Advertisement
Advertisement
বুলবুল

শক্তি বাড়িয়ে ক্রমশই বাংলার দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় বুলবুল, ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

আয়লার পথে বাংলার দিকে ধেয়ে আসছে বুলবুল।

Heavy cyclonic storm Bulbul may hit in Bengal in next 48 hours
Published by: Sayani Sen
  • Posted:November 8, 2019 8:54 am
  • Updated:November 8, 2019 9:04 am

সন্দীপ চক্রবর্তী ও তরুণকান্তি দাস: প্রতি মুহূর্তে গতিপথ বদলালেও ‘বুলবুল’-এ শঙ্কা কাটছে না পশ্চিমবঙ্গের। বরং ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া গভীর এই নিম্নচাপ। ঘূর্ণিঝড় যে প্রবল শক্তিশালী হয়ে তছনছ করে দেবে তা নিয়ে সন্দেহ নেই। বৃহস্পতিবার সন্ধে পেরনোর আগে এর অবস্থান কলকাতা থেকে ৭৫০ কিলোমিটার দূরে। রাত পর্যন্ত গতিপথ অনুযায়ী সুন্দরবনের উপর দিয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ শনিবার বেলার দিকে বাংলাদেশ উপকূলে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আয়লার পথ ধরছে বুলবুল। তবে যেহেতু পথ বদলাচ্ছে, তাই সঠিক সময় বা স্থান বলাও মুশকিল হয়ে পড়ছে আবহাওয়াবিদদের কাছে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আগামী শনি ও রবিবার ভারী বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে। সমুদ্র উত্তাল হবে দিঘা, মন্দারমণি, শঙ্করপুর, বকখালিতে। শুক্রবার থেকেই আকাশ মেঘলা থাকবে।

বঙ্গোপসাগরের তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি বাংলাদেশের খেপুপাড়া থেকে ৭৪০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। রাজ্যের সুন্দরবনের উপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে ঘূর্ণিঝড়টি। ফলে সুন্দরবনে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, “এ রাজ্যে সুন্দরবনের উপর দিয়ে বাংলাদেশের দিকে ঘূর্ণিঝড়টি যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত কোন দিকে ঘূর্ণিঝড়টি যেতে পারে সে দিকে নজর রেখেছি। উপকূলে আছড়ে পড়লে ঘূর্ণিঝড়ের গতি অনেকটাই কমবে।”
উপকূলবর্তী এলাকায় যাঁরা রয়েছেন, বিশেষ করে নদীর পাড়ে বসত যাঁদের তাঁরাই রাজ্য প্রশাসনের কাছে চিন্তার মূল কারণ। কেননা, ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ তার তীব্রতা বাড়াচ্ছে। যার গতিবেগ রবিবার সর্বোচ্চ ১১৫ থেকে ১২০ কিলোমিটার ছুঁতে পারে। আয়লার পথ ধরেই সুন্দরবনের দিকে এগোচ্ছে বুলবুল। যার অবস্থান সাগরদ্বীপের ৬৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পূর্বে। রাতের মধ্যে এগোবে উত্তর পশ্চিমে। পথে বাড়তি শক্তি সঞ্চয় করবে। তার চোখ সেই সুন্দরবনের দিকে। এবং তারপর অবশ্যই বাংলাদেশ। কিন্তু যাত্রাপথে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী অঞ্চলে প্রভাব পড়বে তার। তাই সতর্কতা সেই সব এলাকাতেও।

Advertisement

পরিস্থিতির মোকাবিলায় নবান্ন থেকে মুখ্যসচিব ভিডিও কনফারেন্স করেন জেলাশাসকদের সঙ্গে। প্রশাসনকে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। সরানো হচ্ছে দিঘা, মন্দারমণি, বকখালি, সাগরদ্বীপ, সজনেখালির পর্যটকদের। শনিবার থেকে কেউ আর ওইসব পর্যটনকেন্দ্রে যেতে পারবেন না। নবান্নে তো বটেই, সংশ্লিষ্ট প্রতিটি জেলায় মহকুমা স্তরেও কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে। ফ্লাড রেসকিউ সেন্টারগুলি তৈরি। বিপর্যয় মোকাবিলা, স্বাস্থ্য ও ত্রাণ দপ্তর খোলা থাকবে শনি ও রবিবারও। আগামী তিনদিন মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে যেতে নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি যাঁরা এখন মাছ ধরতে গিয়েছেন তাঁদের ফিরে আসতে বলা হয়েছে। মৎস্য বন্দরগুলিতে মাইকিং করা হয়েছে। তবে সমস্যা হল, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত সবাই ফিরতে পারেননি। তাঁদের ঘিরে উদ্বেগ রয়েছে। তবে প্রশাসনের আশা শুক্রবার সন্ধের মধ্যে সকলেই ফিরে যাবেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় থেকে মৎস্যজীবীদের বাঁচাতে নয়া আবিষ্কার ভারতীয় বিজ্ঞানীদের]

উপকূলবর্তী এলাকায় নৌকার বন্দোবস্ত রেখেছে প্রশাসন। এখনও কোনও বাসিন্দাকে সরানো হয়নি। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এবং বাড়তি খাবার ও ত্রিপল-সহ ত্রাণের বন্দোবস্ত করা হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। আবহাওয়া দপ্তরের খবর, আজ শুক্রবার বিকেলের পর থেকেই বুলবুলের প্রভাব পড়বে রাজ্যে। উত্তাল হবে সমুদ্র। শনি ও রবিবার দিঘা থেকে সুন্দরবন পর্যন্ত উপকূলবর্তী অঞ্চলে ব্যাপক প্রভাব পড়বে। যদি সর্বোচ্চ গতিবেগে পৌঁছয় বুলবুল তাহলে সুন্দরবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। বনাঞ্চলে ও দ্বীপগুলিতে ওয়াচ টাওয়ারকে কাজে লাগিয়ে বিশেষ পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকাঠামো তৈরি রাখা হচ্ছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ