Advertisement
Advertisement

Breaking News

সাবধান! জাল পাতছে পুরনো নোট জোগাড়ের চক্র!

বাড়ি বাড়ি ঘুরে পুরনো নোট জোগাড় করছে কী ভাবে দুষ্কৃতীচক্র?

Frauds Are Trying To Collect Cancelled Notes In Villages Of West Bengal
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 15, 2016 10:53 am
  • Updated:November 15, 2016 10:53 am

ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: এ বোধহয় আরেক বিরিঞ্চিবাবা৷ সাধু সেজে মানুষের সমস্যা সমাধানের অছিলায় ঘরে ঢুকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পুরনো ফর্মুলা৷ তার সঙ্গে যোগ হয়েছে পুরনো নোট বাতিল নিয়ে মানুষের টেনশন৷ তার ফাঁকেই ঘোলা জলে মাছ ধরে টাকা হাতিয়ে পালানোর ধান্দা করেছিলেন এই বাবাজি৷ শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে এসে পুলিশের জালে নতুন বিরিঞ্চি৷
ভারতে নোট বাতিলের খবর পেয়েই যেন পরশুরামের বইয়ের পাতা থেকে উঠে সটান আগমন ভক্তদের ‘কল্যাণ সাধনে’৷ এই বাংলাদেশি বিরিঞ্চিবাবার কাছে আছে সব বিপদের সমাধান৷ টাকা দিলেই হাতেগরম বিপন্মুক্তি৷ তবে এক-আধ টাকা নয়, নিদেন পক্ষে পাঁচ হাজার৷ আর ভক্তদের কল্যাণ করতে বাতিল হওয়া পাঁচশো-হাজারের নোট নিতেও আপত্তি নেই তাঁর৷
নোট বাতিলের খবরে যে সব গুজব তৈরি হয়েছে তারই সুযোগ নিতে সরাসরি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া থেকে উত্তর ২৪ পরগনায় চলে এসেছে এই ভন্ড বাবাজি৷ গল্পের বিরিঞ্চি পালিয়ে পার পেলেও, শেষ রক্ষা হয়নি এই বাংলাদেশির৷ রবিবার এই জোচ্চোরকে গ্রেফতার করেছে দেগঙ্গা থানার পুলিশ৷ জানা গিয়েছে, এই প্রতারকের নাম, মির মহম্মদ মিলটন (৩০), বাড়ি বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর অঞ্চলে৷ গত দশ নভেম্বর বৈধ পাসপোর্ট ভিসা নিয়ে ভারতে ঢুকে বারাসতের একটি হোটেলে ওঠে সে৷ এর পর শুরু হয় ‘অপারেশন’৷ গ্রেফতারির পর পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে মিলটন জানায়, আট নভেম্বর নোট বাতিল হওয়ার খবর দেখে টাকা হাতানোর ছক কষে সে৷ অনেকের ঘরেই বাতিল হওয়া নোট মজুত থাকবে৷ অকেজো ভেবে লোকে সহজেই তাকে দিয়ে দেবে৷ এই আশাতেই ‘বিরিঞ্চিবাবার’ কায়দায় ফন্দি আঁটে সে৷ কী ছক কষেছিল সে?

fraud_web
মির মহম্মদ মিলটন

পরশুরামের বিরিঞ্চবাবা গল্পে বিগত সময়ে ফিরে গিয়ে কম দামে লোহা কিনে বড়লোক হতে চেয়েছিলেন এক গৃহস্থ৷ মোটা টাকার বিনিময়ে ‘টাইমমেশিনে’ চড়িয়ে ভক্তদের সেই সুযোগ করে দিয়েছিলেন বাবাজি৷ একেবারে সেই কায়দায় গ্রামের ঘরে ঘরে গিয়ে বিপদের সঙ্কেত দিয়ে টাকা নিয়ে উদ্ধারের পথ বাতলায় এই বাংলাদেশি যুবক৷ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত দশ নভেম্বর থেকে দেগঙ্গার বিভিন্ন এলাকায় রেইকি চালায় এই যুবক৷ ওই এলাকায় অধিকাংশ গ্রামবাসী ব্যবসায়ী৷ ফলে ঘরে নগদ টাকাও ছিল৷ পরিকল্পনা মতো শ্বেতপুরে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে গিয়ে  নিজেকে ভবিষ্যৎদ্রষ্টা হিসাবে পরিচয় দেয়৷ একা গৃহবধূকে আসন্ন বিপদের ভয় দেখিয়ে জাল বিছায় ওই ভণ্ড৷ পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে বিপদ কাটানোর আশ্বাসও দেয়৷ বিপদের ভয়ে পাঁচশো হাজার মিলিয়ে মোট পাঁচ হাজার টাকা প্রতারকের হাতে তুলে দেন ওই গৃহবধূ৷ পুলিশ সূত্রে খবর, এই ভাবেই দেগঙ্গা এলাকার বিভিন্ন গ্রামে মহিলাদের বিপদের ভয় দেখিয়ে বাতিল নোট হাতিয়েছে ওই প্রতারক৷ অবশেষে শ্বেতপুর গ্রামের ওই গৃহবধূর স্বামী বিষয়টি জানতে পারেন৷ এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখে মির মহম্মদ মিলটনকে রবিবার পাকড়াও করেন তিনি৷ তারপর পুলিশে হস্তান্তর৷
মোট কত টাকা হাতিয়েছে এই ‘বিরিঞ্চি’? কেউ জানে না৷ পুলিশও না৷ আরও প্রশ্ন, কোন বাড়িতে কত টাকা, এই তথ্য কে দিল? প্রশ্নের উত্তর জানতে ধৃতকে সোমবার বারাসত আদালতে পেশ করে চার দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ৷ তবে শুধু এই বাংলাদেশি বিরিঞ্চি নয়, নোট বাতিল হওয়ার পর প্রতারণার জাল পেতে বসে আছে অনেক অসাধু ব্যক্তি৷ তাই সতর্ক থাকুন৷ বারবার বলছে পুলিশ৷ না হলে, কষ্টার্জিত অর্থে  কখন যে সিঁদ কাটবে ‘বিরিঞ্চিবাবা’-রা, তা টের পাবেন না৷

Advertisement

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ