Advertisement
Advertisement

Breaking News

দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ, নিপুণ হাতে মহরমের তাজিয়া ও ঘোড়া বানাচ্ছেন প্রসাদ কাহার

সম্প্রীতির নজির সিউড়িতে।

Hindu man making Muharram's Tajia in Suri

ছবি: বাসুদেব ঘোষ

Published by: Tanumoy Ghosal
  • Posted:September 16, 2018 3:03 pm
  • Updated:September 17, 2018 12:49 pm

নন্দন দত্ত, সিউড়ি: ৪৫ বছর পর দুলদুল ঘোড়ার পিঠে চড়েই এবার মহরমের তাজিয়া বেরোবে বীরভূমের সিউড়িতে। হিন্দু পরিবারের ছেলে প্রসাদ কাহারই রুটিপাড়ার এই তাজিয়া ও ঘোড়া তৈরি করছেন। কারবালার যুদ্ধে এই দুলদুল ঘোড়া ইমাম হোসেনের বিশ্বস্ত ছিল। এই তাজিয়া প্রসাদের হাতে গড়ে না উঠলে যেন তাজিয়া নিয়ে প্রতিযোগিতার যুদ্ধে পিছিয়ে পড়ে রুটিপাড়া।

[ মহরমের আগে কাটোয়ায় মাজার সংস্কারে হাত লাগিয়েছেন হিন্দুরা]

Advertisement

এক চোখ অন্ধ। একচোখে দৃষ্টি ক্ষীণ। তবুও প্রসাদ কাহারের বিশ্বস্ত শিল্পীসত্তার ওপরই ভরসা করেন রুটিপাড়ার মুসলিম পরিবারগুলির। গত ৪৩ বছর ধরে হাতে তুলি আর চাকু নিয়ে থার্মোকলের ওপর নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাচ্ছেন শিল্পী প্রসাদ কাহার। কিন্তু মহরমের তাজিয়া তৈরি তাঁর কাছে যেন নিষ্ঠার আরেক নাম। ভগবত বিশ্বাসী প্রসাদবাবু সাত্ত্বিক মতেই তাজিয়া তৈরি করেন। আর সেটি বিনা পারিশ্রমিকেই। স্ত্রী কাঞ্চন ও ছেলে অর্ঘ্য এখন তাঁর এই শিল্পীসত্তা বাঁচিয়ে রাখতে প্রসাদের সঙ্গে হাত লাগিয়েছেন। বছর পঁয়ষট্টির প্রসাদবাবুর কথায়, “এটাই হয়তো আমার শেষ তাজিয়া হবে। বাঁ চোখে কিছুই দেখতে পাই না। ডান চোখে দিনের আলোতেই আবছা দেখি। ক্ষীণ দৃষ্টির কারণে তুলি আর কাঁচি চালাতে সমস্যা হয়। তবুও নিপুণভাবে তাজিয়া তৈরির চেষ্টা করি।”

Advertisement

গতবছর প্রসাদবাবু তাজিয়া তৈরি করতে পারেননি। এবার সাহস জুগিয়েছে তাঁর পরিবার। পাড়ার মহরম কমিটিও এই শিল্পীকে মনোবল জুগিয়েছে। প্রসাদবাবুর স্ত্রী কাঞ্চন কাহার বলেন, “কে কীভাবে নেয় জানি না, আমরা তাজিয়া করি ভগবানের কাজ ভেবেই। গত দেড় মাস ধরে তাজিয়া তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। সেদিন থেকে বাড়িতে মাছ, পেঁয়াজ ঢোকে না। তাজিয়ায় সন্ধ্যারতি দেখাই রীতি মেনেই।” প্রসাদবাবুর ঘরে গিয়ে দেখা গেল কল্পনায় থার্মোকল, কাগজ, কাপড়, রং দিয়ে একটি ঘোড়া তৈরি করেছেন। রুটিপাড়া তাজিয়া কমিটির সদস্য মীর মুস্তাক বলেন, “ আমাদের ছোটবেলায় দুলদুলি ঘোড়া নিয়ে মহরমের তাজিয়া বেরত। ৪৫ বছর পর আবার বেরবে। তবে শহরের যে দশ বারোটি তাজিয়া বের হয় তার মধ্যে আমাদেরটাই সেরার পুরস্কার পায় প্রসাদদার হাতযশে। যতদিন উনি পারবেন, আমাদের তাজিয়া ওনার হাতেই সেজে উঠবে।”

[স্টেশনের কুয়োর জল যেত ঠাকুরবাড়িতে, মহেশমুণ্ডাকে হেরিটেজ ঘোষণা রেলের]

ছবি: বাসুদেব ঘোষ

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ