সৌরভ মাজি, বর্ধমান: প্রাক্তন বা বর্তমান কোনও কর্মীর মৃত্যুতে স্কুল ছুটি দেওয়ার রেওয়াজ আছে। সরকারি নিয়মেই বিশেষ পরিস্থিতিতে বছরে ২ দিন স্কুলে ছুটি দিতে পারেন প্রধানশিক্ষক। কিন্তু, শুধু ছুটি ঘোষণাই করাই নয়, স্কুল চত্বরেই শ্রাদ্ধানুষ্ঠান হল প্রয়াত কর্মীর। এই ঘটনায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে পূর্ব বর্ধমানের নানদঘাটে। স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ রেখে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করার বিরুদ্ধে সরব অভিভাবকদের একাংশ। কারণ, সরকারি নির্দেশিকা অনুসারে পঠনপাঠন ও বার্ষিক অনুষ্ঠান ছাড়া আর কোনও কাজে স্কুল ভবন ব্যবহার করা যায় না। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সাফাই, প্রয়াত ওই ঠিকাকর্মী স্কুল অন্ত প্রাণ ছিলেন। পরিবারের অনুরোধে স্কুলে শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করার অনুমতি দিয়েছেন।
[সরস্বতী পুজোর বিসর্জন ঘিরে উত্তাল কেতুগ্রাম, বাড়ি ভাঙচুর-আগুন]
নানদঘাটের জালুইডাঙা জিএন বালিকা বিদ্যালয়ের অস্থায়ী ঠিকাকর্মী ছিলেন জীবন ঘোষ। স্কুলে কালোদা নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। স্কুলের সূত্রে খবর, মাসে মাত্র ২ হাজার টাকা বেতনে অস্থায়ী ঠিকাকর্মী হিসেবে কাজ করতেন জীবনবাবু। দিন কয়েক আগে প্রয়াত হন তিনি। অভিভাবকদের অভিযোগ, জীবনবাবুর মৃত্যুতে একদিন ছুটি ঘোষণা করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওইদিন স্কুলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানও হয়। আর তাতেই দানা বেঁধেছে বিতর্ক। অভিভাবকরা বলছেন, এভাবে পঠনপাঠন বন্ধ রেখে স্কুলের শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করা একেবারেই ঠিক নয়। সরকারি নিয়মে অন্য কোনও অনুষ্ঠানের জন্য স্কুলকে ব্যবহার করা যায় না। বস্তুত, স্কুলের কারও শ্রাদ্ধানুষ্ঠান করা যে আইনসঙ্গত নয়, তা মেনে নিয়েছেন জালুইডাঙা জিএন বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা যুথিকা দেবনাথ। তবে প্রধান শিক্ষিকার সাফাই, স্কুল অন্ত প্রাণ ছিলেন জীবন ঘোষ। তাঁর পরিবারের আর্থিক অবস্থাও ভাল নয়। তাই মানবিকতার খাতিরে পরিবারের অনুরোধ ফেলতে পারেননি তিনি।
[বৃদ্ধের সৎকারে একজোট হিন্দু-মুসলিম, নদিয়ায় সম্প্রীতির ছবি]
প্রসঙ্গত, কয়েক মাস আগেই একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল শিক্ষা দপ্তর। সেই নির্দেশিকায় স্পষ্ট বলা হয়েছে, পঠনপাঠন ও বার্ষিক অনুষ্ঠান ছাড়া আর কোনও অনুষ্ঠানের জন্য স্কুল ভবন ব্যবহার করা বা ভাড়া দেওয়া যাবে না।
[সেবার টানে বেলুড় থেকে সিউড়ি, টিফিন খরচ বাঁচিয়ে দুঃস্থদের পাশে পড়ুয়ারা]