সৌরভ মাঝি, বর্ধমান: পিঙ্ক সিটি জয়পুরের কথা সকলেরই জানা। এবার তেমনই এক শহর পাচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলা। তবে পিঙ্ক সিটি নয়, ব্লু সিটি। অদূর ভবিষ্যতে নীল-শহর হতে চলেছে কাটোয়া। জয়পুরের মতো বাড়ির রঙে নয়, প্রাকৃতিক নীল রঙে সেজে উঠতে চলেছে জেলার অন্যতম প্রাচীন এই পুরসভা এলাকা। সৌজন্যে বনদপ্তর। আগামী জুলাইয়ে অরণ্য সপ্তাহে শুরু হবে এই প্রয়াস। প্রথম পর্বে কাটোয়া শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে বর্ধমান, কালনাকেও রঙিন শহর হিসেবে গড়ে তুলবে বন দপ্তর।
[ বিদেশের সোনা গলিয়ে ‘দেশি’ বার, শহরে ফাঁস বড়সড় পাচার চক্র ]
কীভাবে ব্লু সিটি হবে কাটোয়া?
বর্ধমানের বিভাগীয় বনাধিকারিক দেবাশিস শর্মা জানান, অরণ্য সপ্তাহে এবার কাটোয়া শহরকে বাছা হয়েছে। কাটোয়া শহরে গাছের সংখ্যা বাড়ানোর প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করারও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কাটোয়া শহরের বিভিন্ন অফিস চত্বর, স্কুল ও কলেজ ক্যাম্পাসকে চিহ্নিত করা হয়েছে। অনেকগুলি রাস্তাকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সব জায়গায় অরণ্য সপ্তাহে বিশেষ ধরনের গাছ লাগানো হবে। আর এই গাছগুলিতে যে ফুল ফুটবে তা হবে নীল রঙের। দেবাশিসবাবু জানান, জ্যাকার্যান্ডা (jacaranda) নামে এক ধরনের গাছ রয়েছে। যার ফুলের রঙ হচ্ছে নীল। গাছ বসানোর বছর তিনেক পর থেকেই ফুল ফোটার সম্ভাবনা। জুলাইয়ের মধ্যে এই গাছ কাটোয়া শহরজুড়ে বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। গাছগুলিতে সাধারণত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ফুল আসতে শুরু করে। ফলে যখন গাছগুলিতে ফুল ধরবে তখন পুরো এলাকায় নীল হয়ে উঠবে।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সব রাস্তা চিহ্নিত করা হয়েছে সেখানে ১০০ থেকে ২০০ মিটার পর্যন্ত রাস্তার দু’ধারে জ্যাকার্যান্ডা গাছ বসানো হবে। ফলে সারাবছর সবুজ হয়ে থাকবে রাস্তা সংলগ্ন এলাকা। আর শীতে নীল হয়ে উঠবে ফুলে। ফলে নীল শহর হয়ে উঠবে কাটোয়া। দেবাশিসবাবু জানান, এখন বিভিন্ন শহরে বন সৃজনের পাশাপাশি সেই শহরের সৌন্দর্যায়নেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাই শহরের ভিতরে পলাশ গাছ, বাঁদরলাঠি, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, জ্যাকার্যান্ডার মত গাছ বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কাটোয়ার বেশিরভাগ অংশেই জ্যাকার্যান্ডা বসানো হবে। কিছু জায়গায় বাঁদরলাঠি গাছও বসানো হবে। যার ফুলের রঙ হলুদ। ফলে গাছগুলিতে তিন থেকে চার বছর পর ফুল ফুটতে শুরু করলে রঙিন হয়ে উঠবে এলাকা।
[ বাগনানে খুন তৃণমূল নেতা, অভিযোগের তির বিজেপির দিকে ]
কাটোয়াকে নীল-শহর গড়তে বাছা হল কেন?
বিভাগীয় বনাধিকারিক দেবাশিসবাবু কথায়, “কাটোয়া গঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকা। কোনও নদীর দূষণ কমাতে তার তীরে প্রচুর গাছ থাকা প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যে কাটোয়াকে বাছা হয়েছে। শহরের দূষণ কমার পাশাপাশি এই গাছগুলি গঙ্গার দূষণকেও নিয়ন্ত্রিত করবে। শহরের সৌন্দর্যও বাড়বে।” পরবর্তী ক্ষেত্রে অন্য শহরগুলিতেও একইভাবে রঙিন ফুল পোটাবে বনদপ্তর।