দেবাদৃতা মণ্ডল, চুঁচুড়া: বিসর্জনের আলোকসজ্জাতেও চমক দিল চন্দননগর। দুদিনের অষ্টমী ও নবমী কাটিয়ে এদিন জগদ্ধাত্রী বিদায়ের বেলায় করুণ সুর চন্দননগর ও ভদ্রেশ্বরের আকাশে-বাতাসে। এদিন সকালে এলাকার ৭৬টি বারোয়ারি পুজো কমিটির মণ্ডপের বেদি থেকে প্রতিমাকে নামিয়ে আনা হয়। বিকেল পর্যন্ত চলে দেবীবরণ ও সিঁদুরখেলা। এরপরই পুজোকমিটি গুলির মধ্যে প্রতিমা নিরঞ্জনের আয়োজন শুরু হয়ে যায়। দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনকে ঘিরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে চন্দননগরের পুজো কমিটিগুলি। এই শোভাযাত্রার জৌলুসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে চন্দননগরের মানসম্মান। তাই দেবীবরণের পালা সাঙ্গ হলে পূর্ণ উদ্যমে শোভাযাত্রার আয়োজন শুরু হয়ে যায়।
এই শোভাযাত্রার আয়োজনকে ঘিরে প্রত্যেকটি বারোয়ারি পুজোর মধ্যে একটা স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা রয়েছে। অভিনব আলোকসজ্জার মাধ্যমেই নানা চমকের আয়োজন করে বিভিন্ন বারোয়ারি। এবারের বিসর্জনের শোভাযাত্রায় অংশ নিয়েছে ৭৬টি বারোয়ারি পুজোকমিটি। শোভাযাত্রায় অংশ নিতে ২৫৫টি ট্রাকে বাঁশের খাঁচা তৈরি করে আলোকসজ্জার আয়োজন করা হয়েছে। জগদ্ধাত্রী বিদায়ের পালাতে এই অভিনব আলোকসজ্জা দেখে মুগ্ধ দর্শনার্থীরা। পুজো উদ্যোক্তারা এই দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে শোভাযাত্রার ট্রাক সাজান। আলোকসজ্জাতেও থাকে থিমের ছোঁয়া। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। রাতের অন্ধকার চিরে আলোর মালায় ফুটে উঠেছে বিক্রম বেতাল থেকে শুরু করে ভূতের রাজার বর। বিসর্জন দেখতে এসে চন্দননগরের রাজপথে এই রকমারি আলোকসজ্জার সাক্ষী থাকলেন লক্ষাধিক দর্শনার্থী।
[কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোর ঘট বিসর্জনে দেদার চমক, শোভাযাত্রায় জনস্রোত]
এক একটি ট্রাক এগিয়ে যায় সঙ্গে সঙ্গে ধ্বনি ওঠে। ‘এ বছর যেমন তেমন আসছে বছর আবার এসো মা।’ প্রতিমা দর্শনের সঙ্গে রকমারি আলোকসজ্জা যেন উপরি পাওনার মতো। ঠাকুরমার ঝুলিকেই আলোর মালায় বন্দি করেছেন চন্দননগরের আলোকশিল্পীরা। জগদ্ধাত্রী দর্শনের পাশাপাশি নাতিদের বসিয়ে ঠাকুমার গল্প শোনানোর পালা দেখছেন দর্শনার্থীরা। চন্দননগর পালপাড়া জগদ্ধাত্রী পুজোর আলোকসজ্জার থিম মায়াজাল। আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ। কোনটা ছেড়ে কোনটা দেখবেন। রাজপথ ছেড়ে তখন গঙ্গার ঘাটের দিকে এগিয়ে চলে বারোয়ারি পুজোর প্রতিমা। পারিপার্শ্বিকে তখন একটাই ধ্বনি, ‘আবার এসো মা’।
[এইভাবেই ১৯ বছর আগে তেহট্টে শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজো]