ছবি: প্রতীকী
ধীমান রায়, কাটোয়া: সাত মাস আগে বিয়ের কথা হয়েছিল। কিন্তু মাঝে পড়ে যায় দীর্ঘ লকডাউন। করোনার জেরে এখনও বিমান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। স্বাভাবিক হয়নি ভিসা পরিষেবা। তাবলে আর কতদিন অপেক্ষা করা যায়! তাই উপায় ভারচুয়াল বিবাহ। আশ্বিনের বিকেলে এই ভার্চুয়াল বিবাহের সাক্ষী থাকলেন দুই বাংলার মানুষ। পাত্র পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া থানার পাতাইহাট কাজিপাড়ার বাসিন্দা মীর আবু তালেব। পাত্রী বাংলাদেশের ঢাকা শহরের উত্তরা এলাকায় শাহেরান ফতেমা। কায়িকভাবে হাজার যোজন দুরে থাকলেও শুক্রবার প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে ভার্চুয়াল জগতে এক হল চারহাত।দুই বাংলার দুই পরিবারের মধ্যেই এদিন যে আনন্দোৎসব। দু তরফেই ভোজের অনুষ্ঠানে সামিল তাদের আত্মীয় পরিজনরা। পাশাপাশি আবু তালেব ও শাহেরানের বিয়ের অনুষ্ঠানে সামিল ছিলেন কুয়েত নিবাসী শাহেরানের কয়েকজন আত্মীয়। সকলকে মিলে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় সেলিব্রেট করলেন এহেন বিবাহ অনুষ্ঠান।
কাটোয়ার পাতাইহাট কাজিপাড়ার বাসিন্দা মীর আদম আলী ও পশুরা বিবির একমাত্র পুত্র মির আবু তালেব। আদম আলী গ্রামীণ চিকিৎসক, ছেলে আবু তালেব গৃহ শিক্ষকতা করেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে একসময় কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন ২৮ বছরের তরুণ মীর আবু তালেব। তার চিকিৎসার জন্য প্রায়ই ভেলোর যেতে হত। আদম আলী জানান, ২০১৭ সালের শেষের দিকে ছেলের কিডনি পরিবর্তন করতে হয়। ছেলেকে একটি কিডনি দিয়েছিলেন আদম আলী নিজেই। ভেলোরে সেই অস্ত্রপচার হয়েছিল। আবু তালেব এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। আবু তালেব জানান ভেলোরে তার চিকিৎসা চলার সময় শাহরান ফতেমার সঙ্গে তাদের প্রথম পরিচয়। শাহরিন এর বাবা মহম্মদ আয়ুব কুয়েতে চাকরি করেন। এক আত্মিয়ের চিকিৎসার জন্য পরিবারের সঙ্গে ভেলোর গিয়েছিলেন শাহেরিন। আবু তালেব এর সাথে সেখানে প্রথম দেখাতেই ভাললাগা। তারপর দুই পরিবারের মধ্যে দেখাশোনা করে আবু তালেব শাহেরিনের বিয়ে ঠিক হয়। মির আদম আলী বলেন,”আমার ছেলের বিয়ে এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ঠিক হয়েছিল। কিন্তু তখন থেকেই আন্তর্জাতিক স্তরে বিমান চলাচল একপ্রকার বন্ধ। তারপর থেকে লকডাউন। এখনও পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে কেউ জানিনা।তাই এই ভারচুয়াল বিয়ের সিদ্ধান্ত।”
দুই পরিবারের মধ্যে আলোচনা করে এদিন বিয়ের ঠিক হয়। শরিয়ত আইন অনুয়ায়ী দুই পক্ষের কাজিরা মিলে এই বিয়ে দেন। মালাবদল থেকে শুভদৃষ্টি সবই ভারচুয়াল। তবে এই বিয়ের অনুষ্ঠান সেলিব্রেট করতে দুপক্ষের আত্মীয় পরিজন কম ছিলেন না। বাংলাদেশের পাত্রীর ও ভারতের পাত্রের বাড়ি দু’তরফেই ছিল ছোটখাটো ভোজের অনুষ্ঠান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.