স্টাফ রিপোর্টার: ঝাড়খণ্ড সীমানায় কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়া মাওবাদীদের দমন করতে আরও জোরদার অভিযানে নামছে ঝাড়খণ্ড ও রাজ্য পুলিশ। জঙ্গলমহলের চার জেলা পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর অতীতে মাওবাদী উপদ্রুত ছিল। রাজ্যে পালা বদলের পর এই চার জেলায় আর নতুন করে তারা সংগঠন গোছাতে না পারলেও এই চার জেলার ঝাড়খণ্ড সীমানা এলাকায় তাঁদের কার্যকলাপ চলছেই। দলে লোক টেনে স্কোয়াডের সদস্যসংখ্যা বাড়াতে তাঁদের মগজধোলাই চলছেই। তাই বাংলার এই সীমানা এলাকায় মাওবাদীদেরকে সম্পূর্ণভাবে দমন করতে ঝাড়খণ্ড পুলিশের সঙ্গে আরও জোরদার অভিযানে নামছে রাজ্য পুলিশ।
[ক্ষোভে ফুঁসছে বাসন্তী, চড়াবিদ্যায় গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পুলিশ]
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যাতে নতুন করে নাশকতা ঘটিয়ে জঙ্গলমহলকে অশান্ত না করে তুলতে পারে, সেই জন্যই রাজ্য পুলিশের এই কৌশল। শুক্রবার পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের কুঁচিয়া এবং ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ি ছুড়িমারা ক্যাম্পে চার জেলা পুলিশ ও ঝাড়খণ্ডে মোতায়েন থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করে এই নির্দেশ দেন ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থ। কুঁচিয়ার সিআরপিএফ ক্যাম্পে বৈঠক শেষে ডিজি বলেন, “আমি এখানে সামগ্রিকভাবে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রাজ্য পুলিশ ও ঝাড়খণ্ডে মোতায়েন থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে রিভিউ মিটিং করি। এখানকার পরিস্থিতি এক্কেবারে ঠিকঠাক। যাতে মাওবাদীরা আর কোনওভাবেই ঘুরে দাঁড়াতে না পারে সেই জন্য আমাদের অভিযান চলবে। পাশাপাশি জনসংযোগ কাজকর্মে আরও জোর দেওয়া হবে। মাও দমনে এই পন্থা দেশের কাছে মডেল।”
রাজ্যে পালাবদলের পর যৌথ বাহিনীর লাগাতার অভিযানে একের পর এক মাওবাদী নেতা-নেত্রী আত্মসম্পর্ণ ও গ্রেপ্তার হলেও আকাশ, অতুল, মদন, শচীনের মতো শীর্ষ মাও নেতারা এখনও অধরা। কেন এই নেতাদেরকে এখনও ধরা যাচ্ছে না বা এরা আত্মসম্পর্ণ কেন করছে না সেই বিষয়ে বিস্তারিত ভাঙতে চাননি ডিজি। তিনি বলেন,“রাজ্যে পালা বদলের পর জঙ্গলমহল এখন শান্ত। মাওবাদীরা তাদের সংগঠনের কাজকর্ম করতে পারছে না। মাওবাদীদের আত্মসম্পর্ণের যে প্যাকেজ রয়েছে তা অত্যন্ত আর্কষণীয়। যারা এখনও জঙ্গলে রয়েছে তাদের সমাজের মূল স্রোতে ফেরার আহ্বান জানানো হচ্ছে।”
ক্যাম্প পরিদর্শন করে সেখানেই পুরুলিয়া, বাঁকুড়া জেলা পুলিশ ও ঝাড়খণ্ড ও রাজ্যে মোতায়েন থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক করেন ডিজি। তারপর সেখান থেকে তিনি ঝাড়গ্রামের বেলপাহাড়ির ছুড়িমারায় আকাশপথে রওনা হন। সেখানে সুরজিৎবাবু স্ট্র্যাকো ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এর পর বাঁশপাহাড়ির পুলিশ ফাঁড়িও পরিদর্শন করেন। ঝাড়খণ্ড সীমান এলাকায় থানার সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে সুরজিৎবাবু বলেন, “এটা প্রয়োজন অনুসারে করা হবে।” সীমানা এলাকায় মাওবাদীদের গতিবিধির কোনও খবর নেই বলে জানান তিনি। এদিনের বৈঠকে রাজ্য ও জেলা পুলিশের একাধিক কর্তা হাজির ছিলেন।
[সাত সকালে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল উত্তরবঙ্গ-অসম]