অরূপ বসাক, মালবাজার: নববর্ষের সকালেই খাঁচা বন্দি হল পূর্ণবয়স্ক পুরুষ চিতাবাঘ। মালবাজার মহকুমার রাঙামাটি চা-বাগানের ঘটনা। রবিবার সকালে বাগানের ১৩ নাম্বার সেকশনে চিতাবাঘের গর্জন সুনতে পান শ্রমিকেরা। কাছে গিয়ে দেখা যায় খাঁচায় বন্দি হয়েছে চিতাবাঘ। এরপর চা-বাগান মারফৎ মালবাজার বন দপ্তরকে খবর দেওয়া হয়। সাতসকালে চিতা খাঁচায় পড়েছে, খবর পেয়ে উৎসাহীদের ভিড় জমে যায় এলাকায়।
এমনিতেই চা-বাগানে চিতার আনাগোনা নতুন কিছু নয়। প্রায়ই দেখা যায় কুলি লাইনের বস্তিতে চলে এসেছে চিতা। কিছুদিন ধরে এলাকায় চিতার উপদ্রব বেড়েই চলেছে। এর জেরে একপ্রকার অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। স্থানীয় বাসিন্দা তথা পরিবেশপ্রেমী অমল ঠাকুর বলেন, ‘এই চা-বাগানে চিতার আনাগোনা লেগেই আছে। নিকটবর্তী ভুট্টাবাড়ি জঙ্গল থেকে চিতার দল এখানেই আসছে। এই বাগানই এখন তাদের নয়া আস্তানা। শুধু আসছে তা তো নয়, সঙ্গে আছে আতঙ্কও। কখন কুলি লাইনে বস্তি ভেঙে দেয়। কখনও আক্রমণও করে শ্রমিকদের উপরে।’ শ্রমিক বস্তিতে থাকা গৃহপালিত ছাগল, মুরগীও নিয়ে যেত চিতাটি। একপ্রকার আহারের সামগ্রী সংগ্রহে প্রায়ই হানা দেয় বাগান লাগোয়া বস্তিতে। এনিয়ে গত ছ’মাসে এই বাগান থেকে পাঁচটি চিতাবাঘ খাঁচা বন্দি হল। এখনও আরও চিতাবাঘ রয়েছে।
রাঙামাটি চা-বাগানের শ্রমিক হিরালাল ওঁরাও, সীমা ওঁরাওদের বক্তব্য, ‘চিতার আতঙ্কে বাগানে কাজ করতে ভয় হয়। এর আগে বহু চা শ্রমিক চিতার আক্রমণে আহত হয়েছে। বাড়ির ছাগল, গরু তুলে নিয়ে গিয়েছে চিতাবাঘ। আমরা চাই সব চিতাবাঘ ধরে নিয়ে যাক বন দপ্তর।’ বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ পেয়েই বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। খাঁচায় বন্দি চিতাটিকে উদ্ধার করে গরুমারা জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এদিকে আতঙ্কে দিশেহারা হলেও চিতাবাঘ ধরা পড়ায় খুশি শ্রমিকেরা। মালবাজারের বনকর্মীরা সকাল ন’টাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছে। পরিকল্পনা মাফিক যাবতীয় গোছগাছ সম্পন্ন করে চিতাবাঘকে নিয়েছে অভয়ারণ্যের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে বন দপ্তরের গাড়ি। প্রথমে চিতাকে নিয়ে বন দপ্তরের অফিসে যাওয়া হবে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিতাটিকে গরুমারা জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। এমনটাই জানিয়েছেন মালবাজার বন দপ্তরের রেঞ্জার দুলাল দে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.