Advertisement
Advertisement
বর্ধমান স্টেশন

‘পা অবশ হয়ে গেল’, আতঙ্ক পিছু ছাড়ছে না বর্ধমান স্টেশন বিপর্যয়ে আহত ব্যক্তির

মেয়েকে ট্রেনে তুলতে বর্ধমানে এসেছিলেন হোপনা টুডু।

Hopna Tudu critically injured in Burdwan railway station collapsed
Published by: Sayani Sen
  • Posted:January 5, 2020 12:36 pm
  • Updated:January 5, 2020 2:19 pm

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: জ্বর হয়েছিল। তাই মেয়েকে একা ছাড়েননি ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা হোপনা টুডু। ভোপালে থেকে পড়াশোনা করা মেয়েকে ট্রেনে তুলতে বর্ধমানে এসেছিলেন তিনি। কিন্তু বিধি বাম। মেয়েকে আর ট্রেনে তোলা হল না তাঁর। বাদ সাধল বর্ধমান স্টেশনে বিপর্যয়। তার জেরে সেই সুস্থ বাবাই হয়ে গেলেন অসুস্থ। স্টেশনের ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে পা ভাঙল তাঁর। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শুয়ে এখনও চোখ বুজলেই ভয়ংকর মুহূর্তের কথা মনে পড়ছে হোপনা টুডুর। আতঙ্ক এখনও তাড়া করে বেড়াচ্ছে তাঁর মেয়ে প্রিয়াঙ্কাকেও।

মেয়ে থাকে বাড়ি থেকে অনেক দূরে। পড়াশোনার জন্য বহুদিন ধরে ভোপালে থাকে সে। তাই বর্ধমান স্টেশন থেকে মেয়েকে ট্রেনে তুলে দিতে গিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা হোপনা টুডু। ট্রেন আসতে দেরি করছে। খিদেও পেয়েছে বিস্তর। স্টেশনের মূল প্রবেশপথের পাশে থাকা দোকান থেকে কিনে পাউরুটি খাচ্ছিলেন তিনি। মেয়ে দাঁড়িয়েছিল বেশ কিছুটা দূরে। আচমকাই বিকট শব্দ। কি যে হল তা বুঝতে না বুঝতেই আবারও কানে আসল একইরকম বিকট শব্দ। মুখ ঘুরিয়েছিলেন হোপনা। কিন্তু আচমকাই বুঝতে পারেন পা যেন অবশ হয়ে গেল। নড়াচড়া করার ক্ষমতাও যে আর নেই সেকথা বুঝতে বিশেষ সময় লাগেনি।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বর্ধমান স্টেশন বিপর্যয়ে মৃত্যু এক ব্যক্তির, তদন্ত কমিটি গঠন রেলের]

ততক্ষণে অবশ্য বর্ধমান স্টেশনের ছবিটা এক্কেবারে বদলে গিয়েছে। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়া স্টেশনের সামনে দৌড়োদৌড়ি করতে শুরু করে দেন প্রায় সকলেই। স্টেশনে বিপর্যয়ের কথা বোঝামাত্রই বাবার খোঁজে পাগলপারা অবস্থা মেয়ের। দৌড়ে গিয়ে হোপনা টুডুর মেয়ে প্রিয়াঙ্কা দেখেন তাঁর বাবা হাঁটাচলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। তাঁকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে কোনওক্রমে সরিয়ে আনেন। এরপর রেল আধিকারিক এবং পুলিশের তৎপরতায় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় হোপনা টুডুকে।  প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন বাব। তবে তাঁর মুখে চোখে যেন এখনও আতঙ্কের ছাপ। এত বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়েও যে প্রাণহানি হয়নি, তা যেন ভগবানের আশীর্বাদ বলেই মনে করছেন হোপনা। যেন পুনর্জন্ম হল তাঁর।

Advertisement

Hopna-Tudu

চোখের সামনে বাবার উপর হুড়মুড় করে বর্ধমান স্টেশনের একাংশ ভেঙে পড়ার ঘটনায় এখনও আতঙ্কিত প্রিয়াঙ্কা। বাবার মতোই প্রথমে হুড়মুড়িয়ে কিছু একটা ভেঙে পড়ার আওয়াজ পেয়েছিলেন তরুণী। বুঝতে পারেননি। আচমকাই সকলের ছোটাছুটি দেখে সন্দেহ হয় তাঁর। তখন বুঝতে পারেন এত বড় কাণ্ড ঘটে গিয়েছে। বাবাকে একাই উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যান ওই তরুণী। নিজের পায়ে দাঁড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন বাবা। এই লড়াইয়ে অসুস্থ হোপনার পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। বাবাকে সুস্থ করে বাড়ি না নিয়ে যাওয়া পর্যন্ত যেন শান্তি নেই তাঁর।

ছবি: মুকুলেসুর রহমান

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ