Advertisement
Advertisement
Kalna

বৃষ্টির মধ্যে তারে মেলা কাপড় তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট কিশোরী, বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু বাবারও

শোকের ছায়া মন্তেশ্বরে।

Father And Daughter died in Kalna

শোকার্ত পরিবার। নিজস্ব চিত্র

Published by: Paramita Paul
  • Posted:June 17, 2025 8:43 pm
  • Updated:June 17, 2025 8:43 pm  

অভিষেক চৌধুরী, কালনা: বৃষ্টির সময় জামাকাপড় তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট কিশোরী। তাকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল বাবারও। এই ঘটনায় শোকের ছায়া নামে মন্তেশ্বরে।

Advertisement

মঙ্গলবার মন্তেশ্বরে মৃত্যু হয়েছে ১২ বছরের বর্ষা নন্দী এবং ৪৫ বছরের অরুণ নন্দীর। বাড়ি মন্তেশ্বরের গদ্ধারপাড়ায়। বাবা পেশায় দর্জির কাজ করতেন। মেয়ে স্থানীয় স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করত। পরিবারের লোকেরা জানান, এদিন সকাল দশটা নাগাদ বৃষ্টি চলাকালীন বাড়ির সামনে থাকা তারে কাপড় তুলতে গিয়ে মেয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তা দেখেই মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন বাবাও। তড়িঘড়ি তাদের উদ্ধার করে মন্তেশ্বর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাদের মৃত বলে জানায়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মন্তেশ্বরের গদ্ধারপাড়ার বাসিন্দা অরুণ নন্দী। তিনি হাওড়ায় থাকেন। দর্জির কাজ করতেন। দিন আনা, দিন খাওয়া পরিবার হলেও এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে তার সুখের সংসার ছিল। বর্ষার আগে মাটির বাড়ির চালে অ্যাসবেসটসের ছাউনি দেওয়ার জন্য রবিবার তিনি মন্তেশ্বরের বাড়িতে আসেন। মঙ্গলবার কাজ হওয়ার কথা ছিল। বৃষ্টির কারণে তা আর হয়নি। অন্যদিকে তাদের বাড়ির সামনেই জামা-কাপড় শুকোতে দেওয়ার একটি তার রয়েছে। যা বাড়ির বাইরে থাকা একটি বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বাঁধা ছিল। মঙ্গলবার সকাল থেকেই একনাগাড়ে বৃষ্টি হওয়ায় কোনওভাবে সেই তারটি বিদ্যুৎবাহী হয়ে যায় বলে দাবি স্থানীয়দের। এমনসময় কাপড় তুলতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে ছোট মেয়ে বর্ষা। তা দেখেই মেয়েকে বাঁচাতে যান বাবা। কিন্তু সেইসময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে গুরুতর জখম হন। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে শুকনো বাঁশ দিয়ে বাবা ও মেয়েকে বিদ্যুৎবাহী তার থেকে তাদের মুক্ত করে মন্তেশ্বর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক দুজনকেই মৃত বলে জানায়।

স্বামী ও মেয়েকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে পড়েন স্ত্রী উজ্বলা নন্দী। উজ্বলাদেবী বলেন, “বাড়ির সামনে থাকা ওই তারে আমি কাপড় মেলি। তারটা বিদ্যুতের পোলে বাঁধা ছিল। মেয়ে বাইরে বেরোতেই পড়ে যায়। তা দেখে ওর বাবা ছুটে যায়। মেয়েকে ধরতেই ওর বাবাকেও আর ছাড়েনি।” শ্রীমন্ত দাস নামের এক আত্মীয় জানান, “বিদ্যুতের তার ও জিআই তার কেটে একসঙ্গে পড়ে থাকায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুর্ঘটনাটি ঘটে।” এমনই এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনার পর প্রতিবেশীরাও নির্বাক হয়ে পড়েন। এলাকায় নামে শোকের ছায়া। এদিন কালনা হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহ দুটির ময়নাতদন্ত করা হয়। এই দুর্ঘটনার পর পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement