শুভময় মণ্ডল: হাঁটাপথেই নর্মদার মোহনা থেকে উৎস। প্রায় ১৩০০ কিমি। এই বিস্তীর্ণ পথ পেরতে কোমর বাঁধছেন বাঙালি অভিযাত্রী চন্দন বিশ্বাস। এবার নয়া কীর্তি গড়তে চলেছেন হৃদয়পুরের যুবক। সামনের মাস অর্থাৎ জুলাইয়ের প্রথম দিকেই বেরোবেন। হেঁটেই পেরোবেন নর্মদার মোহনা থেকে উৎস। গুজরাটের গাল্ফ অফ খাম্বাট থেকে মধ্যপ্রদেশের অমরকণ্টক। প্রায় ১৩০০ কিলোমিটার। সময় লাগতে পারে দু’মাসেরও বেশি। সব মিলিয়ে চারটি রাজ্য-গুজরাট, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ এবং ছত্তিশগড়।
ভারতবর্ষের ভূগোল এবং ইতিহাসে নর্মদার গুরুত্ব অপরিসীম। নর্মদা নদী দিয়েই উত্তর এবং দক্ষিণ ভারত পৃথক করা হয়। এই নর্মদা-বিন্ধ্যপর্বতের জন্যেই আর্যরা দক্ষিণ ভারত আক্রমণ করতে পারেনি, ফলে দক্ষিণ ভারতের সংস্কৃতি রয়েছে অটুট। এই নর্মদার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বহু ইতিহাস। এবার ইতিহাসের জ্বলজ্যান্ত সাক্ষী এই নদীর অববাহিকা হেঁটে পেরোবেন চন্দন। পেশায় সিনেমাটোগ্রাফার চন্দন বিশ্বাসের আরও এক নেশা হল অ্যাডভেঞ্চারে। আর সেই ভালবাসা থেকেই এর আগে বহু অভিযানে পাড়ি দিয়েছেন। তার মধ্যে অন্যতম হল, ট্রান্স-হিমালয়ান সাইক্লিং। উত্তর-পূর্বের অরুণাচল থেকে সাইকেলে প্যাডেল করে লাদাখ পর্যন্ত পৌঁছন তিনি। এছাড়াও মাউন্ট সিবি ১৩ পর্বতাভিযান, তুলিয়ান লেক ট্রেকিং আরও অনেক রোমাঞ্চকর অভিযান।
এতটা পথ, এতদিন ধরে অভিযান, আদৌ সফল হবেন তো? উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, ‘নর্মদা পরিক্রমা নতুন কিছু নয়। বহু মানুষ করেছেন, তারপর মোটা মোটা বইও লিখেছেন। আমি সেগুলো একটাও পড়িনি, কারও সঙ্গে কনসাল্টও করিনি। আমি এখনও বিস্মিত হতে পছন্দ করি। বড়জোর অসফল হয়ে চলে আসব। তাতে আমার খুব বেশি কিছু যাবে-আসবে বলে মনে হয় না।’ তাঁর মতে, তিনি যাচ্ছেন এক্সপ্লোর করতে, সাফল্যের সংজ্ঞা ব্যাখ্যা খানিকটা বদলে যেতে বাধ্য। উত্তর তট বা দক্ষিণ, যখন যেদিক দিয়ে খুশি হাঁটবেন। ইচ্ছেখুশি! পূণ্যতোয়া নর্মদা পরিক্রমায় চন্দনের সহযোগিতায় রয়েছে সোনারপুর আরোহী, অভিযান পাবলিশার্স। আর চন্দনের ভাষায়, তাঁর পাশে রয়েছে গোটা বারাসত অঞ্চল। এক বাঙালি যুবকের অসাধ্যসাধনের সাক্ষী থাকবে গোটা দেশ।
ছবি সৌজন্যে- চন্দন বিশ্বাস
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.