দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: একের পর এক ভেঙে পড়েছে বিদ্যুতের খুঁটি। আমফানের দাপটে বহু এলাকায় সাবস্টেশনেরও ব্যাপকভাবে ক্ষতি হয়েছে। তার ফলে ভেঙে সুন্দরবনের একাধিক দ্বীপের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। পুরো পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আগামী এক মাস লাগতে পারে এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তার ফলে সুন্দরবনের দ্বীপে থাকা কয়েক লক্ষ মানুষ যে বিপদে পড়বেন তা বলাই যায়।
সুন্দরবনের বিদ্যুৎ পৌঁছানোর জন্য একের পর এক নদী পার করানো হয়েছে রেল পোস্ট দ্বারা। প্রতিটি নদীর এপারে ওপারে রেল পোস্ট পুঁতে তবেই লাইন নিয়ে যাওয়া হয়েছে এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে। এই ঝড়ের কারণে বহু ইলেকট্রিক রেল পোস্ট ভেঙে পড়েছে নতুবা দুমড়ে গেছে। ট্রান্সফর্মারগুলিও বিকল হয়ে পড়েছে। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন লাইনগুলিরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তার ফলে সাবস্টেশনগুলিতেও বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত। দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুভাষ গ্রাম সাবস্টেশন থেকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন লাইন পৌঁছেছে বাসন্তীর সোনাখালিতে।
[আরও পড়ুন: আমফানের দাপটে নষ্ট বিঘা বিঘা জমির বোরো ধান, ব্যাপক ক্ষতি সবজি চাষেও]
সেখান থেকেই একের পর এক নদী পেরিয়ে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে গোসাবা, পাখিরালা, ঝড়খালি, কুমিরমারি, পুইজালি ও আমতলির মতো দ্বীপে। ইতিমধ্যেই বানতলা, কালিকাপুর, সুভাষ গ্রাম ও সোনাখালির সাবস্টেশনগুলিতে সমস্যা দেখা দিয়েছে। গাছ পড়ে বহু তার ছিন্নভিন্ন। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ দপ্তরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার সুকুমার সাহানি বলেন, “একের পর এক গ্রাম পুরো শ্মশান হয়ে গিয়েছে। কোথাও কোন বিদ্যুতের খুঁটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। নভেম্বর মাসে হওয়া বুলবুলের ক্ষতি এখনও পুরোটা কাটিয়ে ওঠা যায়নি। তার মধ্যে নতুন করে বেহাল বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। পুরো ব্যবস্থা স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে।”
লকডাউনের ফলে দক্ষ কর্মীরও অভাব। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন প্রায় সকলেই। বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা জরুরি ভিত্তিতে বিভিন্ন এলাকায় কাজ করছেন। তবে যে পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে পরিষেবা নিমেষে স্বাভাবিক করা সম্ভব নয়।