মদ্যপ ভিলেজ পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
সুমন করাতি, হুগলি: আকণ্ঠ মদ্যপান করে গাড়ি চালাচ্ছিলেন এক ভিলেজ পুলিশকর্মী। সেই গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর জখম হলেন দুই নিরীহ সাধারণ মানুষ। শুধু তাইই নয়, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেই গাড়ি একটি গাছেও ধাক্কা মারে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির পাণ্ডুয়া থানার শিবরাই গ্রামে। জখমদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, যে গাড়িটি চালানো হচ্ছিল, সেটিরও ফিটনেস সার্টিফিকেট, বৈধ ইন্সিওরেন্স নেই। প্রশাসনিক কাজে যুক্ত থাকা ভিলেজ কর্মী কীভাবে এমন কাজ করতে পারেন? সেই প্রশ্ন উঠেছে।
অভিযুক্ত ভিলেজ পুলিশকর্মীর নাম গৌতম দাস। তিনি পাণ্ডুয়া থানায় কর্মরত। জানা গিয়েছে, ওই অভিযুক্ত গতকাল বৃহস্পতিবার সারারাত একটি অনুষ্ঠান চলাকালীন মদ্যপান করেছিলেন। এরপর নিজেই মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে পাণ্ডুয়ার দিকে রওনা হন। আজ শুক্রবার সকালে শিবরাই গ্রামের রাস্তায় ঢোকার পরেই আর গাড়ির নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারেননি তিনি। প্রথমে এক প্রৌঢ়াকে ধাক্কা মারে ওই গাড়ি। এরপর আরও একজনকে ধাক্কা মারা হয়। শুধু তাই নয়, এরপর ওই গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ধারের একটি গাছে ধাক্কা মারে।
ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। ঘটনাস্থলে ছুটে যান স্থানীয় বাসিন্দারা। গাড়ি থেকে ওই অভিযুক্ত ভিলেজ পুলিশকে নামানো হয়। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি একটাই মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন, যে নিজে দাঁড়াতে পর্যন্ত পারছিলেন না। রাস্তার ধারেই রাখা বালির উপর বসে পড়েন তিনি। কখনও মাথা চুলকানে থাকেন। কখনও হাত দিয়ে চোখমুখ চেপে রাখেন। আবার কখনও অন্যদের কাছে হাতজোড় করে ক্ষমাও চান। রাতে মদ্যপান করেছেন, সেই কথাও স্বীকার করে নেন।
স্থানীয়রাই দুই জখমকে উদ্ধার করে প্রথমে মগরা গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রৌঢ়া গৌরী মালিকের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঘটনার পর এলাকায় প্রবল ক্ষোভ ছড়ায়। সমাজব্যবস্থায় পুলিশ রক্ষক হিসেবে কাজ করেন। সেই পুলিশ এভাবে মদ্যপান করে কীভাবে গাড়ি চালাতে পারেন? কীভাবে এত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কাজ করা সম্ভব? সেই প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। অভিযোগ, যে গাড়িটি চালানো হচ্ছিল, সেটিরও ফিটনেস সার্টিফিকেট নেই। বহুদিনের ট্যাক্স বকেয়া রয়েছে বলেও গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত মদ্যপ ভিলেজ পুলিশের শাস্তির দাবি তুলেছেন স্থানীয়রা।
আইনরক্ষার দ্বায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরাই এমন দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কাজ কীভাবে করে? সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? সেই প্রশ্নও তুলেছেন স্থানীয়রা। পুলিশের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। অভিযুক্তকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.