Advertisement
Advertisement

Breaking News

Awas Yojana

আবাস যোজনায় এবার বড় গড়মিল জলপাইগুড়িতে! তালিকা থেকে বাদ ২০ হাজার নাম

বিরোধীদের অভিযোগ, কুড়ি হাজার নয়, ভাল ভাবে খোঁজ নিলে সংখ্যাটা দ্বিগুণ হবে।

In Jalpaiguri 20,000 names were dropped from the list of PM Housing Scheme | Sangbad Pratidin
Published by: Kishore Ghosh
  • Posted:December 20, 2022 8:36 pm
  • Updated:December 20, 2022 8:36 pm

শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি : আবাসে গড়মিল। আর সেই গড়মিল খুঁজতে বেরিয়ে চোখ কপালে উঠেছিল খোদ জেলাশাসকের। পাকা বাড়ি রয়েছে তার পরেও নাম রয়েছে ঘর প্রাপকের তালিকায়। জেলার সদর, রাজগঞ্জ এবং মাল ব্লক ঘুরে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে একে একে নয়টি নাম কেটে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। তবে শুধু এই তিন ব্লক নয়, সুপার চেকিং-এর পর জেলার নয়টি ব্লকে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে কুড়ি হাজার নাম। জানা গিয়েছে, যাদের পাকা বাড়ি রয়েছে, গাড়ি রয়েছে, তাদেরও নাম যুক্ত করা হয়েছিল তালিকায়। বিরোধীদের অভিযোগ, কুড়ি হাজার নয়, আরও ভাল ভাবে খোঁজ নিলে সংখ্যাটা দ্বিগুণ হবে। কারণ ব্লকে ব্লকে যাঁরা সমীক্ষা করছেন তাঁদের নাম না কাটতে বাধ্য করছেন শাসক দলের নেতা কর্মীরা। সদর ব্লকের পাহাড়পুর অঞ্চলেই নাম বাদ পড়লে হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ জানিয়ে ছিলেন আশা কর্মীরা।

জেলায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (Prime Minister Awas Yojana) ঘর নিয়ে সবচাইতে বেশি গড়মিল ধরা পড়েছে এই সদর ব্লকে। ঘর পাওয়ার অযোগ্য কিন্তু তালিকায় নাম রয়েছে এমন চার হাজার নাম কেটে তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। সদর ব্লকের অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য সঞ্জিত কর্মকারের চার ভাইয়ের নাম ছিল ঘর প্রাপকের তালিকায়। বিরোধীরা সরব হতেই নাম কাটাতে উদ্যোগী হন সঞ্জিতবাবু নিজে। তাঁর দাবি, যে সময় ঘর প্রাপকদের তালিকা তৈরি হয় তখন তিনি পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন না। তাছাড়া ভাইয়েরা আলাদা থাকেন। সকলের আলাদা আলাদা সংসার। কার কীভাবে নাম উঠেছে তাঁর জানা নেই। তার পরেও এই ঘর পাওয়া নিয়ে আপত্তি ওঠায় তিনি নিজেই নাম কাটাতে উদ্যোগী হয়েছেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ৫ মাস পর নিজের গড়ে অনুব্রত, ‘দাদা’র জন্য প্রসাদী ফুল-মিষ্টি নিয়ে জেলেই হাজির অনুগামীরা]

সদর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুচেতা কর জানিয়েছেন, যাঁরা প্রকৃত প্রাপক তাঁরাই ঘর পাবে। তার বাইরে যদি ঘর পাওয়ার যোগ্য নয় এমন কারও নাম উঠে থাকে তাদের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে কে পঞ্চায়েত সদস্য, কে প্রভাবশালী তা বিচার করে দেখা হবে না। পাশাপাশি রাজগঞ্জ, ময়নাগুড়ি, ধূপগুড়ি ব্লকে এখন পর্যন্ত সাত হাজার নাম তালিকা থেকে কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে বলে খবর। রাজগঞ্জ ব্লকের শিকারপুর অঞ্চলের বিজেপি (BJP) নেতা তপন রায়ের অভিযোগ, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পুর্নিমা রায়ের আত্মীয় এবং ঘনিষ্ঠদের নাম রয়েছে ঘর প্রাপকের তালিকায়।

Advertisement

তপনবাবুর এই অভিযোগকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পুর্ণিমা রায় বলেন, “যদি আমার কোনও আত্মীয়ের নাম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় রয়েছে প্রমাণ করে দেখাতে পারে তাহলে আমি সভাপতির পদ থেকে সরে দাড়াব”। রাজগঞ্জ ব্লকে দশ হাজার জনের নাম ছিল প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায়। সেখান থেকে এখনও পর্যন্ত আড়াই হাজার নাম কেটে বাদ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী র অভিযোগ, লোক দেখানো কয়েক জনের নাম কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাকি আরও বহু নাম তালিকায় রয়ে গিয়েছে। যাদের মধ্যে শাসক দলের বহু নেতা ও তাদের ঘনিষ্ঠদের নাম রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

[আরও পড়ুন: ইন্ডিয়ান অয়েলের পাইপ ফেটে হু হু করে বেরচ্ছে ডিজেল! দেদার লুট শুরু স্থানীয়দের]

বিজেপির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি তৃণমূলের। তৃণমূলের (TMC) জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, বিরোধীরা যা ইচ্ছে অভিযোগ করতেই পারে। প্রশাসন কে বলা আছে কে তৃণমূল করে না করে তা না দেখে অযোগ্য হলেই তালিকা থেকে কেটে নাম বাদ দিয়ে দেওয়া হোক। কারণ সরকার চাইছে প্রকৃত গরীব মানুষ ঘর পাক। সরকারের নির্দেশেই সমীক্ষা করছে প্রশাসন।

প্রশাসন সূত্রে খবর, যে নামগুলো তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের আগেই পাকা বাড়ি রয়েছে। তার পরেও ঘরের তালিকায় নাম উঠেছিল। সমীক্ষায় নজরে পড়তেই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, জেলায় এক লক্ষ ছয় হাজার জন উপভোক্তার নাম আবাস যোজনার ঘরের তালিকায় ছিল। সমীক্ষার পর এখনও পর্যন্ত কুড়ি হাজার নাম কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ব্লকের আধিকারিকরা তালিকা যাচাই করে দেখছেন। যদি কোনও ভুয়ো নাম তালিকায় উঠে থাকে তা কেটে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন চাইছে প্রকৃত উপভোক্তা ঘর পাক। তার জন্য একাধিকবার তালিকা যাচাই করে দেখা হচ্ছে বলে জেলা শাসক জানিয়েছেন।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ