গৌতম ব্রহ্ম ও রিংকি দাস ভট্টাচার্য: জি ডি বিড়লায় দুধের শিশুর সঙ্গে যৌন হেনস্থা। এম পি বিড়লায় অত্যাচার। মহানগরের দুই প্রথম সারির ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে একরত্তি শিশুদের সঙ্গে এমন আচরণের জেরে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ শিক্ষা দপ্তরের। ভাল-খারাপ স্পর্শের ফারাক বোঝাতে এবার প্রাথমিকের পাঠ্যক্রমে বদল আনছে রাজ্য।
ছ’মাস আগে রাজ্যের শিশু সুরক্ষা কমিশন সিলেবাস কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেছিল। সেখানেই প্রাথমিকের পাঠ্যক্রমে ‘গুড টাচ’ ও ‘ব্যাড টাচ’-এর ফারাক শিক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। অবশেষে সেই প্রস্তাবে সিলমোহর দিতে চলেছে রাজ্য শিক্ষা দপ্তর। শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছেন কমিশনের চেয়ারপার্সন অনন্যা চক্রবর্তী। আপাতত ঠিক হয়েছে প্রথম শ্রেণি থেকেই এই বিষয়টি শেখানো হবে পড়ুয়াদের। সেমিনার করে শিশুদের বোঝানো হবে ‘গুড টাচ’ ও ‘ব্যাড টাচ’-এর পার্থক্য। ম্যানিকুইন বা মানবপুতুল এনে হাতেকলমে দেখানো হবে সবটা। ভিডিও বানানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
[খাদিম কর্তা অপহরণ মামলা: ৮ অভিযুক্তই দোষী সাব্যস্ত]
সিলেবাস কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার জানিয়েছেন, “এই বিষয়টি নিয়ে আমরা কমিশনের সঙ্গে আগেই আলোচনা করেছি। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি বিচার করে দ্রুত তা কার্যকর করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।” আগামী ১১ ডিসেম্বর কমিশনের সঙ্গে ফের বৈঠকে বসছে সিলেবাস কমিটি। সেখানে অনন্যাদেবী ও অভীকবাবুও থাকবেন। থাকবেন শিশু অধিকার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের বিশেষজ্ঞরাও। সেখানেই পাঠ্যক্রমের খুঁটিনাটি চূড়ান্ত করা হবে। তারপর সেই খসড়া পাঠ্যক্রম শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কাছে চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।
জি ডি বিড়লা স্কুলের শিশু নির্যাতন-কাণ্ড প্রকাশ্যে আসার পরই সমাজের সর্বস্তরে ভাল ও খারাপ স্পর্শের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। বিশ্বের যে কোনও উন্নত দেশেই নার্সারি থেকে শিশুদের এই বিষয়ে সচেতন করা হয়। ব্যক্তিগতভাবে কয়েকটি এনজিও অবশ্য স্কুলে স্কুলে ঘুরে এই বিষয়ে পড়ুয়াদের সচেতন করার চেষ্টা করে। কিন্তু সার্বিকভাবে কোনও উদ্যোগ সরকারের তরফে এখনও নেওয়া হয়নি এই রাজ্যে। সেই দিক থেকে এই উদ্যোগ শিশু সুরক্ষার ক্ষেত্রে মাইলস্টোন। অনন্যাদেবী জানিয়েছেন, “আমরা ছ’মাস অন্তর শিশু সুরক্ষা নিয়ে বৈঠক করি। কখনও শিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে। কখনও এনজিওদের সঙ্গে। স্কুলে শিশুদের নিরাপত্তা ও মানসিক বিকাশের জন্যও বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে।”