ঘটনাস্থলে তদন্তে পুলিশ। ছবি : জয়ন্ত দাস।
ধীমান রায়, কাটোয়া: প্রেমের টানে ঘর ছেড়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু শেষমেশ মেয়ের টানে ফিরে বাড়ি ফিরে এসেছিলেন প্রেমিকা। স্বামীর সঙ্গে ঘরও করছিলেন তিনি। কিন্তু প্রেমিকার ‘বিশ্বাসঘাতকতা’ মেনে নিতে পারেনি প্রেমিক। তাই শেষপর্যন্ত বাড়ি থেকে ডেকে এনে প্রেমিকাকে কুপিয়ে খুন করল সে। অবশ্য অনুশোচনায় নিজেও আত্মঘাতী হয় প্রেমিকও। মঙ্গলবার সকালের এহেন ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের খেড়ুর গ্রামের ঘোষপাড়া এলাকায়। পুলিশ দেহ দু’টি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে।
ঘোষপাড়ার বাসিন্দা জয়ন্ত সিং(২৫) পাশের ছাতনি গ্রামের পোড়াল পাড়ার বাসিন্দা বিবাহিত পম্পা রায়ের প্রেমে পড়েন। পম্পার স্বামী সৃষ্টিধর রায় পেশেয়া প্রান্তিক চাষি। তাদের দু’টি সন্তান আছে। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রায় তিন বছর ধরে পম্পা ও জয়ন্তের পরকীয়ার সম্পর্কও ছিল। সাত মাস আগে দুজনে পালিয়েও গিয়েছিল। কয়েকদিন পরে পম্পার মেয়ে তার মাকে ফিরিয়ে আনে। তারপর থেকে স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছিলেন তিনি।
তবে তাঁর শাশুড়ি মীরাদেবী জানিয়েছেন, সামনাসামনি না দেখা হলেও ফোনে জয়ন্ত সঙ্গে পম্পার সম্পর্ক ছিল। সোমবার রাতে খাওয়া-দাওয়া করে মেয়েরে সঙ্গেই ঘুমতে গিয়েছিল পম্পা। তারপর মঙ্গলবার সকালে তালকোনা পুকুর থেকে তার দেহ উদ্ধার হয়। দেহ তোলার পরে দেখা যায়, পম্পার হাত পিছমোড়া করে বাঁধা ছিল। মুখ ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। ওদিকে ঘটনাস্থল থেকে আধ কিলোমিটার দূরে জয়ন্ত বাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। একইদিনে দুজনের মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়ায়।
পম্পার শাশুড়ি মীরাদেবীর দাবি, “পম্পাকে মাঝরাতে ফোন করে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল জয়ন্ত। কিন্তু বউমা জানত না তাকে খুন করার উদ্দেশে ডেকেছে। বউমাকে কুপিয়ে খুন করে পুকুরে ফেলে দিয়ে যায় জয়ন্ত। পরে সে আত্মঘাতী হয়।” তিনি আরও জানান, “আমরা আজ ঘুম থেকে উঠে দেখি, সদর দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করা রয়েছে। তখন পড়শিরা এসে জানায় পুকুরে পম্পার দেহ পাওয়া গিয়েছে।” পরে পুলিশ এসে দেহ দুটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠিয়েছে। ঘটনা প্রসঙ্গে জয়ন্ত পরিবারের তরফে কিছু জানানো হয়নি। এদিকে অস্বাভাবিক মৃত্যু মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রেমের টানেই প্রেমিকাকে খুন করে আত্মঘাতী হয় জয়ন্ত নাকি এর পিছনে অন্য কোনও কারণ আছে, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.