Advertisement
Advertisement

Breaking News

Lok Sabha Election 2024

চা বলয়ে হারানো সংগঠন ফেরাতে মরিয়া বামেরা! ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখিয়ে জয় কি আসবে?

বামেদের নির্বাচনী রণকৌশলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসকদল তৃণমূল এবং বিজেপি।

Left parties looking to regain organization in Tea Tribe before Lok Sabha Election 2024 | Sangbad Pratidin

প্রতীকী ছবি।

Published by: Paramita Paul
  • Posted:February 17, 2024 1:57 pm
  • Updated:February 17, 2024 4:29 pm

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: জয়লাভ নয়। কার্যত ঘুরে দাঁড়ানোর কৌশল নিয়েই সমতলের চা বলয়ে বামেরা নির্বাচনী প্রস্তুতিতে ঝাঁপিয়েছে। হারানো মাটি ফিরে পেতে ইতিমধ্যে বামফ্রন্টগত ভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে বুথ কমিটিগুলো তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিচুতলার কর্মীদের। বামেদের নির্বাচনী রণকৌশলকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসকদল তৃণমূল এবং বিজেপি।

এখন ইতিউতি ছোট চা বাগান গড়ে উঠলেও উত্তরে সমতলের চা বলয় বলতে মূলত আলিপুরদুয়ার জেলা এবং জলপাইগুড়ির মালবাজার মহকুমা ও ধূপগুড়ি ব্লক নিয়ে গঠিত এলাকা পরিচিত। এখানে রয়েছে ১৪৫টি চা বাগান অধ্যুষিত বীরপাড়া-মাদারিহাট, কালচিনি, কুমারগ্রাম, আলিপুরদুয়ার, ফালাকাটা, নাগরাকাটা, মালবাজার, ধূপগুড়ি বিধানসভা এলাকা। জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে রয়েছে ৭৮টি এবং আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রে ৬৭টি চা বাগান। রাজনৈতিক মহলের মতে, ওই চা বাগানগুলোই মূলত দুই লোকসভা আসনের ফলাফল নির্ণায়ক শক্তি। ১৯৭৭ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত যতগুলো লোকসভা নির্বাচন হয়েছে সবগুলোতে চা বলয়ের ভোটে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছে আরএসপি। অন্যদিকে ১৯৮০ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্র দখলে রেখেছে সিপিএম। কার্যত রাজ্যে পালা বদলের পর ওই দুই লোকসভা কেন্দ্রে বাম শক্তির ক্ষয় শুরু হয়। ২০১৪ সালে দুটি আসন বামেদের হাতছাড়া হয়। ওই বছর লোকসভা নির্বাচনে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে আরএসপি পায় ২৩.১৯ শতাংশ ভোট। তৃণমূলের প্রাপ্ত ভোট ছিল ২৪.৬৪ শতাংশ এবং বিজেপি পায় ২২.৮০ শতাংশ ভোট। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাম ভোট ঘরে তুলে জিতে যায় বিজেপি। আরএসপির প্রাপ্ত ভোট কমে দাঁড়ায় মাত্র ০৩.৯১ শতাংশ। বিজেপির ভোট বেড়ে হয় ৫৪.৩৬ শতাংশ এবং তৃণমূল পায় ৩৬.৬৯ শতাংশ। একইভাবে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রে ২০১৪ নির্বাচনে সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট ছিল ৩২.৬৫ শতাংশ। তৃণমূল পেয়েছিল ৩৮ শতাংশ ভোট এবং বিজেপি পায় ১৭.০২ শতাংশ ভোট। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের ভোট কমে দাঁড়ায় ০৫.০৭ শতাংশ। বিজেপির ভোট বেড়ে হয় ৫০.৬৫ শতাংশ এবং তৃণমূল পায় ৩৮.৩৯ শতাংশ ভোট।

Advertisement

[আরও পড়ুন: হাওড়া-শিয়ালদহের প্ল্যাটফর্ম সম্প্রসারণ, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য বাড়াতে নতুন উদ্যোগ রেলের]

রাজনৈতিক মহলের মতে, মূলত বামফ্রন্টের ভোট ব্যাঙ্ক ভেঙে তছনছ করেই যে উত্তরের সমতলের চা বলয়ে বিজেপি হৃষ্টপুষ্ট হয়েছে সেটা ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল থেকে স্পষ্ট। বামেরা জানে হারানো ভোটের পুরোটা ফেরানো অসম্ভব। কারণ, গত পাঁচ বছরে চা বলয়ে তৃণমূলের শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে বিজেপিকে ভেঙে। বামফ্রন্টকে ঘুরে দাঁড়াতে সেই বিজেপিকেই ভাঙতে হবে। আরএসপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক নির্মল দাস অস্বীকার করেননি ওই সমীকরণ। তিনি বলেন, “দলের যে কর্মী-সমর্থকরা চলে গিয়েছিলেন বিজেপির অন্দরে বেড়ে চলা দ্বন্দ্বের জেরে অতিষ্ঠ হয়ে আবার ফিরছেন। ১৩ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনে ব্যাপক অংশগ্রহণ ছিল।” এরপরই তিনি দাবি করেন, “আমরা বামফ্রন্টগত ভাবে লড়াই করে এবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছি। কঠিন লড়াই হবে। ইতিমধ্যে ১ হাজার ৮৩৪’টি বুথ কমিটি গঠনের কাজ শুরু হয়েছে।”

Advertisement

অন্যদিকে জলপাইগুড়ি জেলা সিপিএম সম্পাদক সলিল আচার্য বলেন, “ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের ১ হাজার ৮০০ বুথ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চা বলয়ে জোরদার সাংগঠনিক কাজ চলছে। এবার কঠিন লড়াই হবে।” যদিও বামেদের দাবি গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের আলিপুরদুয়ার জেলার নেতা মৃদুল গোস্বামী বলেন, “গত পাঁচ বছরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে চা বলয়ে ধারাবাহিক আন্দোলন এবং পাশাপাশি রাজ্য সরকার উন্নয়নের কাজ চালিয়েছে। বিজেপি গড় ফাঁকা হয়েছে। বামেরা যে ছবিতে নেই। নির্বাচনের ফলাফল থেকে সেটা স্পষ্ট হবে।”

[আরও পড়ুন: বাড়িতে ঢুকে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াকে কুপিয়ে খুন? হুগলিতে ব্যাপক চাঞ্চল্য]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ