দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: ফের কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের মুখে পড়ে প্রাণ হারাল এক মৎস্যজীবী। সোমবার সন্ধেয় ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের ঝড়খালির জঙ্গলে। বাবা ও দাদার চোখের সামনে থেকে ওই যুবককে তুলে নিয়ে যায় বাঘ। যুবকের মৃত্যুতে শোকের ছায়া পরিবারে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর ঝড়খালি তিন নম্বরের বাসিন্দা বরুণ বালা। দীর্ঘদিন ধরেই একটি ডিঙ্গি নৌকোয় দাদা ও বাবার সঙ্গে নিয়ে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে যেত ওই যুবক। সেখানেই ঘটল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। মৃতের বাবার কথায়, “অন্যান্যদিনের মতোই এদিন জঙ্গলে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলাম। আমি নৌকোর কাছে ছিলাম, ছোট ছেলে ও বড় ছেলে দুজনেই দু’পারে জাল ফেলেছিল। হঠাৎ একটা শব্দ শুনতে পাই। পিছন ফিরতেই দেখি ছোট ছেলেকে মুখে করে নিয়ে যাচ্ছে বাঘ। বাঘের মুখ থেকে ছেলেকে পেতে দাঁ হাতে নিয়ে ঝাঁপ দিই জলে। বাঘের সঙ্গে লড়াই করে আমরা বরুণকে ছাড়িয়া নিয়ে আসি। কিন্তু ততক্ষনে ওর ঘাড়ে-পিঠে একাধিক জায়গায় দাঁত বসিয়ে দিয়েছে বাঘ। নদীর নোনাজল লাল হয়ে যাচ্ছে রক্তে। রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে ছেলেকে নৌকোয় তুলে গামছা দিয়ে বেঁধে দিই গলার কাছে। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হল না।
ছেলের মৃত্যুতে কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার। বনদপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। ওই মৎস্যজীবীদের কাছে আদৌ জঙ্গলে প্রবেশের বৈধ অনুমতিপত্র ছিল কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের জঙ্গলে মাছ-কাঁকড়া ধরেই জীবিকা নির্বাহ করতেন বরুণের বাবা। অন্যের নৌকোয় সঙ্গীদের নিয়ে যেতেন তিনি। ছেলেদেরও নামিয়েছিলেন সেই পেশাতে। বাবা অন্যের নৌকোয় মাছ ধরে সংসার নির্বাহ করছিলেন তা দেখে বাড়িতেই একটি ডিঙ্গি নৌকো তৈরি করেছিলেন বরুণ। ধার দেনা করে কিনেছিলেন জাল দড়ি। তাই নিয়ে নিয়মিত মাছ ও কাঁকড়া ধরতে যেতেন তাঁরা। তবে ভাবতেও পারেননি যে সেখানেই অপেক্ষা করে রয়েছে এমন বিপদ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.