Advertisement
Advertisement

‘বেলপাতা’ থেকে ‘ফাঁসির দড়ি’, জুয়ার ফাঁসে সর্বস্বান্ত গেরস্ত থেকে গৃহিণী

‘ভুড়ভুড়ি’নামের ফাঁদে লোক ঠকানোর কারবার।

Gambling racket siphoning people in Bankura
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 6, 2018 4:24 am
  • Updated:January 6, 2018 5:14 am

টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ৩ হল বেলপাতা, ৮ হল ডুগডুগি। ৯ আবার ফাঁসির দড়ি। ১ থেকে ৯ পর্যন্ত সংখ্যায় এমনই সাংকেতিক নাম ব্যবহার করা হয়। পকেটে ১১ টাকা থাকলেই হল। এইরকম যেকোনও একটি সাংকেতিক নাম বলে ফেলুন। কপাল ভাল থাকলে মিলতে পারে ১০০ টাকা। না, এটা কোনও খেলা বা লটারি নয়। স্রেফ জুয়া। আর এই জুয়া, যার পোষাকি নাম ‘ভুড়ভুড়ি’, তাতে মজেছে বাঁকুড়া শহর। বহু মানুষের পকেট সাফ হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের অবশ্য কোনও হেলদোল নেই।

[ফের মালদহে জাল নোটের হদিশ, ৪.৬২ লক্ষ টাকার নোট বাজেয়াপ্ত]

কীভাবে হয় এই খেলা? তা-ও এক মজা। নাগাল্যান্ড রাজ্য লটারির খেলা রোজ তিনবার হয়। সেই খেলার প্রথম পুরস্কারের শেষ সংখ্যাই হল ভুড়ভুড়ির প্রাইজ জেতার একমাত্র শর্ত। ধরা যাক, নাগাল্যান্ড রাজ্য লটারির তিনবারের প্রথম পুরস্কারের শেষ নম্বর উঠল ২, ৫ ও ৬। অর্থাৎ, যাঁরা এই তিনটি সংখ্যার উপর ভুড়ভুড়িতে টাকা লাগিয়েছেন, তাঁরাই ১০০ টাকা পাবেন। এক ব্যক্তি একাধিক নম্বরে টাকা লাগাতে পারেন। বা এক নম্বরেই একাধিকবার টাকা লাগাতে পারেন। লোভে পড়ে কেউ কেউ কয়েক হাজার টাকাও লাগাচ্ছেন। নিট ফল পকেট শূন্য। শুধু পুরুষরাই নন, এই জুয়ার কারবারে আসক্ত হচ্ছেন গৃহিনীরাও। এই বেআইনি কারবারের টাকা পাওয়ার আশায় কেউ কেউ বাড়ির জিনিসপত্রও বিক্রি করছেন। অন্যদিকে ফুলেফেঁপে উঠছে বেআইনি কারবারিরা।

Advertisement

অভিযোগ, এ সব কিছুই চলছে পুলিশের চোখের সামনে। এই জুয়াকে ঘিরে ক্ষোভে ফুটছেন শহরের বাসিন্দারা। পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর কলেজের অর্থনীতির অধ্যাপক প্রলয় কুণ্ডু বলেন, “গত কয়েক বছর আগে এ শহরে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছিল নানা চিটফান্ডের অফিস। তারা বহু মানুষকে দেউলিয়া করেছে। একবছর থেকে স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেত্রীর ছত্রছায়ায় শহরের পাঠকপাড়ার এক বাসিন্দা নতুন উদ্যোমে এই জুয়ার কারবার চালাচ্ছে।” অভিযোগ, প্রথমে ওই জুয়ার কারবারি সিপিএম নেতার ছত্রছায়ায় থেকে শহরের বুকে দাপট চালাতেন। বর্তমানে ওই ব্যক্তি তৃণমূলের এক নেত্রীর ছত্রছায়ায় জুয়ার কারবার চালাচ্ছেন। অভিযোগ, এই কারবারের সঙ্গে স্থানীয় পুলিশের একাংশ যুক্ত। যদিও এ প্রসঙ্গে জেলার পুলিশ সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “দক্ষিণবঙ্গে এই পদ্ধতির জুয়া সাট্টা নামে পরিচিত। এখানে সেটাই ভুড়ভুড়ি নামে চলছে। আমরা খবর পেলেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করছি।” পুলিশ এমন দাবি করলেও তার সত্যতা কিন্তু জেলায় মেলেনি।

Advertisement

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ