Advertisement
Advertisement

অভিনবত্বে-চমকে ঠাসা মুখ্যমন্ত্রীর ‘পুজো শেষে ঠাকুর দেখা’

একই সঙ্গে বাংলার পুজোর এমন শোভা দেখে ফিরতে ফিরতে অনেকেই বলে ফেললেন, ওগো মা তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফেরে৷

Durga Puja Carnival in Red road
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:October 14, 2016 8:05 pm
  • Updated:October 14, 2016 8:14 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কখনও বেজে উঠল ধামসা মাদল৷ কখনও বা মঙ্গলশঙ্খ৷ কখনও বাতাসে হালকা শীতের শিরশিরানিতে মিশল সাঁওতালি নাচের হিল্লোল, কখনও বা ব্রতচারীর ছান্দিক অভিব্যক্তি ছুঁয়ে ফেলল রেড রোডের মাটি৷ কখনও আবার পাঁচালির সুরে মাতল শরতের সন্ধে৷ আর তারিয়ে তারিয়ে তা উপভোগ করল রাজ্যবাসী৷ কেউ ভিড় জমিয়েছিলেন অভিনব এই কার্নিভাল দেখতে৷ কারও চোখ ছিল টেলিভিশনের পর্দায়৷ কেউবা আবার চোখ রেখেছিলেন ইন্টারনেটের লাইভ স্ট্রিমিংয়ে৷ কেননা এমন অভিজ্ঞতা এর আগে আর কখনও পায়নি বাঙালি৷ সৌজন্যে অবশ্যই মুখ্যমন্ত্রীর পুজো শেষের ঠাকুর দেখার ভাবনা৷

red-road-1_web

Advertisement

প্রথমবার রাজ্যে আয়োজন করা হয়েছিল এই অভিনব কার্নিভালের৷ সারা বাংলার বাছাই ৩৯টি ঠাকুরের প্রদর্শন হল রেড রোডে৷ বিসর্জনের আগে এ যেন নতুন করে ঠাকুর দেখা৷ ভাবনা মুখ্যমন্ত্রীরই৷ পুজো শেষ হয়েও শেষ না হওয়ার রেশটি যেন জিইয়ে রইল তাঁর এই ভাবনায়৷ আর তাই এদিন রেড রোডে একে একে তৈরি হয়েছিল ৩৯টি ট্যাবলো৷

Advertisement

red-road-8_web

দুর্গাপুজো যে মুক্তমঞ্চের বৃহত্তম শিল্প প্রদর্শন তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই৷ থিমপুজোর প্রচলন হওয়ার পর থেকে সেই শিল্পের মান ও মাত্রা আরও বেড়েছে৷ শুধু প্রতিমাতেই তা আর আটকে নেই৷ মণ্ডপসজ্জা থেকে বিভিন্ন রাজ্য ও দেশের শিল্পচর্চা উঠে এসেছে পুজোয়৷  বিভিন্ন বেসরকারি স্তরে সেই শিল্পকে স্বীকৃতি জানানোর রেওয়াজও চালু হয়েছে বিগত দশকে৷ সরকারি স্তরেও দেওয়া হয় পুরস্কার৷ কিন্তু বাংলার পুজোকে এদিন মুখ্যমন্ত্রী যে স্বীকৃতি দিলেন তা প্রায় অভূতপূর্ব৷ নিজে বসে থেকে দেখলেন বাংলার সেরা পুজো, শিল্পের প্রদর্শন৷

red-road-7_web

তাঁর আগের মুখ্যমন্ত্রীরা রাজনৈতিক আদর্শগত কারণেই পুজো থেকে নিজেদের দূরে রাখতেন৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য প্রথম থেকেই পুজোয় সামিল৷ সানন্দেই তিনি পুজো উদ্বোধনে যান৷ একাধিক পুজো মণ্ডপ ঘুরতে দেখা যায় তাঁকে৷ বরাবরই তিনি হাসিমুখে পুজো ঘুরতে ভালবাসেন৷ তবে দ্বিতীয় দফার প্রথম বছরেই পুজোকে তিনি অন্য একটি মাত্রা দিলেন৷ পুজোর বিসর্জনের দিনক্ষণ নিয়ে যখন নানা গণ্ডগোল, তখন বিসর্জনের আগের মুহূর্তটিকে স্মরণীয় করে রাখার পরিকল্পনা নিলেন৷ আর তাই গোটা বাংলা প্রায় ঘরে বসেই দেখল বাংলার সেরা পুজো৷

red-road-6_web

এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন তাঁর মন্ত্রীসভার  সদস্যরাও৷ ছিলেন দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, হৈমন্তী শুক্লা, পূর্ণদাস বাউল প্রমুখ বিশিষ্টরাও৷ আর তাঁদের সামনে দিয়েই গেল একের পর এক ট্যাবলো৷ কখনও পাঁচালি, কখনও ছৌ নাচ, কখনও ব্রতচারীর ছন্দে মুগ্ধ হলেন সকলেই৷  কোলাহল গোষ্ঠী থেকে একডালিয়া এভারগ্রিন, শিবপুর মন্দিরতলার পুজো থেকে বেহালা নূতন দল- শহর ও শহরতলীর পুজো যেন মিশল এক স্পিরিটে৷

কার্নিভালের শেষে মুখ্যমন্ত্রী জানালেন, “এই কার্নিভাল আগামী বছরে আরও বড় হবে৷ সারা বিশ্বে এগিয়ে বাংলার পথে এ এক নতুন শপথ৷” এ বছর যে ৩৯ টি পুজো অংশ নিয়েছিল, তারা একক কৃতিত্বে যে শিল্প প্রদর্শন করেছে সে কারণে ধন্যবাদ জানালেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সেই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দিলেন আগামী বছর পুজোর সংখ্যা বেড়ে হবে ৭৫টি৷ শুধু বিশ্ব বাংলার পুরস্কার পাওয়া পুজোই নয়, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বিচারে সেরা পুজোগুলিও জায়গা পাবে এই কার্নিভালে৷ সেই সঙ্গে ইকো পার্কের মতো কোনও জায়গা তৈরি করে শিল্পগুলির পাকাপাকি প্রদর্শনের বন্দোবস্ত করা হবে বলেও ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর৷ পরের বছর তাই মহালয়ার পর থেকে পুজো শুরুর পাশাপাশি কার্নিভালেরও প্রস্তুতি শুরু৷ আরও বড় আকারে যে এই প্রদর্শনী হবে সে ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী৷

red-road-2_web

এই অভিনব শোভাযাত্রা ঘোষণার পর থেকেই দিকে দিকে নানা সমালোচনার ঘটা দেখা গিয়েছে৷ কিন্তু একই সঙ্গে বাংলার পুজোর এমন শোভা দেখে ফিরতে ফিরতে অনেকেই বলে ফেললেন, ওগো মা তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফেরে৷ আর ধন্যবাদ দিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে৷ তাঁর ভাবনাই তো শেষ হওয়ার আগে পুজোপাগল বাঙালির উৎসবের সলতেটিকে আরও একটু উসকে দিল৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ