঘুমন্ত অবস্থায় বউদিকে কুপিয়ে খুন দেওরের, রেহাই পেল না ২ শিশুও]
গত নভেম্বরে শিলিগুড়িতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন রীতাদেবী। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে তাঁর আলট্রাসোনোগ্রাফি হয়। ওই গৃহবধূর দাবি, ইউএসজিতে দেখা গিয়েছে, তাঁর ডানদিকের কিডনিটি নেই। প্রথমে অবশ্য ঘটনাটি বিশ্বাস হয়নি রীতার বাপের লোকেদের। মালদা মেডিক্যাল কলেজে ফের তাঁর আলট্রাসোনোগ্রাফি করানো হয়। তখনও এক ফল। এরপরই কিডনি বিক্রির বিষয়ে নিশ্চিত হন রীতা ও তাঁর বাপেরবাড়ির লোকেরা। শুক্রবার ফরাক্কা থানায় পণের জন্য কিডনি বিক্রি অভিযোগে স্বামী, শ্বশুড়বাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে উধাও রীতার স্বামী বিশ্বজিৎ। তার সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। তবে লালগোলার বাড়িতেই রয়েছেন শ্বাশুড়ি। তিনি অবশ্য যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। শ্বাশুড়ির পালটা অভিযোগ বদনাম করতেই কিডনি বিক্রির গল্প ফেঁদেছে বউমা। তবে তেরো বছরের দাম্পত্যের পরও কোনও স্বামী বা তাঁর পরিজনেরা বধূর সঙ্গে কি এমন আচরণ করতে পারে? প্রতিবেশীরা পর্যন্ত গোটা ঘটনায় অবাক।
[ঘন কুয়াশায় মোড়া দক্ষিণবঙ্গ, ৩১ এর উপর কলকাতার পারদ]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.