নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ঘরের তুলসী বসানো ঘটেই লুকিয়ে অপদেবতা! সেই অপদেবতাকে রুখতে ভাঙতে হবে তুলসী মন্দির৷ তবেই গ্রামে ফিরবে শান্তি৷ এমনই নির্দেশ ছিল ওঝার৷ চূড়ান্ত কুসংস্কারের শিকার হয়ে গ্রামবাসীদের সামনে বাবার হাতের দশটা আঙুল কাটল ছেলে৷ বৃহস্পতিবার সিউড়ি আদালতে দাঁড়িয়ে এমনই স্বীকারোক্তি অভিযুক্ত ছেলে হরিশচন্দ্র সর্দার৷ বুধবার নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বাবার আঙুল কাটার অভিযোগে হরিশচন্দ্র-সহ পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ৷ ধৃতদের বৃহস্পতিবার সিউড়ি আদালতে তোলা হলে বিচারক প্রকাশ চন্দ্র বর্মণ চার জনকে সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন৷ বাকিদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে পাঠানো হয়েছে৷
[বিএসএফ আধিকারিক সেজে প্রতারণা! ১৯ হাজার টাকা খোয়ালেন বৃদ্ধ]
বুধবার কুসংস্কারের জেরে এক আদিবাসী বৃদ্ধের উপরে নারকীয় অত্যাচার চালানোর অভিযোগ। অভিযোগ উঠল গ্রামের মাতব্বরদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সালিশি সভায় গ্রামের মোড়লের নিদান মেনে ওই বৃদ্ধের দু’হাতের দশ আঙুল কেটে নেওয়া হল। নিদান মাথা পেতে বাবার আঙুলে দায়ের কোপ দিল ছেলে। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের পাঁড়ুইয়ের কসবা এলাকার রাধাকেষ্টপুর গ্রামে।
[মডেলিং-এর টোপ দিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার অভিযুক্ত]
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ঘটনার জেরে গোটা পরিবারটি আতঙ্কের সঙ্গে গ্রামে বাস করছে। পরিবারের সদস্যরা কেউ বাড়ির বাইরে বেরতে সাহস পাচ্ছেন না। যুবকের দু’হাতের দশ আঙুল কেটে নেওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। খবর পয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে পুলিশ। জেলাশাসকের নির্দেশে স্থানীয় বিডিও ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণে গিয়েছেন। তাঁকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। গ্রামের পরিস্থিতি থমথমে থাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গোটা গ্রাম টহল দিচ্ছে পুলিশ। এদিকে নিদান দিয়েই উধাও হয়েছে অভিযুক্ত মোড়ল। সেই সঙ্গে নৃশংস কাজে যুক্ত থাকা প্রত্যেক অভিযুক্তই পলাতক। একটি স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।