দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এর খবরের জের। এতদিনে সুবিচার পেলেন স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনকারী সরকারি চাকুরে অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, গোঘাট-দুই বিডিও অফিসের ত্রাণ বিভাগে কর্মরত অরুণাভবাবু গত ১৮ বছরের চাকরি জীবনে ১৪ বার বদলি হয়েছেন। এই হয়রানির জন্য তিনি জেলাশাসকের দপ্তরের এক কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনেন। জেলাশাসকের কাছে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদনও জানিয়েছিলেন। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে খবরটি প্রকাশ হওয়ার পরই হুগলির জেলাশাসকের কানে যায়। অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলে বাড়ির কাছাকাছি বদলি নিশ্চিত করেন জেলাশাসক।
সংবাদমাধ্যমের খবর পাওয়ার পর গত মঙ্গলবার অরুণাভবাবুকে ডেকে পাঠান জেলাশাসক। তাঁর বক্তব্য শোনেন। এরপর বুধবার চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে মেডিক্যাল বোর্ডের সামনে অরুণাভবাবুর বয়ান রেকর্ড করা হয়। পরে তাঁকে জেলাশাসকের দপ্তর থেকে জানানো হয় বাড়ির কাছাকাছি চুঁচুড়া মগরা ব্লকে তিনি বদলি হয়েছেন। জেলা প্রশাসনিক কর্তাদের এহেন পদক্ষেপে স্বস্তির শ্বাস ফেলছেন ওই সরকারি কর্মী। নিজেই জানিয়েছেন, ১৮ বছরের চাকরি জীবনে ১৪ বার বদলির ঘটনায় মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছিলেন। বার বার সাংসারিক পরিস্থিতির কথা জানিয়েছেন প্রশাসনের উপর মহলে। তবে তাতেও কোনওরকম সুরাহা হয়নি। তবে এতদিনে ফল মিলল। যাদের জন্য আজ তাঁর এই অবস্থা তাদের শাস্তি হোক, চাইছেন অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায়। যাতে তাঁর মতো আর কাউকেই এই ভোগান্তির মধ্যে দিয়ে যেতে না হয়।
উল্লেখ্য, চুঁচুড়া ওলাইচণ্ডীতলার বাসিন্দা অরুণাভ বন্দ্যোপাধ্যায় গোঘাট-দুই বিডিও অফিসের ত্রাণ বিভাগে কর্মরত। প্রায় ১৮ বছরের কর্মজীবনে, তাঁর বাধা বিপত্তির শেষ নেই। ছুতোনাতায় বার বার বদলি হওয়ার দরুন নিজের সংসারও গুছিয়ে উঠতে পারেননি। সময়মতো বিয়েটাও করা হয়নি। বাড়িতে অসুস্থ বৃদ্ধা মা, বিধবা দিদি ও প্রতিবন্ধী ভাগনেকে নিয়েই তাঁর সংসার। কর্মক্ষেত্রের লাগাতার অশান্তির জেরে এই তিন সদস্যের দেখভালও করে উঠতে পারছিলেন না। বারবার বদলি হওয়াতে বাড়ি ছেড়ে থাকতে হচ্ছিল। বিপাকে পড়ছিলেন বিধবা দিদি। অন্যদিকে এই পরিস্থিতিতে দূরে থেকে মানসিক অশান্তিতে ছিলেন অরুণাভবাবু। সমস্ত ঘটনা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের প্রধানকে জানিয়েও বদলির আশ্বাস মেলেনি। এমনকী, তাঁর থেকে টাকাও দাবি করা হয় বলে অভিযোগ। অন্য কোনও উপায় না দেখে শেষে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানান ওই সরকারি কর্মী। সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল-এ এই খবর দেখে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তার জেরেই সুবিচার পেলেন ওই সরকারি কর্মী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.