Advertisement
Advertisement

গো-মড়কের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে একযোগে আমিষ বর্জন হিন্দু-মুসলিমদের!

পলাশিপাড়ার হাঁসপুকুরিয়ার এই সম্প্রীতির নজির নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে বিস্তর।

Hindu-Muslim unite to save cows
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:December 22, 2018 2:11 pm
  • Updated:December 22, 2018 2:11 pm

পলাশ পাত্র, তেহট্ট: গো-মড়কের হাত থেকে নিষ্কৃতি পেতে একযোগে আমিষ বর্জন! এ নিয়ে মসজিদ থেকে নিদানও দেওয়া হল। গ্রামের কয়েক হাজার হিন্দু-মুসলমানের এই কাণ্ডে জল্পনা তুঙ্গে। পলাশিপাড়ার হাঁসপুকুরিয়ার এই সম্প্রীতির নজির নিয়ে আলোচনাও হচ্ছে বিস্তর।
জানা গিয়েছে, হাঁসপুকুরিয়া গ্রামে প্রায় ১২০০টি পরিবার রয়েছে। হাজার সাতেক মানুষের বাস এই গ্রামটিতে। সমসংখ্যক হিন্দু-মুসলিমের বসবাস। দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের মানুষ একসঙ্গেই বসবাস করছে। ধর্মীয় বিরোধের কথাও শোনা যায়নি। কয়েকদিন আগে হাঁসপুকুরিয়ার পশ্চিমপাড়ায় পায়ে, মুখে ঘা, পোকা নিয়ে বেশ কয়েকটা গরু মারা যায় বলে খবর। মারা যায় বেশ কিছু বাছুরও। এ নিয়ে গ্রামের মোড়ল, পঞ্চায়েত প্রধান, মসজিদ কমিটির সম্পাদক-সহ বাসিন্দারা মিলিত হয়ে গত ১৬ ডিসেম্বর পশ্চিমপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, গত বৃহস্পতিবার গ্রামের কোনও বাড়িতে মাছ, মাংস রান্না হবে না। গ্রামের সমস্ত স্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য প্রচারের বিষয়টিতে জোর দেওয়া হয়। সেই মতো বুধবার হাঁসপুকুরিয়া মসজিদ থেকে প্রচার করা হয়।

[স্বামী থাকেন বিদেশে, গৃহবধূকে ব্ল্যাকমেল করে ধর্ষণের অভিযোগ]

Advertisement

ঘটনা প্রসঙ্গে মসজিদ কমিটির সম্পাদক ইন্দাদুল শেখ বলেন, ‘গ্রামে গরু মারা যাচ্ছে। এ নিয়ে মিটিং হয়। সেখানে সবাই মিলে ঠিক করে গ্রামে বৃহস্পতিবার আমিষ বর্জন করা হবে। বাড়িতে বাড়িতে নিরামিষ খাওয়া হবে। তাই মসজিদ থেকেও এ বিষয়টি ঘোষণা করা হয়।’ ইন্দাদুল আরও বলেন, ‘গরু মারা যাওয়ার পর একইসঙ্গে দেখা যায় গ্রামের মানুষের অনেকের গায়ে ব্যথা হচ্ছে। আমরা জানি, গ্রামে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে নিরামিষ খাওয়ার রেওয়াজ আছে। সেটাই করা হয়েছে।’ স্থানীয় বিধায়ক তাপস সাহা বলেন, ‘নিরামিষ খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল লক্ষণ। গ্রামের হিন্দু মুসলমান এক হয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সম্প্রীতির নজির তৈরি করেছে।’ গত বৃহস্পতিবার তেহট্ট-২ ব্লকের বিডিও শুভ সিংহরায় হাঁসপুকুরিয়া গ্রামে যান জনতার দরবার অনুষ্ঠানে। সেখানে গ্রামবাসীরা এই গরু মারা যাওয়ার বিষয়টি তোলেন। ঘটনা প্রসঙ্গে শুভ সিংহরায় বলেন, ‘গরু মারা যাওয়ার বিষয়টি শোনার পরই আমি প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরে জানিয়েছি। গ্রামবাসীদের নিরামিষ খাওয়ার ব্যাপারটাও শুনেছি। বৃহস্পতিবার গ্রামের কোথাও সমবেত ভাবে খিচুড়ি খাওয়া হয়। কোথাও বা ভাত, ডাল, সবজিও খাওয়ানো হয়।’

Advertisement

[রাজনীতি থেকে অভিনয়, অসামান্য দক্ষতায় মন কাড়ছেন ‘বুল্লা খাঁ’]

পঞ্চায়েত প্রধান অপর্ণা মণ্ডল বলেন, গ্রামে অঘটন কিছু ঘটলে নিরামিষ খাওয়ার চল রয়েছে। তাই গরু মারা যাওয়ার ঘটনা থেকে নিষ্কৃতি পেতে হিন্দু মুসলমান একমত হয় নিরামিষ খাওয়ার ব্যাপারে। ঘটনা প্রসঙ্গে তেহট্ট-২ ব্লকের প্রাণিসম্পদ বিকাশ দপ্তরের আধিকারিক অলোক সাহু বলেন, ‘প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, চর্মরোগের কারণে গরু মারা যাচ্ছে। গরুর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে আসল কারণ জানা যেত। আমরা ওই এলাকায় আগামী মঙ্গলবার ক্যাম্প করব।’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ