৪ আশ্বিন  ১৪৩০  শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

রায়নার জাল সিমেন্ট কারখানার হদিশ, ধৃত দুই

Published by: Subhamay Mandal |    Posted: August 1, 2018 8:16 pm|    Updated: August 1, 2018 8:16 pm

Duplicate Cement factory found in Raina

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: জাল সিমেন্ট কারখানার হদিশ মিলল পূর্ব বর্ধমানের রায়নার বাঁকুড়া মোড় এলাকায়। মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া বা জমাট বেঁধে নষ্ট হওয়া সিমেন্ট জোগাড় করে তার সঙ্গে রাসায়নিক, গঙ্গামাটি মিশিয়ে জাল সিমেন্ট তৈরি করা হত এখানে। তারপর তা প্যাকেটজাত করে নামী কোম্পানির স্টিকার মেরে বাজারজাত করা হত। বুধবার সকালে জেলার দুর্নীতিদমন শাখা (ইবি) আচমকা হানা দিয়ে বেআইনি এই সিমেন্ট কারখানার পর্দাফাঁস করেছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে এই বেআইনি কারখানার মালিক বর্ধমান শহেরর বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ বৈরাগ্য ও ম্যানেজার মঙ্গলকোটের আউশগ্রামের তারাপদ বৈরাগ্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেখানে থাকা বেশ কয়েকজন শ্রমিককে অবশ্য ছেড়ে দেওয়া হয়।

পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই বেআইনি কারখানা থেকে ১৫৫৪ বস্তা জাল সিমেন্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বেশকিছু যন্ত্রপাতি, রাসায়নিক, গঙ্গামাটি, ১টি ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। জাল সিমেন্টের ও অন্যান্য নমুনা ল্যাবরেটরি টেস্টে পাঠানো হবে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের বর্ধমান আদালতে পেশ করে হেফাজতে নেওয়া হবে। এরপরই এই চক্রে জড়িত রয়েছে কিনা বা কীভাবে চক্রটি চলত তা জানার চেষ্টা হবে ধৃতদের জেরা করে।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাঁকুড়া মোড় সংলগ্ন একটি হিমঘরের ভিতরে গুদামঘর ভাড়া নিয়ে এই বেআইনি কারবার চলত। সূত্রের খবর প্রায় দুই বছর ধরে এই কারবার চালাচ্ছিল রবীন্দ্রনাথ। বর্ধমানের মিরছোবায় লোহালক্করেরও দোকান রয়েছে তার। বুধবার সকালে ওই জাল সিমেন্ট কারখানায় হানা দিয়ে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় দুর্নীতিদমন শাখার কর্তাদের। ডিএসপি (ইবি) অতনু বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ সুপারকে তিন পাতার প্রাথমিক রিপোর্ট জমা দিয়েছেন।

ইবি সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন কারখানায় গিয়ে তাঁরা দেখেন জমাট বাঁধা ও মেয়াদ উত্তীর্ণ সিমেন্টের প্যাকেট কাটছেন কয়েকজন শ্রমিক। তার পর জমাট বাঁধা সিমেন্ট থেকে গুঁড়ো সিমেন্ট আলাদা করা হচ্ছে। তার সঙ্গে গঙ্গামাটি ও কিছু রাসায়নিকও মেশানো হচ্ছে। জমাট সিমেন্টের কিছু অংশকেও যন্ত্র দিয়ে গুঁড়ো করা হচ্ছে। তার পর তা মেশানো হচ্ছে। তার পর তা নামী সংস্থার বস্তায় ভরে সিল করে দেওয়া হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে ইবি জানতে পেরেছে, বিভিন্ন ডিলার বা সংস্থা থেকে এইসব মেয়াদ উত্তীর্ণ বা জমাট বাঁধা সিমেন্ট সংগ্রহ করত রবীন্দ্রনাথ। তার পর বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় ভেজাল সিমেন্ট বানিয়ে বাজারজাত করা হয়। রবীন্দ্রনাথ বিভিন্ন সিমেন্ট ডিলারকে এবং বিভিন্ন কাজের ঠিকাদারদের তা সরবরাহ করত বলে মনে করা হচ্ছে। নামী সংস্থার দামেই এই নকল সিমেন্ট বিক্রি করা হত। ডিলাররা অবশ্য বস্তাপিছু ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় পেত। তার পর তারা তা নামী সংস্থার আসল দামে এই নকল সিমেন্ট ক্রেতাদের বিক্রি করত। প্রাথমিকভাবে অবশ্য ইবি-র অনুমান, রবীন্দ্রনাথ ডিলারদের কাছে জাল সিমেন্ট সরবরাহ করত। তবে অন্য কোথাও তা বিক্রি করা হত কি না তা-ও খতিয়ে দেখছে ইবি।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে