দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: সম্পত্তি হাতাতে ভাইকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে দিনের পর দিন গৃহবন্দি করে রাখার অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়, নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে থানায় গিয়ে ভাইয়ের নামে নিখোঁজ ডায়েরিও করলেন এক ব্যক্তি। এদিকে সুযোগ বুঝে পাইপ বেয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে সটান থানা হাজির ভাই! ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি চন্দননগরে। হতবাক দুঁদে পুলিশকর্তারাও।
চন্দননগরের চক্রবর্তীপাড়ায় পৈতৃক দোতলা বাড়ি। সেই বাড়িতে থাকেন দুই ভাই অসিত চক্রবর্তী ও নবকৃষ্ণ চক্রবর্তী। নবকৃষ্ণবাবু বড়। পৈতৃক বাড়িতে দুই ছেলেরই সমান ভাগ। কিন্তু ভাইয়ের সম্পত্তিও দাদা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, অসিতবাবুর উপর নিয়মিত অত্যাচার করতেন নবকৃষ্ণবাবু। এমনকী, ছোটভাইকে ঘরে বন্দি করেও রেখেছিলেন। শনিবার রাতে অসিতবাবুর নামে নিখোঁজের ডায়েরি করতে চন্দননগর থানায় যান তাঁর দাদা। পুলিশ যথারীতি অভিযোগ গ্রহণও করে। কিন্তু, তদন্তের আর প্রয়োজন পড়েনি। যাঁরা নামে নিথোঁজ ডায়েরি হয়েছে, কিছুক্ষণ পর তিনি নিজেই হন্তদন্ত হয়ে থানায় হাজির হন! চন্দননগর থানার পুলিশকর্মীরা জানিয়েছেন, থানায় পৌঁছেও আতঙ্কে কাঁপছিলেন অসিত চক্রবর্তী। দাদা কুকীর্তির কথা পুলিশকে খুলে বলেন তিনি। সঙ্গে কাতর আরজি, ‘আমাকে বাঁচান, নয়তো দাদা মেরে ফেলবে।’ অসিত চক্রবর্তীর অভিযোগ, স্রেফ সম্পত্তি হাতানোর জন্য তাঁকে দীর্ঘদিন বাড়িতে আটকে রেখেছেন দাদা নবকৃষ্ণ চক্রবর্তী। অকথ্য অত্যাচার তো চলতই, পাগল সাজিয়ে রিহ্যাব সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল। এদিকে নবকৃষ্ণবাবুর অত্যাচারেই বাপের বাড়ি চলে গিয়েছেন অসিতবাবুর স্ত্রী। কিন্ত মনের জোর নিজের বাড়িতে থাকছিলেন তিনি। কিন্তু পরিণতি যে এতটা ভয়াবহ হবে, তা কল্পনাও করতে পারেননি। অসিত চক্রবর্তীর এক মেয়ে। তাঁর বিয়ে হয়ে গিয়েছে। শনিবার রাতে ছোটভাই বাড়িতে আটকে রেখেই তাঁর নামেই নিখোঁজ ডায়েরি করতে নবকৃষ্ণবাবু থানায় গিয়েছিলেন বলে অভিযোগ।
ধর্ষণের পর খুন করেছি’, বাবাকে ফোন কিশোরীর বন্ধুর]
পারিবারিক বিবাদ যে এতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা ভেবে বিস্মিত পুলিশকর্মীরাও। দাদার বিরুদ্ধে পারিবারিক হিংসার অভিযোগ দায়ের করেন অসিত চক্রবর্তী। চন্দননগর থানার পুলিশ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত নবকৃষ্ণ চক্রবর্তীকে গ্রেপ্তার করা না হলেও চোখে চোখে রাখা হচ্ছে। অভিযুক্ত নবকৃষ্ণ চক্রবর্তীর কঠোর সাজার দাবি জানিয়েছেন পাড়া প্রতিবেশীরাও। এদিকে ভাই যে তাঁর কবল থেকে বেরিয়ে থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন, তা জেনে গিয়েছেন অভিযুক্ত। যদিও অস্বস্তি এড়াতে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তিনি। গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।