BREAKING NEWS

২২ জ্যৈষ্ঠ  ১৪৩০  মঙ্গলবার ৬ জুন ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

আমনের ভরা মরশুমে জলসংকট মেটাতে আশীর্বাদ তিতলি! আশায় বর্ধমানের কৃষকরা

Published by: Kumaresh Halder |    Posted: October 10, 2018 9:38 pm|    Updated: October 10, 2018 9:38 pm

During the month of Aman, the severe water crisis in Burdwan

প্রতীকী ছবি৷

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: আছড়ে পড়তে চলেছে ঘুর্ণিঝড় তিতলি৷ ওড়িশার উত্তর-পশ্চিমাংশে গোপালপুর এবং উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশের কলিঙ্গপত্তনমে তিতলি বিধ্বংসী আকার নিলেও তার প্রভাব থেকে মুক্তি পাবে না বাংলা৷ গোটা রাজ্যজুড়ে তিতলির প্রভাবে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আগেই জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর৷ পুজোর মুখে নিম্নচাপের বৃষ্টি পুজো-পাগল জনতার কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেললেও বর্ধমানের আমন চাষিদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিতে পারে তিতলি৷ পরিস্থিতি এমন, আমন চাষিরা এখন চাতকের মতো প্রতীক্ষা করছেন তিতলির জন্য৷ তিতলির বৃষ্টিই একমাত্র বাঁচাতে পারে মাঠের ধান৷ কৃষি তথা জেলা প্রশাসনের কর্তারাও চাইছেন, আগামী কয়েকদিন ভারী বর্ষণ হোক জেলায়। না হলে আমনের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে৷

[শারীরিক সুখের সন্ধানে পরকীয়া! স্ত্রীকে খুন করে আত্মঘাতী যুবক]

বৃষ্টির ঘাটতি প্রায় ৩৫০ মিলিমিটার৷ আমনের মরশুমে সেচের জলের আকাল দেখা দিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলায়৷ ঘাটতি মেটাতে পাম্প ভাড়া করার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় পাম্পের কেটে দেওয়া বিদ্যুৎ পুনরায় সংযোগ বৃহস্পতিবার থেকেই জুড়ে দেওয়ার কাজ শুরু করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে৷ পরিস্থিতি যা, তাতে আমন চাষিরা এখন চাতকের মতো প্রতীক্ষা করছেন তিতলির জন্য।

পূর্ব বর্ধমান ধান উৎপাদনে রাজ্যের শীর্ষে রয়েছে৷ আমনের এই ভরা মরশুমে সেচের জলের সঙ্কট দেখা দেওয়া নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসনও। পরিস্থিতি মোকাবিলায় বুধবার জেলা শাসকের দপ্তরে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকও করেন প্রশাসনিক কর্তারা। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে নামতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু জানান, ২০১৫ সালেও একই ধরণের পরিস্থিতি হয়েছিল। সেবারও যুদ্ধকালীন তৎপরতায় পরিস্থিত সামাল দেওয়া হয়েছিল। এবারও একইভাবে কাজ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, সেচখালে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত জল মিলবে। অন্যান্যবার ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দেওয়া হলেও এবার জলাধারে জল কম থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না। দেবুবাবু বলেন, “আমরা তেনুঘাট থেকে জল কিনে সেচে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরাও জল দিতে পারবে না জলাধার কম জল থাকায়।”

[হনুমানের দোসর ‘পাগলা’ কুকুর, পুজোর মুখে আতঙ্ক সিউড়িতে]

ফলে, বিকল্প হিসেবে খালবিল-পুকুর-জলাশয় থেকে ধানের জমিতে সেচের জলের ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসন পাম্পসেট ভাড়া নিয়ে তা সেচের কাজে ব্যবহার করবে। বিনা ভাড়ায় চাষিদের পাম্প সেট দেওয়া হবে। অবিলম্বে এই কাজে নামার জন্য কৃষি-সেচ ও ক্ষুদ্র সেচ দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিল না মেটানোয় যেসব জলসেচ প্রকল্পের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল, তাও অবিলম্বে জুড়ে দিতে বলা হয়েছে। সহ সভাপতি জানান, বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে পরে ভাবা হবে, আপাতত কৃষদের সেচের জলের ব্যবস্থা করতে হবে।

কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় এই সময় পর্যন্ত গড়ে ১২৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের প্রয়োজন। কিন্তু এবার সেখানে বৃষ্টিপাত হয়েছে মাত্র ৮৮২ মিলিমিটার। অর্থাৎ প্রায় সাড়ে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে জেলায়। জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, জলের ঘাটতি রয়েছে। তবে এখনও ফসলের ক্ষতি হয়নি। সেচ দপ্তরের তরফে এদিনের বৈঠকে জানিয়ে দেওয়া হয়, মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জল দেওয়ার চুক্তি থাকলেও ১২ অক্টোবর পর্যন্ত তারা তা দিতে পারবে। বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় জলাধারেও পর্যাপ্ত জল নেই৷ কিন্তু সেই জলও জেলার সর্বত্র পৌঁছবে না।

[কিশোরের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ভয়াবহ ডাকাতি, লুট ৬ লক্ষ টাকার সামগ্রী]

কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রাম, ভাতার, মঙ্গলকোট, মন্তেশ্বর-সহ বিভিন্ন ব্লকেই সেচের জলের সংকট রয়েছে। ধানজমির মাটি ফেটে গিয়েছে জল না থাকায়। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “বিকল্প উপায়ে সেচের জলের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে, বৃষ্টির প্রয়োজন। না হলে কৃষদের কম জলে বিকল্প চাষের ব্যবস্থা করতে কৃষি দপ্তর মিনিকিট ধান দেওয়ারও পরিকল্পনা করে রেখেছে।”

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে