Advertisement
Advertisement

জগন্নাথ মূর্তিতে জুড়ে দেওয়া হয় হাত ও পা, অভিনব স্নানযাত্রা বর্ধমানের কালনায়

জানেন, কেন?

Lord Jagannath gets ‘hand’ in Kalna
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:July 4, 2018 1:33 pm
  • Updated:July 4, 2018 1:33 pm

রিন্টু ব্রহ্ম, কালনা: কথায় বলে, ‘ঠুটো জগন্নাথ’৷ কারণটাও সকলেরই জানা৷ জগন্নাথদেবের মূর্তিতে যে হাত বা পা থাকে না! বছরভর সেই নিয়মের ব্যতিক্রম হয় না পূর্ব বর্ধমানের কালনাতেও৷ কিন্তু স্নানযাত্রার দিন মূর্তির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় হাত এবং পা৷ অভিনব সেই জগন্নাথ মূর্তি নিয়েই স্নানযাত্রার উৎসবে মেতে ওঠেন কালনার মানুষ৷

[রাতভর তুমুল বৃষ্টি ভুটান পাহাড়ে, বন্যা পরিস্থিতি আলিপুরদুয়ারে]

Advertisement

জগন্নাথদেবের প্রধান উৎসব রথযাত্রা৷ তার আগে জৈষ্ঠ্য মাসের পূর্ণিমা তিথিতে স্নানযাত্রায় বের হন জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রা৷ এই উৎসবটিও রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় ধূমধাম করে পালন করেন ভক্তরা৷ প্রতিবছর বর্ধমানের রাজপরিবারের মন্দির থেকে জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে নিয়ে স্নানযাত্রা বের করেন পূর্ব বর্ধমানের কালনার বাসিন্দারাও৷ আচার-অনুষ্ঠানে বিশেষ কোনও ফারাক নেই৷ তবে কালনার স্নানযাত্রার মূল আকর্ষণ জগন্নাথদেবের মূর্তিটি৷ কীরকম? পুরী তো বটেই, ভূ-ভারতের কোথাও জগন্নাথদেবে মূর্তিতে হাত ও পা থাকে না৷ আর তা এতটাই প্রচলিত, যে ক্ষমতাহীন বা নিষ্কর্মাকে ব্যক্তিকে ‘ঠুটো জগন্নাথ’ বলা হয়৷ অথচ উলটো ছবি দেখা যায় কালনায়৷ স্নানযাত্রা উপলক্ষে জগন্নাথদেবের মূর্তির সঙ্গে লাগিয়ে দেওয়া হয় হাত ও পা! তবে তিনদিনের জন্যে৷ বছরের অন্য সময়ে আর পাঁচটা জায়গায় যে রূপে জগন্নাথদেব পূজিত হন, কালনাতেও তেমনই৷

Advertisement

কথিত আছে, বহু বছর আগে স্বপ্নাদেশ পেয়ে জগন্নাথদেবের এই অভিনব মূর্তি নিয়ে স্নানযাত্রার প্রচলন করেছিলেন বর্ধমানের তৎকালীন মহারাজা৷ স্বপ্নে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, জগন্নাথের হাত কই? এরপর রাজার নির্দেশে স্নানযাত্রার আগে জগন্নাথদেবের মূর্তিতে লাগিয়ে দেওয়া হয় হাত ও পা৷ সেই ঘটনার পর ভাগীরথী দিয়ে বহু জল গড়িয়ে দিয়েছে৷ কিন্তু, নিয়মের অন্যথা হয়নি৷ স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রায় ২৫০ বছর ধরে কালনায় এই অভিনব স্নানযাত্রা হচ্ছে৷ কালনার জগন্নাথ মন্দিরের পুরোহিত জানিয়েছেন, হাতটি পিতলের৷ শুধুমাত্র জগন্নাথ ও বলরামের মূর্তিতেই হাত থাকে৷ রথের দিন বিশাল মেলা বসে কালনার শহরের ভাগীরথী নদীর পাড়ে৷

[রাস্তার ধারে বিক্রি হচ্ছে বিশ্ববাংলার লোগো লাগানো ব্যাগ, বর্ধমান শহরে চাঞ্চল্য]

পূর্ব বর্ধমানের কালনায় ভাগীরথী নদীর তীরে চার বিঘা জমিতে জগন্নাথের মন্দির তৈরি করেছিলেন রাজ পরিবারের সদস্যেরা৷ ছিল বেশ কয়েকটি শিব মন্দিরও৷ কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বেহাল দশা মন্দিরগুলি৷ একটি মন্দির তো ভেঙেই গিয়েছে৷ স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছে, মন্দির জন্য এখনও রাজপরিবার থেকে অনুদান আসে৷ কিন্তু, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম৷ তাই ঠিকমতো মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হচ্ছে না৷ রাজপরিবারের তরফে মন্দির দেখভাল করেন কালনারই বাসিন্দা জয়চাঁদ চট্টোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, ‘মন্দিরটি এখনও রাজপরিবারেরই সম্পত্তি৷ কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণে অভাবে ভগ্নদশা৷ সরকারে প্রতিনিধিরা বহুবার এসেছেন৷ কিন্তু মন্দিরটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি৷’ কালনার জগন্নাথ মন্দির সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডু৷

ছবি: মোহন সাহা

[আদ্রা ডিভিশনের অতন্দ্র প্রহরী, ‘বেতন’ বাড়ল উইলিয়াম-টাইটানদের]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ