ঘিরে রাখা হয়েছে অকুস্থল। নিজস্ব চিত্র
দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: আর জি কর ও কুলতলি-জয়নগর কাণ্ডের পর সেই ছায়া পড়ল এবার বাসন্তীতে? উত্তর চুনাখালি এলাকার নাবালিকার পচাগলা মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই নাবালিকাকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। সেই কথাই জোরালোভাবে দাবি করছেন এলাকার বাসিন্দারা। সোমবার সকালের পর মঙ্গলবারও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর উত্তর চুনাখালি গ্রামে উত্তেজনা রয়েছে। পুলিশ গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল মণ্ডলও ঘটনার তীব্র নিন্দা করে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। অভিযুক্তরা যাতে ছাড় না পান। তদন্তের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ওই নাবালিকাকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। সেই কথাই এলাকায় শোনা যাচ্ছে। পুলিশও সেই বিষয়টিকে খতিয়ে দেখছে। এখনও অবধি ওই ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধৃতরা হলেন বুদ্ধদেব সর্দার, বিনয় সর্দার ও দীপেন কয়াল। ধৃত তিনজনেরই বাড়ি উত্তর চুনাখালি এলাকায়। সূত্রের খবর, ত্রিকোণ প্রেমের জেরেই সম্ভবত ধর্ষণ করে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে। অষ্টম শ্রেণির ওই নাবালিকার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল স্থানীয় যুবক বুদ্ধদেব ও বিনয় সর্দারের। প্রেমের ঘটনায় মিডলম্যানের কাজ করতেন দীপেন কয়াল।
অন্যদিকে বুদ্ধদেব আর বিনয়ের মধ্যে সম্পর্ক ভালো ছিল না। একজনের সঙ্গেই দুজনে প্রেম করছেন, সেটা তাঁরা জানতে পারেন। এদিকে নাবালিকার সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করতে চাইছিলেন দীপেনও। তিন বন্ধুই গোটা বিষয়টি জানতে পেরে তারপরেই কি খুনের পরিকল্পনা করেন? সেই প্রশ্নও উঠে আসছে। সূত্রের খবর, গত ৯ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তিনজন একত্রিত হয়ে মদ্যপান করেন। ডেকে নেওয়া হয়েছিল ওই নাবালিকাকেও। এরপর সকলের অলক্ষ্যে তাঁকে ধানচাষের ওই জমিতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপরেই তিন বন্ধু মিলে গণধর্ষণ করেন। ঘটনা ধামাচাপা দিতে নাবালিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। এরপর চাষের ওই খেতেই মাটি খুঁড়ে পুঁতে দেওয়া হয়।
ওই নাবালিকার পরিবার বিস্তর খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ১২ জানুয়ারি বাসন্তী থানায় নিঁখোঁজ অভিযোগ দায়ের করে। পরিবারের দাবি, নিখোঁজ অভিযোগ দায়ের করার পর পুলিশ কোনও প্রকারে সক্রিয় ভূমিকা গ্রহণ করেনি। মৃতদেহ উদ্ধার করতে গেলে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। সোমবার রাত থেকে ঘটনাস্থলটি ঘিরে রাখা হয়েছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার কথা জানার কাজ শুরু করেছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.