Advertisement
Advertisement

কার্তিকের লড়াই ঘিরে সেজে উঠেছে কাটোয়া

প্রথম বারবনিতারাই সন্তান লাভের আশায় এই পুজো শুরু করেন৷

Katwa red zone worships Kartikeya
Published by: Kumaresh Halder
  • Posted:November 17, 2018 1:41 pm
  • Updated:November 17, 2018 2:19 pm  

ধীমান রায়, কাটোয়া: সন্ধ্যা ঘনালেই নিষিদ্ধপল্লির ঘরগুলিতে জ্বলে ওঠে বাহারি আলো৷ ঝলমলে পেশাকে নিজেকে সাজিয়ে বাবুদের কাছে আরও মোহময়ী করে তোলার আপ্রাণ প্রয়াস চালিয়ে যান বারবনিতারা। বাবুকে খুশি করে মেলে অর্থ৷ কিন্তু, যৌনতা ও বিলাসবহুল জীবনযাপনের পরেও কোথাও যেন খামতি থেকে যেত৷ কখনও কখনও মাতৃত্বের আকাঙ্কায় আকুল হয়ে পড়তেন কাটোয়ার চুনারিপাড়া, হরিসভাপাড়া ও লবনগোলাপাড়ার লাস্যময়ী বারবনিতারা। আর সেই আকুল বেদনা থেকে জন্ম দেওয়া সন্তানলাভের আশঙ্কায় শুরু কার্তিক পুজোর আয়োজন৷ আয়োজনের নিরিখে কাটোয়া শহরের কার্তিক পুজোর রাজ্যজোড়া খ্যাতি রয়েছে। কার্তিক পুজো উপলক্ষে শুরু হয়ে গিয়েছে লড়াই৷ মণ্ডপে মণ্ডপে আয়োজনের লড়াই দেখতে লাখো মানুষের সমাগম হয়। কাটোয়ার কার্তিক পুজো ও কার্তিক লড়াই ঘিরে জড়িয়ে রয়েছে বারবণিতাপল্লির আখ্যান।

[রসগোল্লায় মজে বাংলা, নীরবেই পার মিহিদানা-সীতাভোগের জিআই প্রাপ্তির বর্ষপূর্তি]

Advertisement

স্থানীয় ইতিহাস বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কাটোয়া শহরের ঐতিহ্যবাহী এই কার্তিক পুজোর সূচনা হয়েছিল কাটোয়ার নিষিদ্ধপল্লি থেকেই। স্থানীয় ইতিহাসের উপর লেখা একাধিক বই থেকে জানা যায়, কাটোয়া শহরের প্রাচীন নাম ছিল কন্টকনগর। যা ছিল অতীতের ইন্দ্রাণী পরগনার অন্তর্গত। কাটোয়া শহরের উপর দিয়ে বয়ে চলা ভাগীরথী নদী তখন ছিল বাণিজ্যের এক যোগাযোগকারী গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। দেশ-বিদেশের ব্যবসায়ীরা কাটোয়া বন্দরে বাণিজ্যের জন্য আসতেন। বিশাল বিশাল নৌকায় থাকত পণ্যসামগ্রী৷ দেশ-বিদেশের হরেক মালপত্র কাটোয়ায় আসত৷ কাটোয়ার কাঁসা-পিতলের সামগ্রী যেত দূরান্তে। আর বনিকবাবুদের অনেকেই রাত কাটাতেন কাটোয়ার ভাগীরথীর পাড়ে নিষিদ্ধপল্লিতে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়ার কার্তিক পুজো প্রায় ৫০০ বছরের প্রাচীন। প্রথম বারবনিতারাই সন্তান লাভের আশায় এই পুজো শুরু করেন৷ পুজো ঘিরে থাকত প্রচুর আয়োজন। আর এই পুজো উপলক্ষে অঢেল টাকা খরচ করে যেতেন তাঁদের বাবুরা। শোভাযাত্রায় আলো বাজনার আয়োজন নিয়ে এক বাবুর সঙ্গে অন্যবাবুর প্রতিযোগীতা হত৷ সেই থেকেই কাটোয়ায় সূচনা হয়েছিল কার্তিক লড়াইয়ের। কাটোয়া শহরের সেই বারবনিতাদের পল্লি আর নেই৷ কালের স্রোতে ভাগীরথী দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। কিন্তু হারিয়ে যায়নি কার্তিক পুজোর সেই ঐতিহ্য৷ বর্তমানে কার্তিক পুজোর উৎসব হয়ে উঠেছে কাটোয়ার গর্বের৷ এবার কাটোয়া শহরের ২০টি ওয়ার্ড মিলে প্রায় ৮৫টি পুজো কমিটি বারোয়ারি কার্তিক পুজোর আয়োজন করেছে৷ তিন চারদিন ধরে চলবে উৎসব৷ উৎসবের শেষ দিনে থাকছে শোভাযাত্রা বা কার্তিক লড়াই৷

ছবি: জয়ন্ত দাস

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement