রঞ্জন মহাপাত্র, এগরা: পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা থানা এলাকায় গজিয়ে উঠেছে শতাধিক ভুঁইফোড় কৃষি সমবায় সমিতি৷ আর তাদের খপ্পরে পড়ে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ৷
এগরা এলাকায় বর্তমানে প্রায় ৪২টি এমন সংস্থা রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর৷ আবার এই মানুষদের সহযোগিতার নামে এলাকায় ঢুকে পড়েছে কিডনি পাচারচক্রের পাণ্ডারা৷ অভিযোগ, মোটা টাকার প্রলোভন দেখিয়ে ঋণগ্রস্ত কৃষকদের টোপ ফেলা হচ্ছে৷ আর অসহায় কৃষকরাও এই ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন৷ সম্প্রতি, একটি ঘটনা নিয়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়, যখন এগরার বর্ত্তনা গ্ৰামের বাসিন্দা পেশায় পান চাষি নিমাই মাইতির কিডনি বিক্রির খবর প্রকাশ্যে এসেছে।
[নামী কোম্পানির মোড়কে বিষ ঢুকছে কেক-বিস্কুটে, দুর্নীতিদমন শাখার অভিযানে পর্দাফাঁস]
বিষয়টি জানাজানি হতেই ভুঁইফোড় সংস্থা-সহ কিডনি পাচারচক্রের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এই কৃষকেরই স্ত্রী সন্ধ্যা মাইতি৷ তিনি এগরা থানায় ৪২ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। যার মধ্যে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এগরা থানার ওসি কৃষ্ণেন্দু প্রধান জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্তে নেমে বেআইনিভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধভাবে লেনদেন করার অপরাধে এখন পর্যন্ত দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
[সংগঠন বাড়াতে নবীনেই আস্থা, গুরুত্বপূর্ণ পদে ছাত্রনেতা কিশোরকে আনল বিজেপি]
সূত্রের খবর, পেশায় পান চাষি নিমাই মাইতি এগরায় গজিয়ে ওঠা একাধিক কৃষি উন্নয়ন সমিতি ও কৃষক কল্যাণ সমিতিগুলির কাছ থেকে বরোজ তৈরি-সহ পান চাষের জন্য দফায় দফায় প্রায় ২ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন। যা এখন সুদে আসলে ৩ লক্ষ ছাড়িয়েছে বলে দাবি৷ সেই টাকা মেটানোর জন্য উপর্যুপরি চাপ আসতে থাকায় যখন দিশেহারা নিমাই, ঠিক সেই সময়ই এলাকায় আবির্ভাব ঘটেছে কিডনি পাচারচক্রের। অনেক দামেই কিডনি বেচে নিজের ধার শোধও করেছেন নিমাইবাবু। এই ফাঁদে অনেক কৃষকই এখন পা বাড়িয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। রেজিস্ট্রেশন বিহীন এই সমিতিগুলি গরিব মানুষের টাকা আত্মসাৎ করছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান সিদ্ধেশ্বরী বেরা৷ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে পুলিশকে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন এগরা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমিয় রাজ৷