চন্দ্রজিৎ মজুমদার, কান্দি: রাজ্যসভা ভোটের আগে শক্তিবৃদ্ধি তৃণমূলের। কংগ্রেস ছেড়ে শাসক দলে যোগ দিলেন কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার। কান্দির এক সভায় জেলা পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর হাত থেকে তিনি ঘাসফুলের পতাকা তুলে নেন। তাঁর দলবদলের কান্দি পুরসভাও এসে গেল তৃণমূলের হাতে।
[রাজ্য কমিটি থেকে বাদ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বয়সের কারণে নেই শ্যামল-দীপক-মদন]
মুর্শিদাবাদ রাজনীতিতে অপূর্ব সরকারকে নিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল। কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরির সঙ্গে তাঁর নানা বিষয়ে বনিবনা হচ্ছিল না। কান্দিতে তাঁকে বাদ দিয়ে কংগ্রেস একাধিক মিটিং করেছে। দলের কোনও কর্মসূচিতে তিনি ডাক পান না বলে অভিযোগ করেছিলেন অপূর্ব। জেলা রাজনীতিতে যিনি ডেভিড নামে পরিচিত। এই নিয়ে লাগাতার বিষোদগার এবং অভিমান প্রকাশ্যেই করেছেন ডেভিড। বুধবার বিধানসভায় সেই ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমীকরণ মিলে গেল। তৃণমূলেই যোগ দিলেন একদা অধীর ঘনিষ্ঠ এই নেতা। এদিন শুভেন্দু অধিকারীর থেকে তৃণমূল পতাকা নিয়ে পুরনো দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন অপূর্ব। শাসক দলে যোগ দিয়ে তিনি জানিয়ে দেন তাঁর সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বর একাংশ কীভাবে অসহযোগিতা করেছিল। অপূর্বকে পেয়ে আত্মবিশ্বাসী শুভেন্দু অধিকারী জানান, “ মুর্শিদাবাদে অধীরের দিন শেষ। ২০১৯ সালে মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস বলে আর কোনও বস্তু থকবে না। গত ১১ ফেব্রুয়ারি আমি সাগরদিঘির সভায় বলেছিলাম মার্চ মাসের আট তারিখ উত্তর দেব । আজ দিলাম। অপূর্বকে নিলাম। এখন জেলাতে তৃণমূলের বিধায়ক হল ৬ জন। বাকিদেরও গাড়িতে চাপিয়ে তাড়াতাড়ি আনব।
[শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি শোধন ঘিরে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষ, ধুন্ধুমার কেওড়াতলায়]
কংগ্রেস বিধায়কের যোগদানের পর শুভেন্দু জানিয়ে দেন আর এক মাসের মধ্যে কান্দি পুরসভায় অপূর্ব সরকারকে পুরপ্রধান করা হবে। কান্দিতে বেশ প্রভাবশালী হিসাবে পরিচিত অপূর্ব সরকার। তিনি একাধারে পুরসভার চালিয়েছেন আবার তিনবারের বিধায়ক। ২০০৬ সালে নির্দল হয়ে হারিয়েছিলেন একদা কান্দির অবিংসবাদী নেতা অতীশ সিনহাকে। তারপর থেকে টানা জিতে আসছেন অপূর্ব। অতীশ সিনহাকে হারানোর প্রসঙ্গ তুলে প্রদেশ সভাপতি অধীর বলেন, অপূর্বর কেরিয়ার তিনিই গড়ে দেন। দলবদল নিয়ে অধীরের মত অপূর্ব দেড় বছর আগেই দল ছেড়েছিলেন। এবার আনুষ্ঠানিকভাবে চলে গেলেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে কান্দির বিধায়ক তৃণমূলে চলে আসায় আসন্ন রাজ্যসভা নির্বাচনে তৃণমূলের শক্তি বাড়ল। চারটি আসনে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। পঞ্চম আসনের জন্যও শাসক দল ঝাঁপিয়েছে। কংগ্রেস বিধায়কের দলবদলে সমীকরণ বদলানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
[‘মাওবাদীরা শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি ভেঙেছে, সরকারকে দোষারোপ কেন?’]