Advertisement
Advertisement

Breaking News

জলে ভাসছে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জায়গা, বিপর্যস্ত জনজীবন

পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে উদয়নারায়ণপুরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী

dvc-squabble-over-release-of-water-from-dams
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 27, 2017 8:27 am
  • Updated:July 27, 2017 8:27 am

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়াল দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন। রেকর্ড পরিমাণ জল ছাড়া হল পাঞ্চেত জলাধার থেকে। প্রায় আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছেড়েছে ডিভিসি। বৃহস্পতিবার সকাল আটটা নাগাদ দুর্গাপুর জলাধার থেকে ২৪৯৪৫০ কিউসেক জল ছাড়া হয়৷ গতকাল রাতে নটা নাগাদ দু’লক্ষ ২৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়ে ডিভিসি৷ ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ার ফলে বৃষ্টি কমলেও ফের প্লাবিত হাওড়া ও হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকা। জল ঢুকতে শুরু করে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ও হুগলির খানাকুলে। মন্তেশ্বরী ও দ্বারকেশ্বর নদী বইছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে। খানাকুলে বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ায়, বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা। জলমগ্ন মানুষকে উদ্ধার করার পাশাপাশি রাজ্য প্রশাসনের তরফে প্রচুর ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে উদয়নারায়ণপুরে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী।

[আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই বাড়ছে খোকা ইলিশের রমরমা]

Advertisement

এদিকে দামোদর ছাপিয়ে জল ঢুকছে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ও আমতার বেশকিছু এলাকায়। বিঘের পর বিঘের জমির ফসল নষ্ট হয়েছে ইতিমধ্যেই। ডিভিসি জল ছাড়ায় উদয়নারায়ণপুরের ঘোলা, হরিহরপুর, শিবানিপুর, আমতা ১ ও ২ নম্বর ব্লক প্লাবিত হয়ে পড়েছে। ডিভিসির তরফে এদিন সকালে প্রায় ২ লক্ষ ৫০ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। এই জলে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে মনসুকা ও শিবানীপুর বাঁধ ভেঙে গিয়েছে। শুধু নদী বাঁধ নয়, রামপুর, কালা দামোদর ও হুড়হুড়া খাল দিয়ে জল ঢুকেও প্লাবিত হয়েছে হাওড়া। জেলার ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রায় ৯০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে। জারি করা হয়েছে লাল সতর্কতা।

Advertisement

[জিভে জল আনা ইলিশের পদ সাজিয়ে হাজির ‘ওহ! ক্যালকাটা’]

বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে হুগলির আরামবাগ মহকুমায়। আরামবাগ শহর কিছুটা স্বাভাবিক হলেও পুরশুরা ও খানাকুলে ডিভিসির ছাড়া জলএলাকা প্লাবিত করেছে। বহু দুর্গতদের এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

অবস্থা শোচনীয় বাঁকুড়ার। অন্যদিকে ডিভিসির ছাড়া জলে জলমগ্ন পাত্রসায়র, সোনামুখী, বড়জোড়ার বিস্তীর্ণ এলাকা। পাত্রসায়রের চাষের জমি জলের তলায়। সোনামুখীর উপরচক, লালবাজার চর প্লাবিত। বড়জোড়ার পখন্না, গুটগড়িয়া পঞ্চায়েত এলাকায় জল ঢুকেছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত এই জেলায় মোট ১২টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।

[বৃষ্টি থেকে খানিকটা রেহাই কলকাতার, পশ্চিমের ৫ জেলায় আরও বর্ষণ]

এদিকে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে নতুন করে আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়ায় নিম্ন দামোদর উপত্যকা এলাকা প্লাবিত হতে পারে। বর্ধমানের রায়না ও মাধবডিহি থানার বিস্তীর্ণ এলাকা জলমগ্ন হয়েছে। জামালপুরের একাংশও ভেসে গিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় রায়নায় খোলা হয়েছে কয়েকটি ত্রাণ শিবির। কাটোয়ায় অজয় ও ভাগীরথী জল বিপদসীমা ছুঁয়েছে। কাটেয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে শাঁখাই ফেরিঘাট। তবে বৃহস্পতিবার নতুন করে বৃষ্টি না হওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছেন মানুষ।

অন্যদিকে, বুধবার রাত ন’টা নাগাদ শিলাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ঘাটালের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। ঘাটাল শহর থেকে তিন কিলোমিটার দূরে প্রতাপপুরে বাঁধ ভাঙে। ফলে দাদপুরের দুটি ব্লকের তিনটি গ্রামপঞ্চায়েত জলের তলায় চলে গিয়েছে। ঘাটাল ব্লক ও পুরসভা এলাকা জলমগ্ন। ঘাটাল শহর সহ ৮১টি মৌজা প্লাবিত হয়েছে। জল ঢুকেছে ঘাটাল হাসপাতালেও। বেশকিছু রোগীকে ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সরানো হয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে হাসপাতালে যান সিএমওএইচ।। ঘাটালের সঙ্গে জেলার বাকি অংশের যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন।

এছাড়া, দাসপুর ২ নম্বর ব্লকের ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রাম জলমগ্ন। গতকাল থেকেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে। বেশ কয়েকটি পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়েছে। উদ্ধারকাজে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।

নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, অতিবর্ষণ আর বিভিন্ন ব্যারেজের ছাড়া জলে বুধবার পর্যন্ত প্লাবিত হয়েছে ১০৬টি ব্লক। বাড়ানো হচ্ছে ত্রাণ শিবিরের সংখ্যা।

[জানেন শিশুদের ইনহেলার ব্যবহার ভাল না খারাপ?]

তবে সকাল থেকে ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় বীরভূমের বিভিন্ন নদীতে জলস্তর বিপদসীমার নিচ দিয়ে বইছে। ঝাড়খণ্ডের ম্যাসাঞ্জোর জলাধারে জলধারণ ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণে থাকায় জল ছাড়ার সম্ভাবনা কার্যত নেই। ফলে তিলপাড়া ব্যারেজ থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়ে আনা হয়েছে। আজ সকাল থেকে ৪৮৪ কিউসেক হারে জল ছাড়া হচ্ছে। তবে লাভপুরের লাঘাটা সেতুর কাছে লাভপুর-কাটোয়া রাজ্য সড়কের ওপর কুয়ে নদীর জল বয়ে যাওয়ায় এখনও বন্ধ যান চলাচল। এদিকে, খয়রাশোলে জলবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে।

গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জল বেড়েছে ডুয়ার্সের সব নদীতেও। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক জলের তলায়। শিলিগুড়ির সাথে ডুয়ার্সের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ